নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় দুই ভাইয়ের সম্পত্তি বিরোধকে কেন্দ্র করে মায়ের লাশ দাফনে বাধা দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। প্রায় ২০ ঘণ্টা লাশ দাফন বিলম্বের পর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রুবাইয়া বিনতে কাশেমের হস্তক্ষেপে অবশেষে ওই নারীর দাফন সম্পন্ন হয়।
বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) সকালে উপজেলার সিরাজপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের শাহজাদপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্য ও নিন্দার ঝড় উঠেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শাহজাদপুর গ্রামের মৃত মাওলানা সেলামত উল্ল্যাহর স্ত্রী আমেনা বেগম (৬৫) গতকাল বুধবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে তার মেয়ের বাড়িতে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর পর স্বামীর কবরের পাশে দাফনের জন্য মরদেহ নিজ বাড়িতে আনা হয়।
কিন্তু দাফনের প্রস্তুতির সময় দুই ছেলে নজিব উল্ল্যাহ ও সাইফুল্লাহর মধ্যে দীর্ঘদিনের সম্পত্তি বিরোধ নিয়ে তর্ক-বিতর্ক শুরু হয়। এক পর্যায়ে তারা মারামারিতে জড়িয়ে পড়ে এবং মায়ের লাশ দাফনে বাধা দেয়।
এলাকার লোকজন বহুবার অনুরোধ করেও তাদের থামাতে ব্যর্থ হন। পরে খবর পেয়ে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রুবাইয়া বিনতে কাশেম ঘটনাস্থলে গিয়ে দুই ভাইকে সমঝোতায় আনেন। তার হস্তক্ষেপে বৃহস্পতিবার দুপুর ২টার দিকে আমেনা বেগমের দাফন সম্পন্ন হয়।
স্থানীয় মাওলানা বিল্লাহ বলেন, মাওলানা সেলামত উল্ল্যাহ অনেক ভালো মানুষ ছিলেন। তার দুই ছেলে এমন মর্মান্তিক ঘটনা ঘটাবে তা আমরা কল্পনাও করি নাই। মূলত নজিব উল্ল্যাহ ও সাইফুল্লাহর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে জমি নিয়ে বিরোধ চলছে। একাধিকবার মীমাংসার চেষ্টা হলেও সমাধান না হওয়ায় এমন দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছে।
মৃতের বড় ছেলে নজিব উল্ল্যাহ বলেন, আমি মায়ের নামে ২২ শতাংশ সম্পত্তি ক্রয় করি। মায়ের সম্পত্তিতে যেন আমরা সবাই হকদার হই। কিন্তু আমার ছোট ভাই সাইফুল্লাহ ও বোনরা মিলে মায়ের কাছ থেকে কৌশলে সম্পত্তি লিখে নিয়ে যায়। তাই আমি প্রতিবাদ করেছি। যেন দাফনের আগে কৌশলে নিয়ে যাওয়া সম্পত্তির হিসাব হয়। যার কারণে মায়ের দাফন বিলম্বিত হয়েছে।
এ বিষয়ে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রুবাইয়া বিনতে কাশেম বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দুই পক্ষকে সমঝোতায় এনেছি। পরে দুপুর ২টায় ওই নারীর দাফনের ব্যবস্থা করা হয়।