বান্দরবানের রুমা উপজেলার পাহাড়ি মাটিতে এ বছর পাইন্ন্যাগুলার বাম্পার ফলন হয়েছে। টকটকে লাল ও স্বাদের জন্য খ্যাত স্থানীয় জাতের এই ফলের চাহিদা এখন শুধু রুমাতেই নয়, দেশব্যাপী বেড়েছে। বাজারে ভালো দাম পাওয়ায় চাষীরা উৎসাহিত হচ্ছেন, আর এই উৎসাহের বড় প্রমাণ পাইন্দু ইউনিয়নের খামতামপাড়া গ্রামের হোমপি খিয়াং।
হোমপি খিয়াং প্রায় দেড় যুগ ধরে পাইন্ন্যাগুলা চাষ করে আসছেন। তিনি জানান, ২০০৫ সালে তিনি প্রথমে ৫ একর জমিতে প্রায় ২০০ চারা রোপণ করেছিলেন। কয়েক বছরের মধ্যে গাছগুলো ফল দিতে শুরু করে এবং ধারাবাহিকভাবে ভালো ফলন মিলতে থাকে। এ বছর তিনি প্রায় ৪ লাখ টাকার পাইন্ন্যাগুলা বিক্রি করেছেন। হোমপি বলেন, “পাইন্ন্যাগুলা থেকে আয় করে সংসার চালাই, বাচ্চাদের পড়াশোনার খরচ দিই। আমাদের এলাকায় এখন অনেকে এ ফলের বাগান করছে।”
তার স্ত্রী সারা খিয়াং জানান, পাইন্ন্যাগুলার পাশাপাশি তাদের কলা ও আম বাগান থেকেও বাড়তি আয় হয়। তিনি বলেন, “ভালো দাম পাওয়ায় মনু খিয়াং, পিটার খিয়াং, পাইশৈ খিয়াংসহ অনেকে এ চাষে ঝুঁকছেন।”
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, রুমা উপজেলার খামতাং পাড়া, বগালেক পাড়া, পান্তলা পাড়া, বটতলী পাড়া, মুননোয়াম পাড়া, আরথা পাড়া, মুনলাই পাড়া ও পলিকা পাড়ায় পাইন্ন্যাগুলার আবাদ দিন দিন বাড়ছে। পাহাড়ের উর্বর মাটি ও অনুকূল আবহাওয়ার কারণে রোগবালাই কম হওয়ায় ফলনও হচ্ছে ভালো।
রুমা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার আল হাসির গজনফর আলী বলেন, “বর্তমানে রুমায় প্রায় ১৫-২০ হেক্টর জমিতে পাইন্ন্যাগুলা চাষ হচ্ছে। যদিও কোনো রেজিস্ট্রেশনভুক্ত তালিকা নেই, তবে কৃষকদের মৌখিক পরামর্শ দিয়ে আমরা সহায়তা করি। এছাড়া রপ্তানিযোগ্য ফলন উৎপাদনের জন্য ঊর্ধ্বতন দপ্তরে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।”
তিনি আরও জানান, কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের উদ্ভাবিত বারি লুকলুকি-১ জাত নিয়েও কাজ চলছে। “কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ দেওয়া হয়-কোন সময়ে সার ব্যবহার করতে হবে, রোগবালাই হলে করণীয় কী, কখন ফল সংগ্রহ করতে হবে—এসব বিষয়ে আমরা সবসময় তাদের পাশে আছি।”