টানা কয়েক দিনের ভারি বৃষ্টি আর ভারতের উজান থেকে নেমে আসা আকস্মিক পাহাড়ি ঢলে শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার মহারশি নদীর বাঁধ ভেঙে উপজেলা সদর বাজারসহ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে পানির তীব্র স্রোতে নদী তীরবর্তী অন্তত পাঁচটি ঘরও ভেঙে গেছে। এতে অসহায় হয়ে পড়েছেন নদী পাড়ের মানুষ।
স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবার দুপুর ১টা থেকে মহারশি ও সোমেশ্বরী নদীর পানি বাড়তে শুরু করে। এক পর্যায়ে মহারশি নদীর বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে ও উপজেলা সদর বাজারে পানি প্রবেশ শুরু করে।
এ সময় উপজেলার পূর্ব খৈলকুড়া গ্রামের সাত্তার মিয়া, বারেক মিয়া, বাচ্চু মিয়া, রহিম মিয়া, আমিনুল বাড়িসহ সাত-আটটি বাড়ি ভেঙে চলে যায়। এছাড়া সোমেশ্বরী নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে ধানশাইল ইউনিয়নের কাড়াগাঁও-ধানশাইল সড়কের উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
পূর্ব খৈণকুড়া গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত সাত্তার মিয়া জানান, আমি হতদরিদ্র মানুষ, কাজ করে খাই। প্রতিবছরই পাহাড়ি ঢলে এমন কইরা বাড়িঘর ভাসাইয়া নিয়া যায়। কোনোরকমে খাটটা আর শোকেসটা বের করছি। কারণ কিছুই বের করতে পারি নাই। পানি উন্নয়ন বোর্ডে বাঁধের কথা বললে তারা বলে বাজেট নাই।
এই যে ক্ষতি হইল আমার, এটার ক্ষতিপূরণ কে দিব? রহিমা বেগম জানান, কোনোরকমে কাপড়চোপড় আর কিছু জিনিস বের করতে পারছি। এর মধ্যেই ঢলের পানি সব ভাসায়া নিয়া গেছে। এখন আমি কি করমু? কেমনে চলমু?
এদিকে কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, জেলায় রোপা আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রার ৯৩ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমির মধ্যে ৯৯ শতাংশ ধান রোপণ সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্যে ঝিনাইগাতী উপজেলায় রোপা আমন আবাদের নিম্নাঞ্চলের কিছু খেত প্লাবিত হয়েছে।
ঝিনাইগাতী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. ফরহাদ হোসেন জানান, পাহাড়ি ঢলের পানিতে ঝিনাইগাতী উপজেলার ১১৩ হেক্টর রোপা আমন আবাদ পানির নিচে নিমজ্জিত হয়েছে। এর মধ্যে ৫০ হেক্টর সম্পূর্ণ ও ৬৩ হেক্টর আংশিক। তবে পানি দ্রুত সময়ের মধ্যে নেমে গেলে আবাদের তেমন ক্ষতি হবে না।
এ ব্যাপারে ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আশরাফুল আলম রাসেল জানান, ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় পর্যাপ্ত ত্রাণ ও রেসকিউ টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে।