রংপুরে অ্যানথ্রাক্স সংক্রমণ প্রতিরোধে ছাড়পত্র ছাড়া গবাদি পশু জবাইয়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে গঙ্গাচড়া উপজেলা প্রশাসন। গঙ্গাচড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদুুল হাসান মৃধা বুধবার (১৫ অক্টোবর) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে তিনি এ নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। ইউএনও জানান, রংপুর জেলার বিভিন্ন স্থানে গবাদিপশুর মধ্যে অ্যানথ্রাক্সের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। এটি পশু থেকে মানুষের দেহে সংক্রমিত হতে পারে এমন শঙ্কায়, সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে গঙ্গাচড়া উপজেলায় মাংস ব্যবসায়ীদের জন্য একটি নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর বা ভেটেরিনারি হাসপাতালের ছাড়পত্র ব্যতীত কোনো পশু জবাই করা যাবে না। ইউএনও মাহমুদুল হাসান মৃধা আরও বলেন, ছাড়পত্র ছাড়া পশু জবাই করলে প্রমাণ সাপেক্ষে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে রংপুর নগরীর মেডিকেল পূর্বগেট, ধাপ, লালকুঠির মোড়. সিটি বাজার, বাস টার্মিনালসহ বিভিন্ন স্থানে গরুর গোস্তের দোকানে টাঙ্গানো হয়েছে পরীক্ষার রিপোর্ট। টেস্ট রিপোর্ট না থাকলে গরুর গোস্ত কিনছেন না ক্রেতারা। এছাড়াও যেসব গরু যেদিন জবাই হবে সেগুলো আগের রাতেই প্রাথমিকভাবে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখেন রংপুর প্রাণী সম্পদ অফিসের প্রতিনিধি। তারপর পরেরদিন ছাড়পত্র নিয়ে সেই উত্তীর্ণকৃত গরু জবাই করা হয়।
স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, রংপুর জেলার পীরগাছা, কাউনিয়া ও মিঠাপুকুর উপজেলায় অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গ রয়েছে এমন ৫৩ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গ নিয়ে ২ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। যারা অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, রংপুরে যে অ্যানথ্রাক্স ছড়িয়েছে তা ‘কিউটেনিয়াস অ্যানথ্রাক্স’, যা ত্বকে সংক্রমণ ঘটায়। এটি মানুষ থেকে মানুষে ছড়ায় না, ফলে এটি অত্যন্ত সংক্রামক না হলেও সতর্কতা অবলম্বন জরুরি।
রংপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আবু ছাইদ জানান, অ্যানথ্রাক্স প্রতিরোধে ইতিমধ্যে জেলার পীরগাছা, কাউনিয়া, মিঠাপুকুর ও রংপুর সদরে গবাদিপশুকে অ্যানথ্রাক্স প্রতিরোধী টিকা দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও গরু জবাইয়ের পূর্বে গরুগুলো পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হচ্ছে। যাতে কোথাও অসুস্থ গরু জবাই না হয়। অ্যানথ্রাক্স এর বিষয়টি মাথায় রেখে পরিকল্পনা করে কাজ করা হচ্ছে।