শরীয়তপুরের সখিপুরে ছয় বছরের শিশু তায়্যেবাকে পারিবারিক জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরেই হত্যা করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে পুলিশ। প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করে নিহতের চাচিসহ চারজনকে গ্রেপ্তার এবং শিশুর কানে থাকা স্বর্ণের দুল উদ্ধার করা হয়েছে। জেলা পুলিশ সুপার মো. নজরুল ইসলাম এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
পুলিশ সূত্র জানায়, গত ২৪ সেপ্টেম্বর সখিপুরের ছৈয়ালকান্দি এলাকার টিটু সরদারের মেয়ে তায়্যেবা (০৬) নিখোঁজ হয়। তায়্যেবার পরিবার সখিপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করে। পুলিশ বিভিন্নভাবে খোঁজ করার পর, নিখোঁজের দুই দিন পর গত ২৬ সেপ্টেম্বর দুপুর ১২টার দিকে প্রতিবেশীর বাড়ির সেপটিক ট্যাংক থেকে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনে পুলিশ সন্দেহভাজন হিসেবে নিহতের চাচি আয়শা খাতুন (৪৭), নাসিমা বেগম (৩৫) এবং আসিফ বেপারীকে (২০) আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। এদের মধ্যে গ্রেপ্তারকৃত নাসিমা বেগম পুলিশের কাছে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেন এবং পরবর্তীতে বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে যে, পারিবারিক জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরেই তায়্যেবাকে হত্যা করা হয়েছে।
পরে আটক আয়শা খাতুন ও আসিফ বেপারীকে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করলে, বিজ্ঞ আদালত আয়শার দুই দিন ও আসিফের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ডে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে শাহনাজ বেগম (২৫) নামের আরেক নারীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃত শাহনাজের দেওয়া তথ্যমতে নিহত তায়্যেবার কানে থাকা স্বর্ণের দুল অর্ধগলিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। স্থানীয় স্বর্ণের দোকানদার শীতল মাঝি বিজ্ঞ আদালতে সাক্ষ্য প্রদান করেছেন যে, শাহনাজই ওই দুল তার দোকানে বিক্রি করতে গিয়েছিলেন।
পুলিশ সুপার মো. নজরুল ইসলাম আরও বলেন, এটি একটি ক্লুলেস হত্যাকাণ্ড ছিল, তবে তদন্তে পারিবারিক বিরোধের বিষয়টি উঠে এসেছে। এ ব্যাপারে তদন্ত এখনও চলমান রয়েছে। আশা করছি খুব দ্রুততার সাথে সুষ্ঠু তদন্ত শেষে বিজ্ঞ আদালতে সম্পূর্ণ প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।