চাঁদপুর-চট্টগ্রাম রেলপথে বহু বছর ধরে মাত্র দুটি ট্রেন দিয়ে যাত্রীসেবা দিয়ে যাচ্ছে। যার মধ্যে আন্তঃনগর মেঘনা এক্সপ্রেস ও সাগরিকা এক্সপ্রেস নামক দুটি ট্রেন। আর এ দুটি ট্রেনও চলছে ব্রিটিশ আমলের প্রায় ২০০ বছরের পুরনো ইঞ্জিন, আর লক্কর ঝক্কর বগি দিয়ে। ফলে পুরনো এ ট্রেন দুটি এখন যাত্রী সেবায় চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।
যার কারণে এই রুটের যাত্রীসেবার মান উন্নয়ন ও বন্দর নগরী চট্টগ্রামের সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে আরেকটি নতুন আন্তঃনগর ট্রেন দেয়ার দাবি জানিয়ে রেলপথ মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছেন, চাঁদপুর জেলা প্রশাসক। এ দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন, রুটে চলাচলকারী যাত্রীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লোকজন।
মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন, জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন। তিনি জানান, গত ১৮ সেপ্টেম্বর রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর চাঁদপুর-চট্টগ্রাম রুটে একটি আন্তঃনগর ট্রেন দেয়ার প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে অনুরোধ জানিয়ে চিঠি পাঠান।
চাঁদপুর সদর বাবুরহাটের বাসিন্দা আব্দুস সামাদ দেওয়ান শিমুল বলেন, চট্টগ্রামে বেসরকারি কোম্পানিতে এইচআর (এডমি) কর্মরত আছি। শুক্র- শনি সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় আমি নিয়মিত প্রতি সপ্তাহে মেঘনা ও সাগরিকা ট্রেনে যাতায়াত করি। রুটে চলাচলকারী দুটি ট্রেনেই যাত্রী সেবার কোনো মান বা পরিবেশ নেই।প্রায় সময়ই আন্ত:নগর মেঘনা ট্রেনের ইঞ্জিনের সমস্যা দেখা দেয়। ফলে তখন ট্রেন নির্ধারিত সময়ে গন্তব্যে পোছতে বিলম্ব হয়। তাছাড়া বগিগুলোর জানালা, ফ্যান ও লাইট ও থাকে বিকল।
হাজীগঞ্জ উপজেলার পৌর এলাকার বাসিন্দা মোজাম্মেল হোসেন বলেন, চট্টগ্রামে একটি বেসরকারি ব্যাংকে চাকরির সুবাদে সাপ্তাহিক ছুটিতে আমি মেঘনা ট্রেনে নিয়মিত যাতায়াত করি। ট্রেনটি নামেই শুধু আন্ত:নগর । যাত্রীসেবার মান একেবারেই নিন্মমানের।এর লাইট, ফ্যান, জানালা ও সীট কোন কিছুই ঠিক থাকে না। তাছাড়া বগি, সীট ও ওয়াশরুম থাকে অপরিচ্ছন্ন। অথচ অন্যান্য রুটের আন্তঃনগর ট্রেনের সেবার মান ভালো।
প্রায় সময় ভ্রমণের জন্য এই রুটে যাতায়াত করেন, আইনজীবী চৌধুরী ইয়াছিন ইকরাম। তিনি বলেন, এই রুটে সাগরিকা এক্সপ্রেস লোকাল। আর মেঘনা এক্সপ্রেসে বহু সংখ্যক হকার উঠে। তাদের কারণে যাত্রীরা হয়রানি এবং বিড়ম্বনার শিকার হন। নতুন করে একটি আন্তঃনগর ট্রেন দেয়া হলে চাকরিজীবী ও ব্যবসায়ীসহ দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীদের সুবিধা কয়েকগুণ বাড়বে।
এছাড়া বরিশাল, খুলনা ও ভোলাসহ দক্ষিণাঞ্চের এ রুটে যাতায়াতকারী কয়েকজন যাত্রীও ট্রেনের যাত্রীসেবার মান নিয়ে নানা অভিযোগ করেন।
জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন বলেন, চাঁদপুর-চট্টগ্রাম রুটে অনেক যাত্রী ব্যক্তিগত কাজ ছাড়াও দাপ্তরিক কাজে যাতায়াত করেন। সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা সন্তোষজনক নয়। নৌ-রুটেও চলাচলের ব্যবস্থা নেই। বর্তমানে মেঘনা এক্সপ্রেস ও সাগরিকা এক্সপ্রেসও এই অঞ্চলের বিপুল সংখ্যক যাত্রীদের চাহিদা মেটাতে পারছে না। ট্রেন দুটির বেশিরভাগ ওয়াশরুম, লাইট, ফ্যান ও চেয়ারের অবস্থা জরাজীর্ণ।
তিনি আরও বলেন, অতিরিক্ত যাত্রীর কারণে এই রুটের যাত্রীরা দাঁড়িয়ে যাতায়াত করে। কর্মসংস্থানের কারণে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ এই রুটে চট্টগ্রামের যাতায়াত করে। তুলনামূলক স্বল্প ভাড়া ও যাতায়াত সুবিধার জন্য এই রুটে যাত্রী সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে দক্ষিণাঞ্চলসহ যাত্রীদের সুবিধার্থে রেল লাইন সংস্কারসহ একটি আন্তঃনগর ট্রেন দেয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি। যে কারণে আমি বিযয়টি রেলপথ মন্ত্রণালয়ে অবহিত করে চিঠি দিয়েছি।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh