. কোন সন্ত্রাসীদের নিস্তার ইেন: পুলিশ সুপার
কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার কালারমারছড়া বিশেষ অভিযান চালিয়ে পলাতক আওয়ামীলীগের তারেক বাহিনীর সেকেন্ডে ইন কমান্ড ডাকু বার্মাইয়া ইউনুসসহ তার এক সহযোগিকে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাতে তাকেসহ তার এক সহযোগিকে উপজেলার কালারমারছড়া ইউনিয়নের আধাঁরঘোনা থেকে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করা হয়।
এদিকে পৃথক অভিযানে ওই দিন রাতে বান্দরবানের লামা উপজেলা দুর্গম পাহাড়ি এলাকা থেকে জুলাই অভ্যুথানে নিহত শহীদ তানভীর ছিদ্দিকীর চাচা তোফায়েল আহমেদ হত্যাসহ বিভিন্ন মামলার আসামী আকতারোজ্জামান বাবু বাহিনীর সেকেন্ডে ইন কমান্ড ডাকু আবু ছৈয়দকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় কক্সবাজার পুলিশের একটি অভিযানিক দল। গ্রেপ্তারকৃত আবু ছৈয়দ ডাকাতের তথ্যের ভিত্তিতে তার কাছ থেকে ৩টি অস্ত্র ও কার্তুজ উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, কালারমারছড়া ফকির জুমপাড়া গ্রামের বাসিন্দা বাইতুল্লাহ প্রকাশ বামাইয়া বাইতুল্লাহ (৩২), একই ইউনিয়নের আধাঁর ঘোনা গ্রামের বাসিন্দা মোজাফফর আহমদের পুত্র মোহাম্মদ লিটন, কালারমারছড়া ইউনিয়নের আফজলিয়া পাড়া গ্রামের বাসিন্দা দ্বীপের আলোচিত ডাকাত সর্দ্দার আবু ছৈয়দ ডাকাত (৩৪)।
১৬ সেপ্টেম্বর (মঙ্গলবার) দুপুর ১ টার সময় কক্সবাজার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে পৃথক অভিযানে তাদেরকে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করেছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার পুলিশ সুপার মোঃ সাইফউদ্দীন শাহীন।
জানা যায়, মহেশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ মঞ্জুরুল হকের নেতৃত্বে পুলিশের সঙ্গীয় ফোর্স সহ অভিযান চালিয়ে সন্ত্রাসী বাইতুল্লাহকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। অপরদিকে কক্সবাজার পুলিশ সুপার নিজের মেধাকে কাজে লাগিয়ে নিজস্ব গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ টহল দলের ওপর হামলার আসামি ডাকু আবু ছৈয়দ অভিযানে টিকতে না পেরে লামা আত্মগোপনে গেলে তাকে সেখান গ্রেপ্তার করে।
তবে অন্যন্যা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চেয়ে বর্তমানে কালারমারছড়া সন্ত্রাসীদের পাকড়া করতে পুলিশ অনেকটা এগিয়ে রয়েছে।
জানাগেছে, বিশেষ করে মহেশখালীর কালারমারছড়া দুর্গম পাহাড়ের ফকিরজুম পাড়া ও আঁধার ঘোনার গহীনে গড়ে ওঠা অবৈধ অস্ত্রের কারখানার সন্ধান, অস্ত্রের কারিগর ও অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের দৌরাত্মসহ জুলাই অভ্যুথানে নিহত শহীদ তানভীর ছিদ্দিকীর চাচা যুবদল কর্মী ও মাছ ব্যবসায়ী তোফায়েল আহমদের মত নিরহ যুবকদের গুপ্ত হত্যা রোধ, দ্বীপ অঞ্চলের মানুষের আতঙ্ক দূরীকরণে ও ডাকাতদলের তৎপরতা নির্মূল করার উদ্দেশ্যে র্যাব, নৌবাহিনীর পাশি গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করে। পাশাপাশি কক্সবাজার পুলিশ সুপার সাইফউদ্দীন শাহীনের নেতৃত্বে মহেশখালীতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করেছে।
উপজেলা সদরে তাদের রিজার্ভ ফোর্স হিশেবে রাখা হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা পরিবেশ পূর্বের চেয়ে সমুন্নত হচ্ছেন বলে জানান কালারমারছড়ার অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আবু তাহের চৌধুরী। তিনি জানান বিচক্ষণ চৌকস পুলিশ সুপার অপরাধ ঠেকাতে পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপনসহ পুলিশকে আন্তরিকতার সহিত কালারমারছড়ায় কাজে লাগালে এখানে অচিরেই সন্ত্রাস ও অপরাধ মুক্ত হবে। থানার ওসি ও পুলিশ সুপারের প্রতি সাধারণ মানুষ স্বপ্ন দেখছেন ভিন্নভাবে। কয়েকটা অভিযানে পুলিশ সাধারণ মানুষের আস্থা ও বিশ্বাসের জায়গায় পরিণত হয়েছে বলে জানাগেছে।
