ছবি: সংবাদ সারাবেলা।
সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে আওয়ামীলীগ পূর্ণবাসনসহ বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার (১৮-সেপ্টেম্বর) সিলেট বিভাগীয় কমিশনারে কার্যালয়ে বিভাগীয় কমিশনারের হাতে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ওয়ারিয়র্স অফ জুলাই সুনামগঞ্জ জেলা শাখার যুগ্ম আহবায়ক রেদোয়ান আহমেদসহ কয়েকজন জুলাই যোদ্ধা।
অভিযোগকারীরা বলেন, সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক ২০২৪ সালের ১২ সেপ্টেম্বর বর্তমান কর্মস্থলে যোগদান করেন। জুলাই গণ অভ্যুত্থান পরবর্তী নতুন বাংলাদেশে জেলা প্রশাসকের দায়িত্ব পাওয়ার পর আমরা লক্ষ্য করছি, পলাতক ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচার সন্ত্রাসী আওয়ামী ক্যাডারদের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রেখে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং মূলধারার গণমাধ্যমে তার দায়িত্ব পালনে বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম দুর্নীতি দায়িত্বে অবহেলাসহ বিভিন্ন প্রসঙ্গে তথ্য উপস্থাপিত হয়েছে।
তার যোগদান করার পর থেকে সুনামগঞ্জের সকল বালুমহালের বালি,পাথর ও ভীটমাটি নদীতে ড্রেজার মেশিন লাগিয়ে হরিলুট শুরু হয়েছে যা সুনামগঞ্জের ইতিহাসে নজিরবিহীন। এছাড়াও সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলার জাদুঘাটা নদী থেকে, অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলনে জেলা প্রশাসকের যোগসাজশ রয়েছে। তার বিরুদ্ধে হাইকোর্টে ৮৯/২০২৫ নং আদালত অবমাননা মামলা বিচারাধীন রয়েছে।
মামলায় জেলা প্রশাসক ১নং আসামী ও এডিএম রেজাউল করিমকে ২নং আসামী করা হয়েছে। তার অধীনস্থ এডিএম রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে ভারতীয় ৯০টি গরু আইন অনুযায়ী নিলাম না করে সরকারের ৮০ লাখ টাকা রাজস্ব ক্ষতিসাধনের দায়ে সিলেট বিভাগীয় কাস্টমস কর্তৃপক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। শত শত বৈধ বালি ব্যবসায়ীদেরকে উপেক্ষা করে প্রহসনমূলক টেন্ডার প্রক্রিয়ায় বেআইনীভাবে তারা ছাত্রলীগের পলাতক আসামীর হাতে যাদুকাটা ও চেলাই নদী বালিমহাল ইজারা দিয়েছেন।
সুনামগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে অসাধু কর্মচারীদের যোগসাজশে সরকারী ঔষধপত্র মজুদ রেখে কৃত্রিম সংকট তৈরি এবং সাধারণ মানুষের দূর্ভোগ লাঘবে তার কোন ভূমিকা নেই বললেই চলে। এতে করে সেবাপ্রার্থীরা অধিকার থেকে বঞ্চিত হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
অভিযোগে আরও বলা হয়েছে,পতিত স্বৈরাচারের দোসর,সন্ত্রাসী ও আওয়ামীলীগের পলাতক চেয়ারম্যানদেরকে নিয়ে গত ০১/০৯/২৫ তারিখে জেলা প্রশাসক তার কার্যালয়ে মিটিং করে তাদেরকে এলাকায় থেকে কাজ করার জন্য সুস্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন। জুলাই গণ অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে তিনি সরকারি বিভিন্ন অনুষ্ঠান আলোচনায় অংশগ্রহণে তাদেরকে উৎসাহিত করছেন এবং তাদেরকে আমন্ত্রিত করছেন। যা জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে, ফ্যাসিবাদ বিরোধী ছাত্র জনতার হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে।
এজন্য মানুষের মনে একপ্রকার উদ্বেগ ছড়াচ্ছে। জুলাই যোদ্ধারা বিভাগীয় কমিশনারকে বলেন,আমরা চাই, জুলাই গণ অভ্যুত্থান পরবর্তী নতুন বাংলাদেশে আমরা বৈষম্যহীন-ইনসাফ ভিত্তিক একটি রাষ্ট্র বাস্তবায়নের স্বপ্ন দেখি। সুনামগঞ্জে জুলাই যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক ও এডিএম রেজাউল করিম ফ্যাসিবাদের দোসরদেরকে লাঠিয়াল হিসেবে ব্যবহার করছেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে অভিযোগকারী জুলাই যোদ্ধা রেদোয়ান আহমেদ বলেন,আমরা জেলা প্রশাসকসহ সকল দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের অপসারন চাই। তানা হলে আন্দোলনের মাধ্যমে দাবী আদায় করবো।
এদিকে সুনামগঞ্জের এ গ্রেডের অতি গুরুতর আহত জুলাইয়োদ্ধা জহুর আলী বলেন, ৫ আগস্টের পর সুনামগঞ্জে জুলাই যোদ্ধারা আওয়ামীলীগ ধূসরদের দ্বারা বার বার শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতিত হচ্ছেন যা বিভিন্ন সময় জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগের মাধ্যমে জানানো হয়েছে অভিযোগের বিচারও পায়নি জুলাই যোদ্ধারা এবং এডিএম রেজাউল করিম এর কাছে একটি জরুরি কাজে তার অফিসে গেলে প্রকাশ্য দিবালোকে মিথ্যা ও গুজব তকমা দিয়ে অশালীন কথাবার্তা বলে তাকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করেছেন।
জুলাই গণঅভ্যতানে অন্যতম জুলাই যোদ্ধা শাহিন মিয়া বলেন বাংলাদেশে আওয়ামীলীগের ঘাটি গোপালগঞ্জের পরের অবস্থান সুনামগঞ্জে যা আমরা বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে আওয়ামী লীগের তৎপরতা দেখতে পাচ্ছি আর তাদের পূর্ণবাসনের জন্য কাজ করে যাচ্ছে ড. ইলিয়াছ মিয়া ও রেজাউল করিম প্রশাসন ৫ আগস্টের পর সুনামগঞ্জে বালু পাথর লুটসহ ভারতীয় গরু,জীরা,চিনি চোরাকারবারিরা প্রকাশ্যে প্রশাসনের সহযোগীতায় অবৈধ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। এরিমধ্য এডিএম রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে ভারতীয় ৯০টি গরু চোরি, ঝুঁকিপূর্ণ পৌর মার্কেটের ৩য় তলায় অবৈধভাবে দোকান কোটা নির্মাণসহ বিভিন্ন দুর্নীতির নিউজের শিরোনাম হয়েছেন।
জুলাই যোদ্ধারা আরো বলেন,অতি সম্প্রতি নাও দৌড়ানী প্রতিযোগীতার মাধ্যমে জেলা প্রশাসক ড.ইলিয়াস মিয়া সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের মাধ্যমে সুকৌশলে আওয়ামী লীগ ও নৌকা প্রতিকের প্রচারণা চালিয়েছেন। বিশেষ করে যেসব সাংবাদিকদেরকে রেখে তিনি কমিটি গঠনে প্রাধান্য দিয়েছেন তারা ফ্যাসিবাদ আমলে শিল্পকলায় নাটক মঞ্চস্থ করতে গিয়ে বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার গুণগান প্রচার করলেও পরিবেশিত নাটকে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে হেয় প্রতিপন্ন করা হয়েছে। এছাড়া ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা র এর এজেন্ট হিসেবে যারা কাজ করতো ও শেখ ফাহিমকে সুনামগঞ্জে যারা রিসিভ করতো সেসব সাংবাদিকদেরকে জেলা প্রশাসনের সকল কাজে সম্পৃক্ত রাখার অভিযোগও রয়েছে জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে।
অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চেয়ে জেলা প্রশাসকের মুঠোফোনে এখাধিকবার কল করেও তার কোন বক্তব্য জানা যায়নি।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh