× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

প্রশস্ত সড়কে, সরু কালভার্টে দুর্ঘটনার ঝুঁকি

তানোর(রাজশাহী)প্রতিনিধি

২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৩:১২ পিএম

রাজশাহীর তানোর-মুন্ডুমালা-আমনুরা প্রশস্ত সড়কে সরু কালভ্রাট দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ। প্রশস্ত সড়কে একাধিক সরু কালভার্টগুলো যেন এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়ে উঠেছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিনিয়ত এ সড়ক দিয়ে চলাচল করছে শতশত যানবহন। সামান্য অসর্তকতা থেকে গাড়ি চালালেই ঘটে যাবে বড় দুর্ঘটনা। জানা গেছে, প্রায় তিন দশক আগে কাঁচা থেকে সড়কটি ১০ ফিট প্রশস্ত পাকা করা হয়েছিল। পাকা করার সময় সড়কের একপাশের পানি অন্যপাশে নিষ্কাশনের জন্য পাকা সড়কের ১০ ফিট চওড়ার আদলেই করা হয় একাধিক সরু কালভার্ট। এদিকে তিন দশকে এ সড়কটি একাধিক বার সম্প্রসারণ করা হয়েছে। সম্প্রসারণের কারণে সড়কটি এখন ১০ ফিট থেকে ২০ ফিট প্রশস্ত হয়েছে। সড়ক প্রশস্ত হলেও সেই তিন দশক আগের কালভার্টগুলো এখনও আগের মতই সরু রয়েছে। আর এসব সরু কালভার্টে ৩০ বছর যাবত অতিঝুঁকি নিয়েই চলছে যানবহন। এতে বেড়েই চলছে দুর্ঘটনা।

জানা গেছে,স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) কর্তৃপক্ষ ঝুঁকিপূর্ণ এসব সরু কালভার্টগুলোকে ভেঙ্গে নতুন করে প্রশস্ত রাস্তার মাপে সেতু বানানোর প্রতিশ্রুতি দিলেও একযুগের বেশি সময়ও তা বাস্তবায়ন করতে পারেনি।

বিশেষ করে মুল সড়কটি তানোর থেকে মুন্ডুমালা ১২ কিলোমিটারের মধ্যে ৬টি ও মুন্ডুমালা থেকে আমনুরা ৮ কিলোমিটারের ৩টি কালভ্রাট এমন সরু যে একটি বাস বা একটি ট্রাক কালভার্টের উপর উঠলে পাশে একটি মানুষ পায়ে হেঁটে যাওয়ার মতো জায়গা থাকে না। অনেক কালভ্রাটে পরিবহনের ধাক্কায় সাইড ওয়াল ভেঙে, রডগুলো দুমড়ে-মুছড়ে গেছে।

সুত্র জানায়, এই সড়কটি রাজশাহী বায়া থেকে তানোর উপজেলার বুক চিরে চলে গেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের আমনুরা পর্যন্ত। তানোরের সবচেয়ে ব্যস্ত সড়কটি নির্মাণের শুরুতে ১০ ফিট প্রশস্ত করা হয়েছিল। এরপরে আরও কয়েক দফা সড়কটি সম্প্রসারণের কাজ করা হয়েছে। শেষে এসে সড়কের প্রশস্ত ঠেকেছে ২০ ফিটে। ঝুঁকিপূর্ণ এসব সরু কালভার্ট রেখেই নতুন করে রাস্তার সম্প্রাসারণ করায় স্থানীয় জনসাধারণ ও রাস্তা চলাচলকারী যানবহন চালকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এসব কালভার্ট পারাপার হতে গিয়ে মালবাহী ট্রাকসহ ছোট বড় যানবহন প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও দুর্ঘটনায় পড়ছে। বিশেষ করে রাতে প্রশস্ত রাস্তার মাপে গাড়ি চালাতে গিয়ে সরু কালভার্টে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনার ঘটনা বেশি ঘটছে।

তানোর উপজেলা ফায়ার সাভির্সের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৯ বছরে রাজশাহী-তানোর-মুন্ডুমালা-আমনুরা সড়কে প্রায় ৩২০টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। তাতে প্রাণহানী হয়েছে দেড় ডজনের বেশি ব্যক্তির। আহতের সংখ্যা প্রায় হাজার ছাড়িয়েছে।

বিগত ২০১৭ সালের জানুয়ারি মাসে তানোর-আমনুরা রোডের দেবিপুর মোড় এলাকায় সরু কালভাটের কাছে নির্মাণাধীন হিমাগারের মালামাল রাখায় চলন্ত ট্রাকের নিচে মোটরসাইকেল থেকে পড়ে তানোর উপজেলায় কর্মরত সহকারি প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মাকসুদা খাতুন মারা যায়। সবশেষ ২০২০ সালের শুরুতেই যাত্রীবাহি বাস চিনাশো নামক স্থানে নিয়ন্ত্রন হারিয়ে রাস্তার পাশে উল্টে গিয়ে দুই জনের প্রাণহানী হয়। এর বাইরে রাতে একাধিক দুর্ঘটনার ঘটলেও এর কোন তথ্যের হিসাব কোন প্রতিষ্ঠনের কাছে নেই।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) তানোর অফিসের তথ্য মতে, ১৯৯২ সালে বরেন্দ্র বহুমুখি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ) আমনুরার ধামধুম থেকে-তানোর হয়ে রাজশাহীর বায়া পর্যন্ত প্রায় ৪৩ কিলোমিটার ১০ ফিট প্রশস্ত পাকা সড়ক নির্মাণ করে। এরপর থেকে বিএমডিএ রাস্তাটির দায়িত্ব পালন করছিল। ২০১২ সালে বিএমডিএ কর্তৃপক্ষ এলজিইডি কাছে ৪৩ কিলোমিটার রাস্তাটি হস্তান্তর করে। সে থেকে এলজিইডি কর্তৃপক্ষ দায়িত্বপান। এলজিইডি পর্যায়ক্রমে মুন্ডমালা থেকে বাগধানি পর্যন্ত সড়কটি সম্প্রাসারণ করে ২০ ফিট। সবশেষ ২০২৫ সালে ঝুঁকিপূর্ণ সরু কালভার্ট রেখেই পূণরাই আবারও সড়কটি সম্প্রাসারণ করা হয়েছে।

রাজশাহী হতে তানোর-মুন্ডুমালায় চলাচল রত একাধিক যানবহন চালক জানান, রাস্তা থেকে কালভার্ট অনেক সরু হওয়াই কালভার্টের উপরে গাড়ি উঠলে আর কোন জায়গা থাকে না। কালভার্টের কাছাকাছি গিয়ে সামনের গাড়ি থাকলে সেখানে কে আগে পার হবে এ নিয়ে সমস্যায় পড়তে হয়। তাছাড়া রাতে এ রাস্তায় গাড়ি চালাতে আরো বেশি সমস্যা হয়। চালকেরা গাড়ি পারাপারের সময় অনেকে ব্যালেন্স হারায় কালভার্টের সাইড ওয়ালে ধাক্কা খায়। এতে নিজেরাই আহত বা নিহত হয়ে থাকেন।

এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তর (এলজিইডি) তানোর উপজেলা প্রকৌশলী নুর নাহার বলেন, আমি এ উপজেলায় নতুন যোগদান করেছি। কালভার্ট-ব্রিজগুলো অতিঝুঁকিপুর্ণ স্বীকার করে তিনি বলেন। কালভার্টগুলো সম্প্রাসারণ করতে আমরা দ্রুত পদক্ষেপ নিব।


Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.