পুলিশের হিসাব-নিকাশ:
নিজেদের রক্ষার ব্যাপারে পাহাড়ে আস্তানা গড়ে তুলা পলাতক আওয়ামীলীগের তারেক বাহিনীর সন্ত্রাসীরা যে যতোই আস্থাশীল হোন না কেন প্রশাসনের হিসেব অন্য জায়গায়। সরকারের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো ইতোমধ্যে কালারমারছড়া পাহাড়সহ মহেশখালীর সন্ত্রাসীদের ব্যাপারে রেডম্যাপ সম্পন্ন করেছে বলে গোয়েন্দা সূত্রে জানতে পেরেছে। এর একটা প্রভাব সন্ত্রাসী বাহিনীর ওপর পড়েছে বলে সূত্রে প্রকাশ। ক্ষমতার এক বছরে পা দিয়েছে অন্তবর্তী সরকার। বৃহৎ স্বার্থে সন্ত্রাসী যেই হোক না কেন, তাকে আইনের আওতায় আনার প্রক্রিয়ায় নামছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো। ইতিমধ্যে পুলিশের টানা অভিযানে টিকতে না পেরে সন্ত্রাসীরা আত্মগোপনে চলে যাওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মাঝে স্বস্তি ফিরতে শুরু করেছে। পুলিশের এ অভিযান কোন দিকে মোড় নিচ্ছে তা দুর থেকে মনিটরিং করছে দাগী সন্ত্রাসীদের বিশাল একটি অংশ। তার কখনো এ অভিযানে ভাটা পড়বে তার গতিবিধি দেখে পা ফেরলে চাই বলে বিশ্বস্ত সুত্র জানাগেছে।
উল্লেখ্য, গত ৪ আগষ্ট শহীদ তানভীর ছিদ্দিকীর বড় ভাই মিজানুর রহমান মাতাব্বর কালারমারছড়া পাহাড়ে আওয়ামীলীগের গডফাদার তারেক বাহিনীর সন্ত্রাসীদের অস্ত্রের প্রশিক্ষন দিয়ে ক্যাডার প্রস্তুতির মাধ্যমে পাহাড়ি এলাকাকে সন্ত্রাসীদের অভয়াশ্রম বানিয়ে সেখানে প্রশিক্ষণের ক্ষেত্র গড়ে তোলা হয়েছে। সেখানে পুলিশসহ যৌথ বাহিনীর চিরুনী অভিযানের দাবীর পাশাপাশি সন্ত্রাসীদের আটক করে ব্যবস্থা নিতে পুলিশ হেডকোয়ার্টার ও সচিবালয় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা দপ্তর বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। অভিযোগটি পেয়ে মোড় ঘুরে যায় সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে। বিষয়টি তড়িৎ আমলে নিয়ে ১০০ জনের মত পুলিশের রিজার্ভ ফোস মোতায়েন করে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। এর পর থেকে টানা পুলিশ সুপারের মনিটরিং কে কাজে লাগিয়ে কালারমারছড়া একের পর এক অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। গ্রেপ্তার হচ্ছে দাগী সন্ত্রাসী ও উদ্ধার করা হচ্ছে তাদের হাতে থাকা অবৈধ অস্ত্র।
মহেশখালী থানার ওসি মঞ্জুরুল হক বলেন”এ ধরনের অপরাধীকে গ্রেফতার করা চ্যালেঞ্জিং ছিল, কারণ সে প্রায়ই স্থান পরিবর্তন করত। এক সময় পাহাড় অন্য সময় সমতলে থাকত। তবে আমাদের একটি বিশেষ টিম কালারমারছড়ায় ছিল এবং তাদের হাতে নিশ্চিত তথ্য পৌঁছানোর পর আমরা তাকে কালারমারছড়া থেকে আটক করি।” বিস্তারিত পরে জানানো হবে।
কক্সবাজার পুলিশ সুপার মো. সাইফউদ্দীন শাহীন জানান, পুলিশ পাহাড়ের সন্ত্রাসীদের কয়েকটি আস্তানা ইতিমধ্যে ভেঙে চুরমার করে দিয়েছে। কালারমারছড়া ছাড়াও দ্বীপজুড়ে বিশেষ অভিযান শুরু করেছে। আমরা দেখতে চাই সন্ত্রাসীদের দৌরাত্ম কতটুকু। এই অভিযান থামবে না। মহেশখালীসহ কালারমারছড়াকে সন্ত্রাসীমুক্ত করার অঙ্গীকার নিয়ে মাঠে নেমেছি আমরা। অপরাধীরা শাস্তি পেতেই হবে। সন্ত্র্রেপ্তারের পুলিশ জাল বসিয়েছে। কোন সন্ত্রাসীদের নিস্তার নেই বলেও জানান তিনি।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh