বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে সাধারণ ক্রেতাদের নাভিশ্বাস হয়ে উঠছে। সবজি, মাছ, এবং অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাওয়ায় তারা ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। বিক্রেতারা পণ্যের আমদানি ঘাটতি ও অন্যান্য কারণে দাম বৃদ্ধির কথা বললেও, ক্রেতারা তা মনে করছেন না। সবজি ও মাছসহ প্রায় সকল নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম লাগামহীনভাবে বাড়ছে।
পণ্যের দাম এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যা সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে। বৃষ্টির কারণে সবজির দাম বেড়ে যাওয়ায় ক্রেতারা হিমশিম খাচ্ছেন, যা আগের বছর চেয়ে ও অনেক বাড়তি
অনেক ক্রেতা অভিযোগ করেছেন যে, সবজির দাম অনেক বেড়েছে এবং এগুলো কেনার মতো অবস্থায় নেই।
কেউ কেউ না খেয়ে থাকার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যদি দাম এভাবে বাড়তে থাকে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বেড়েছে অস্বাভাবিক হারে । বেড়েছে মাছ,মুরগীসহ সকল প্রকার সব্জির দাম। সেই সাথে বেড়েছে আলু, পেয়াজ-আদা ও রসুনসহ সব ধরনের মসলার দামও। ফলে কেনাকাটা করতে এসে হিমশিম খেতে হচ্ছে নিম্ন এবং মধ্য আয়ের মানুষদের।
লক্ষীপুর কাঁচা বাজারের কেনাকাটা করতে আসা ইসমত দোহা বলেন, ‘মাছের বাজার একদিকে যেমন অনেক চড়া, অপরদিকে চাষের বাইরের দেশীয় জলাশয়ের মাছের দেখা মিলেনা। একপ্রকার বাধ্য হয়ে পাঙ্গাস-তেলাপিয়াসহ হ্যাচারির অন্যসব মাছের দিকে ঝুকতে হচ্ছে। যেসব মাছে নাই স্বাদ বরং রয়েছে স্বাস্থ্য ঝুকি।
তিনি বলেন, যে টাকা ইনকাম করি তা দিয়ে সংসার চালাতে এমনিতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে। নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রীর মূল্য যেই হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে, এভাবে বাড়তে থাকলে এক সময় না খেয়ে থাকতে হবে।
বাজার করতে আসা রিকশা চালক কামরুল বলেন, বাজারে প্রায় সব ধরনের মাছের দাম বেশি। পছন্দসই শাক-শবজিও মিলছে না। যা-ও আছে তা আবার বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে। ডিমের দাম কমলেও তা পূর্বের তুলনায় অনেক বেশি। কাজেই সারাদিন কাজ করে যা পাই এই টাকা দিয়ে সংসার চালানো কষ্টকর।’
লক্ষীপুর মুক্তিযোদ্ধা গেস্ট হাউজের মিঠু সাহা বলেন, সবকিছুর দাম বাড়ার ফলে আমাদের সাংসারিক খরচ বেড়ে গেছে বহুগুণ। সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে আমদের খাবার দাবারে। শেষ কবে খাঁশির মাংস খেয়েছি তা মনে পড়ে না। আগে সপ্তাহে ২-১দিন মুরগির মাংস খেলেও এখন সপ্তাহে ১ দিন খাচ্ছি। গত সপ্তাহজুড়ে ৮০ /১০০ টাকার কমে মেলেনি কোনো সবজি। ডিমের দাম ছিল রেকর্ড পরিমাণ ৮ টা ডিম ১০০ টাকা। অসাধু ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কারণে বাজারে বাড়ছে মুরগির দাম। সরকারের নির্ধারিত দামের থেকে ব্রয়লার মুরগি ৩০ থেকে ৪০ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। আর সোনালি মুরগি ৪০ থেকে ৫০ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। নিত্যপণ্যের এই বাড়তি দামের চাপ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে সাধারণ মানুষ। নিম্ন আয়ের মানুষ শুধু নয়, মধ্যবিত্তরাও এখন সংসার চালাতে কঠিন সময় পাড় করছেন।
বিশেষ করে গুরুত্বপূর্ণ চারটি ভোগ্যপণ্য আলু, পিঁয়াজ ও সয়াবিন তেল ডিমের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছিল সরকার। কিন্তু সরকার নির্ধারিত দামকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে পিঁয়াজ ও আলু বিক্রি হচ্ছে আরো অনেক বেশি দামে। ডিমের দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হলেও দাম বেড়েই চলছে তেল যার থেকে যেভাবে নিতে পারে । শুধু ডিম-পিঁয়াজ নয়, সব ধরনের সবজি ও মাছের দামেও হাতের নাগালের বাহিরে। পেঁপে ছাড়া অন্য কোনো সবজির কেজি মিলছে না একশ টাকার নিচে। এখনও আকাশছোঁয়া। চাল, ডাল, তেল, চিনি, আটা, ময়দাসহ প্রায় সব ধরনের পণ্যের দাম বেড়েছে। সবজির দাম বেড়েছে আরো অনেকগুণ। মাছ-মাংসে হাত দেওয়ার উপায় নেই। অন্যান্য নিত্যপণ্যের মতো মসলার বাজারেও চলছে সিন্ডিকেটের কারসাজি। চড়া দামের কারণে নির্দিষ্ট আয়ের ভোক্তারা রান্নার অত্যাবশ্যকীয় পণ্য মসলার ব্যবহার কমিয়ে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। বাজারে ডিম, পিঁয়াজ, আদা, রসুনের গায়ে যেন আগুন লেগেছে।
বস্তুত অসৎ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আজ পর্যন্ত দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলেই দিন দিন তাদের লোভ বাড়ছে। তারা হয়ে উঠছে বেপরোয়া। বাজার তদারকির কথা শোনা গেলেও বাস্তবে এ ধরনের তৎপরতা কোনো বাজারেই দৃশ্যমান নয়। নিত্যপণ্যের প্রতিটি বাজারে নিয়মিত নজরদারির ব্যবস্থা করুন। চিহ্নিত করুন সিন্ডিকেট। অসৎ ব্যবসায়ীদের গ্রেফতারের ব্যবস্থা করে আইনের আওতায় আনুন। তাহলে হয়তো নিত্য প্রয়োজনীয় পুণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব সংশ্লিষ্টরা মনে করে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh