চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের জুলাই শহীদদের চেতনা উপেক্ষা করে একটি দল শেখ হাসিনার সংবিধান অক্ষত রেখে সংস্কারের বিরোধিতা করে জাতির সঙ্গে প্রতারণা করছেন বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বেলাল।
রোববার (৫ অক্টোবর) দুপুরে রংপুর টাউন হল অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ মন্তব্য করেন। আন্তর্জাতিক শিক্ষক দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশন রংপুর জেলা ও মহানগর শাখা এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
অধ্যাপক মাহবুবুর বেলাল বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের পর আমরা আশা করেছিলাম দুঃশাসনের অবসান ঘটবে এবং একটি কল্যাণরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হবে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে দেখা যাচ্ছে, দীর্ঘদিনের ফ্যাসিবাদী শাসনের ক্ষতচিহ্ন টিকিয়ে রাখতে একটি বিশেষ দল কাজ করছে। তাদের কোনো অনুশোচনা নেই। শেখ হাসিনার সংবিধান অক্ষত রেখে তারা পুরনো স্বৈরতন্ত্রের ধারাকে বহাল রাখতে চাইছে যা জাতির সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা।
তিনি আরও বলেন, যদি শিক্ষা, নির্বাচন ও বিচার ব্যবস্থায় সংস্কার না হয়, তবে শহীদদের আত্মদান বৃথা যাবে। এই সিস্টেম টিকিয়ে রাখলে দেশে কোনো নির্বাচনই কার্যকর হবে না। আমরা এই দেশে নতুন চোর, নতুন ডাকাত বা নতুন সন্ত্রাস প্রতিষ্ঠিত হতে দেব না।
শিক্ষকদের দূরাবস্থার প্রসঙ্গে অধ্যাপক বেলাল বলেন, বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষকদের হাসির পাত্র বানানো হয়েছে। যখন একজন শিক্ষক বাড়ি ভাড়া পান মাত্র ১৫০০ টাকা, চিকিৎসা ভাতা ৭০০ টাকা তখন সেটি সম্মান নয়, অপমান। শিক্ষকদের যে বেতন-ভাতা দেওয়া হয় তা সম্মানি নয়, বরং অসম্মানি। বেসরকারি শিক্ষকদের পেনশন পেতে ৩ বছর অপেক্ষা করতে হয় এটি শিক্ষাব্যবস্থার প্রতি রাষ্ট্রের অবহেলার।
তিনি আরও বলেন, আজ দরকার সংস্কারকৃত একটি রাষ্ট্রব্যবস্থা, যেখানে সংসদ, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী নিজেদের সীমার মধ্যে থেকে কাজ করবেন এবং বিচারব্যবস্থা স্বাধীনভাবে পরিচালিত হবে। শহীদদের স্বপ্ন পূরণে এর কোনো বিকল্প নেই।
ফেডারেশনের রংপুর মহানগর শাখার সভাপতি গোলাম মোস্তফার সভাপতিত্বে এবং মশিউর রহমান ও শাহ মুহাম্মদ হাফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেনন, ফেডারেশনের রংপুর মহানগরীর উপদেষ্টা ও বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ উপাধ্যক্ষ এটিএম আযম খান, জেলা শাখার উপদেষ্টা মাওলানা এনামুল হক, মহানগর শাখার কেএম আনোয়ারুল হক কাজল, অধ্যাপক রায়হান সিরাজী, আলামিন হাসান, অ্যাডভোকেট কাউসার আলী প্রমুখ।