ছবি: সংবাদ সারাবেলা।
নড়াইলের লোহাগড়ায় দুর্গাপূজা উপলক্ষে শিয়রবর মধুমতি নদীতে প্রাণবন্ত পরিবেশে অনুষ্ঠিত হলো গ্রাম বাংলার লোকজ ঐতিহ্যের অন্যতম প্রতীক, ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা। বৃষ্টি উপেক্ষা করে হাজার হাজার মানুষ উৎসবমুখর পরিবেশে এ নৌকা বাইচ উপভোগ করেন।
বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) বিকাল ৪ টায় লোহাগড়া উপজেলার শালনগর ইউনিয়নের শিয়রবর মধুমতি নদীতে আয়োজন করা হয় এই বর্ণাঢ্য প্রতিযোগিতা। নদীর তীরজুড়ে জমায়েত হয় হাজার হাজার মানুষ। হাজারো দর্শক নদীর দুই পাড়ে অবস্থান নিয়ে উৎসবের অংশগ্রহণ করেন এবং নৌকা বাইচের অনবদ্য আনন্দ উপভোগ করেন। শিশু, বৃদ্ধ, নারী-পুরুষ সবাই যেন ফিরে যান শেকড়ের সেই আনন্দঘন গ্রামীণ উৎসবে। অনেকেই পরিবার-পরিজন নিয়ে দিনব্যাপী কাটান নদীর পাড়ের আনন্দময় পরিবেশে।
এ প্রতিযোগিতা দেখতে দুপুর থেকেই দর্শনার্থীরা আসতে শুরু করে। শুরুর আগেই নদীর দুই পাড় কানায় কানায় ভরে যায় দর্শনার্থীতে। পুরো বাইচ উপভোগ করার জন্য অনেক দর্শনার্থী ইঞ্জিন চালিত নৌকায় চড়ে প্রতিযোগিতা উপভোগ করেন। গ্রাম বাংলার জনপ্রিয় নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা শিশু, নারী-পুরুষসহ সব শ্রেণির দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করে।
গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতার উদ্ধোধন করেন নড়াইল জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোঃ মনিরুল ইসলাম।
উদ্ধোধনী বক্তব্যে তিনি বলেন, নৌকা বাইচ আমাদের ঐতিহ্যবাহী খেলাগুলোর মধ্যে অন্যতম। এটি শুধুমাত্র একটি প্রতিযোগিতা নয়, এটি আমাদের শেকড়, সংস্কৃতি ও মানুষের সামাজিক সম্প্রীতির প্রতীক। এই আয়োজন নতুন প্রজন্মকে বাংলার শেকড়ের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেবে এবং ভবিষ্যতেও এধরনের আয়োজন অব্যাহত থাকবে বলে আমার প্রত্যাশা।
এসময় উপস্থিত ছিলেন লোহাগড়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. আহাদুজ্জামান বাটু, সাধারণ সম্পাদক কাজী সুলতানুজ্জামান সেলিম, শালনগর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সাবেক ইউপি সদস্য মো. মফিজুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক কাজী উজ্জ্বল , আয়োজক কমিটির সভাপতি উপজেলার শালনগর ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোঃ কামাল শেখ, সাধারণ সম্পাদক তুহিন শিকদারসহ, এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ প্রমুখ।
লোহাগড়া উপজেলা বিএনপির বিএনপির সভাপতি মো. আহাদুজ্জামান বাটু বলেন, নৌকা বাইচ বাঙালির ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির অংশ। দেশের আবহমান গ্রাম বাংলার ও ঐতিহ্য সংরক্ষণ করতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে এবং প্রতি বছর এর আয়োজন করতে হবে। তিনি আরও বলেন, গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচের সঙ্গে বাঙালির ঐতিহ্য মিশে রয়েছে। এটা যাতে হারিয়ে না যায় সেই উদ্যোগ নিতে হবে।
বিশেষ বিশেষ সময়ে এ ধরনের প্রতিযোগিতার আয়োজন করা উচিত বলে জানান গৃহবধু নাসরিন জামান। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও প্রতিযোগিতা দেখতে এসেছিলেন বলে জানান সাকিব হুসাইন। এবারই প্রথম পরিবারের সবাইকে নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা দেখিয়েছেন এবং পরিবারের সবাই অনেক আনন্দ করেছেন বলে জানান স্কুল শিক্ষক খন্দকার আহাদ।
শিশু দর্শনার্থী জোনায়েত, সাইমন জানায়, এবারই প্রথম কোনো নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা দেখলাম। অনেক মজা পেয়েছি নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা দেখে। নৌকায় চড়ে নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা দেখার আনন্দই আলাদা। এর আগে কোনো প্রতিযোগিতা দেখে এত আনন্দ কখনো হয়নি।
এবারের প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় নড়াইল জেলাসহ আশেপাশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা ৪ টি নৌকা। প্রতিটি দলে ছিল ৩০-৪০ জন মাঝি যারা সম্মিলিতভাবে নৌকা চালিয়ে প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহন করেন।
নৌকা বাইচের সঙ্গে গ্রামীণ মেলার আয়োজনও ছিল। মেলায় ছিল হাওয়াই মিঠাই, মাটির তৈরি পুতুল, খেলনার দোকান, পিঠা-পুলি, বাঁশি ও ঢোলের মধুর সুর। প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার হাতে তুলে দেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. আহাদুজ্জামান বাটু ও সাধারণ সম্পাদক কাজী সুলতানুজ্জামান সেলিম।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh