কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতুর গোলচতুর এলাকাকে ঘিরে পুরো দক্ষিণাঞ্চলের লাখ লাখ যাত্রীর নিত্যদিনের দুর্ভোগ-দুর্দশা লেগে আছে। প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের ছত্রছায়ায় সেতুর গোলচত্বরের পুরো জায়গা দখল করে গড়ে উঠেছে অবৈধ বাসস্ট্যান্ড। এই অবৈধ বাসস্ট্যান্ডের কারণে এই রুটে নিত্য যানজটের ভোগান্তি বছরের পর বছরও শেষ হচ্ছে না।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সেতুর গোলচত্বর ঘিরে চতুর্দিকে বিশাল খালি জায়গা দিনের পর দিন-মাসের পর মাস; বছরের পর বছর সিএনজি থেকে শুরু করে বাস-টেম্পুর স্ট্যান্ডে পরিণত হয়েছে। পায়ে হেঁটে রাস্তা পারাপারেরও কোনো জায়গা নেই। এই রুটের যাত্রীদের অভিযোগ গোলচত্বরের যানজটের কবলে পড়ে প্রতিদিন দক্ষিণ চট্টগ্রামসহ কক্সবাজার ও বান্দরবান রুটে চলাচলকারী যাত্রীকে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত দুর্ভোগে পড়তে হয়। এই
রুটের নিত্যদিনের যানজট দেখার কেউ নেই বলে অভিযোগ করেন যাত্রীরা। কর্ণফুলী সেতু এলাকার ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, শাহ আমানত সেতুর গোলচত্বর থেকে চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন রুটে এবং দক্ষিণ চট্টগ্রামের প্রতিটি উপজেলাসহ কক্সবাজার ও বান্দরবান রুটে অন্তত ২১ ধরনের যানবাহন চলাচল করে।
কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতুর গোলচত্বর এলাকা হয়ে শাহ আমানত সেতুর উপর দিয়ে প্রতিদিন গড়ে ২৬ হাজারের বেশি যানবাহন। যানবাহন চলাচল করে বলে জানান শাহ আমানত সেতুর টোল প্লাজার ইজারাদার প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ-ভারত যৌথ কোম্পানি সেল-ভ্যান জেভির প্রকল্প ব্যবস্থাপক সুমন ঘোষ। দিন দিন এই রুটে যানবাহনের সংখ্যা বাড়ছে বলে টোল প্লাজার কর্মচারীরা জানান।
শুক্রবার শাহ আমানত সেতুর গোলাচত্বর এলাকায় গিয়ে ট্রাফিক পুলিশ এবং যাত্রী সাধারণের সাথে কথা হলে তারা জানান, গোল চত্বরের চতুর্পাশে সড়ক ও জনপথের খোলা জায়গা জুড়ে বছরের শাহ আমানত সেতুর গোলচত্বরে
পর বছর পরিবহন মালিক-শ্রমিক সংগঠনের নেতাকর্মী ও প্রভাবশালীরা তাদের বাসের স্ট্যান্ড বানিয়ে রেখেছেন। এই প্রভাবশালীদের বাসগুলো এই গোলাচত্বর থেকে সরানোর জন্য একাধিকবার উদ্যোগ নেয়া হলেও তা সম্ভব হয়নি বলে জানান ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা। বাস-জিপ- টেম্পু, হিউম্যান হলার, সিএনজি তাদের অঘোষিত স্ট্যান্ড বানিয়ে রেখেছে। এসব যানবাহন মালিকদের নিজস্ব কোনো জায়গা নেই তাদের গাড়িগুলো রাখার জন্য।
তারা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এ গোলাচত্বরের দুইপাশে গাড়ি চলাচলের জায়গাসহ সরকারি বিভিন্ন সংস্থার জায়গা দখল করে গাড়ি রেখে যাত্রী তুলেন এবং গাড়ি দাঁড় করিয়ে রাখেন। এই কারণে প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতুর গোলচত্বর এলাকায় দীর্ঘ যানজট লেগে থাকে।
বিশেষ করে সাপ্তাহিক ছুটির দিন ছাড়া অন্যান্য দিনে ভোর থেকে রাত পর্যন্ত দক্ষিণ চট্টগ্রামগামী স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজার হাজার শিক্ষক-শিক্ষার্থী-অফিসগামী কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং শহরমুখি ব্যবসায়ী-সাধারণ যাত্রীদের পদচারণায় কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতুর গোলাচত্বর এলাকা লোকেলোকারণ্য হয়ে উঠে।
দক্ষিণ চট্টগ্রাম থেকে আসা সকল যানবাহনের স্টপেজ হলো শাহ আমানত সেতুর গোলাচত্বর। সকল রুটের যানবাহন থেকে যাত্রীরা এখানে নেমে যে যার মত করে নগরীর বিভিন্ন রুটে চলে যান। আবার বিকেলে এই চত্বরে এসে যে যার মত রুটের গাড়িতে উঠেন। বলতে গেলে কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতুর গোলাচত্বর এলাকাটি বৃহত্তর চট্টগ্রামবাসীর সড়ক যোগাযোগের মহাজংশন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, শত শত যানবাহনের অবৈধ স্টপেজের কারণে সেখানে যানবাহনের কোনো শৃঙ্খলা নেই বললেই চলে। যত্রতত্র যানবাহন দাঁড়িয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজট সৃষ্টি করলেও অনেকটা নীরব ভূমিকা পালন করছে ট্রাফিক বিভাগ। এসময় দেখা যায়, শাহ আমানত সেতুর গোলচত্বর থেকে সেতুর ভেতরের অংশ হয়ে টোল প্লাজা এলাকা পর্যন্ত অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে শত শত গ্রাম সিএনজি টেজ্জি স্ট্যান্ড।
এসব অবৈধ গ্রাম সিএনজি টেক্সি চলে ট্রাফিক ও হাইওয়ে পুলিশকে ম্যানেজ করে। সড়কের উপর থেকে ছাড়া হয় পটিয়া-শান্তিরহাটগামী হিউম্যান হলার, বাস-মিনিবাস, নিউ মার্কেটমুখী মাহিন্দ্রা ও লেগুনা। পুরো গোলচত্বর জুড়ে অবৈধযানের ছড়াছড়ি।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh