শরীয়তপুরের জাজিরায় সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় ন্যায্য মূল্যে ওএমএসের চাল বিক্রিতে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগীদের দাবি, মেপে না দিয়ে বালতিতে করে চাল দিচ্ছেন ডিলার উপজেলা সেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মো: জাকির হাওলাদার। এতে কম চাল পাচ্ছেন তারা। তবে বিষয়টি মানতে নারাজ ডিলার জাকির হাওলাদার। তিনি বলেন, আমাকে হয়রানি করার জন্য একটা পক্ষ উঠে পড়ে লেগেছে। আমার ক্ষতি করতে পারলে তাদের লাভ। তাই সেইসব লোকেরা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা বলছে।
গতকাল মঙ্গলবার জাজিরা উপজেলার পালেরচর ইউনিয়নে গেলে ন্যায্য মূল্যের চাল পেয়েছেন এমন বেশ কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে চাল বিতরণ অনিয়মের সত্যতা পাওয়া যায়। চাল মেপে দেখা যায় ২৪ থেকে ২৭ কেজি করে চাল বিতরণ করা হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পালেরচর ইউনিয়নের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির কার্ডধারী ৫১৩ জন। এসব কার্ডধারীরা ১৫ টাকা কেজি দরের ৩০ কেজি করে চাল পান।
সরকার নির্ধারিত সিলমোহরযুক্ত বস্তা ব্যতীত বালতি দিয়ে তিন বালতি করে সুবিধাভোগীদের চাল বিতরণ করেন ডিলার জাকির হাওলাদার। চাল নেওয়ার পরে বিষয়টি কার্ডধারীদের সন্দেহ হলে পাশের একটি দোকানের ওজন করে তারা মাপে গরমিল দেখতে পান। এসময় একাধিক কার্ডধারীর চাল মেপে দেখা যায় ২৫-২৭ কেজি চাল। তাৎক্ষণিক বিষয়টি ডিলারকে জানান কার্ডধারীরা। ডিলার জাকির হাওলাদার কার্ডধারীদের হুমকি ধামকি দিয়ে চলে যেতে বলেন।
ওএমএসের কার্ডধারী ৮ নম্বর ওয়ার্ডের রজব আলী সরদার কান্দি গ্রামের বাসিন্দা জয়নাল সরদার বলেন, ‘আমাদের ৩০ কেজি করে চাল দেওয়ার কথা। বালতি দিয়ে মেপে দেওয়ার পরই আমার সন্দেহ হয়। এর জেরে মেপে দেখি আমার বস্তায় ২৫ কেজি চাল। আমরা ভয়ে প্রতিবাদ করি না কম দিলে তা নিয়েই চলে যা-ই।
৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আমিনা খাতুন বলেন, ‘গরীব মানুষ হওয়ায় আমরা কার্ড করছি। আজকে যখন চাল নিয়েছি তখনই সন্দেহ হয়। মেপে দেখি আমার বস্তায় ২৪ কেজি চাল আছে। কিন্তু দেওয়ার কথা ৩০ কেজি। এক থেকে দুই কেজি হলে মানতাম। কিন্তু ছয় কেজি কম। আমরা গরীব মানুষ। জাকির ভাই কেন এ কাজগুলো করতেছেন জানি না। যদি তার কাছে অভিযোগ দিতাম তাহলে সে হয়ত মারধর করতেন। এরপর বিষয়টি মেম্বারকে জানালে তিনি ইউএনও, খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তাদের কাছে অভিযোগ জানাতে বলেন। আমরা গরীব মানুষ আমাদের কথা কে শুনবে?।
অভিযোগের বিষয়ে ডিলার উপজেলা সেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মো: জাকির হাওলাদার বলেন, ‘আমি পরিমাণে কম দেই নাই। আমার বিরুদ্ধে একটা গ্রুপ আছে, সেই লোকেরা এগুলো করতেছে। যাদের চাল দিয়েছি তারা বস্তা থেকে চাল বাড়িতে রেখে আমার নামে বদনাম করার জন্য অভিযোগ করছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা রাশেদুজ্জামান বলেন,’ আজ চাল বিতরণ অনিয়ম হয়েছে বিষয়টি আমার জানা নেই। এর আগে আগষ্ট মাসে ওই ডিলারের বিরুদ্ধে চাল বিতরণ অনিয়মের অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে পালেরচর ইউনিয়নের দায়িত্বে থাকা ট্যাগ অফিসার ইউনিয়ন কৃষি কর্মকর্তা মো. আবু বকরকে ঘটনাস্থলে পাওয়া যায় নি। কথা হয় মুঠোফোনে। তিনি জানান, জেলা সদরে মিটিং থাকায় তিনি সেখানে উপস্থিত ছিলেন না। চাল বিতরণ অনিয়মের বিষয় তিনি কথা বলতে রাজি নয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাবেরী রায় বলেন, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় ন্যায্য মূল্যে চাল বিক্রিতে অনিয়মের লিখিত অভিযোগ পাই নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh