মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুম শিকদারের ওপর হামলার অভিযোগে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলার বলড়া ইউনিয়নের বহলাতলী বাজারে গতকাল মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) রাত ১০টার দিকে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে এবং রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা জল্পনা শুরু হয়েছে- এটি কি দলীয় কোন্দল, নাকি পরিকল্পিত কোনো ষড়যন্ত্র? আহত মাসুম শিকদার বর্তমানে হরিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।
তিনি অভিযোগ করে বলেন“বহলাতলী বাজারে গেলে শাহিন মৃধার অনুসারী বাকের ও আলভীসহ ১৫-২০ জন আমার ওপর হামলা চালায়। তারা লাঠি দিয়ে আমাকে এলোপাতাড়ি পেটায়। তাদের কাছে দেশি অস্ত্রও ছিল।”
মাসুম দাবি করেন, তাকে একা পেয়ে পরিকল্পিতভাবে হামলা চালানো হয়। তিনি আরও বলেন, “দলকে অস্থিতিশীল করতে একটি মহল এ ঘটনার পেছনে ষড়যন্ত্র করছে।”
হরিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. পলাশ চন্দ্র সূত্রধর জানান,“মাসুম শিকদারের মুখ ও পিঠে আঘাত লেগেছে। মুখ ফুলে গেছে এবং শরীরে একাধিক জায়গায় জখম রয়েছে।”তবে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন উপজেলা বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম রসূল শাহিন মৃধা।
তিনি বলেন “মাসুমের সঙ্গে জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক শান্ত মিয়ার প্রায় ৫০ জন লোক বহলাতলী বাজারে আসে। আমাদের কেউ হামলা করেনি; বরং আত্মরক্ষার চেষ্টা করেছে। তাদের আনা অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা, রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, হামলার ঘটনায় অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন, লুৎফর রহমান লিংকন (সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক, ছাত্রদল), বাকের বিশ্বাস, সৌরভ মির্ধা, লিমন শেখ ও আলভি বিশ্বাস (বলড়া ইউনিয়ন ছাত্রদল)।
হরিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মুজিবুর রহমান বলেন,“আমরা ঘটনাটি জানার পরপরই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। তবে এ বিষয়ে এখনও কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তদন্ত চলছে।”
হরিরামপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল হান্নান মৃধা বলেন,“বহলাতলী বাজারে মারামারির একটি ঘটনা ঘটেছে বলে শুনেছি। সংগঠনের ভেতরে সহিংসতার কোনো স্থান নেই। যদি কেউ এমন কাজে জড়িত থাকে, প্রমাণ পেলে দলীয় শৃঙ্খলা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
দলীয় সূত্র জানায়, বিএনপি অতীতেও সহিংসতা, শৃঙ্খলাভঙ্গ ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিয়েছে। এই ঘটনারও দ্রুত তদন্ত ও দোষীদের বহিষ্কারের দাবি তুলেছেন স্থানীয় নেতারা। স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন- “বিএনপি একটি গণতান্ত্রিক ও শৃঙ্খলাবদ্ধ দল। সন্ত্রাস ও সহিংসতার সঙ্গে কারও কোনো সম্পর্ক থাকতে পারে না। দোষীদের বিরুদ্ধে দ্রুত সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে হবে।”
তারা আরও বলেন “সন্ত্রাসীদের ঠাঁই হরিরামপুরে হবে না। দলের ভাবমূর্তি রক্ষায় এবং ন্যায়বিচারের স্বার্থে আমরা দোষীদের শাস্তি চাই।” স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, হরিরামপুর বিএনপির অভ্যন্তরীণ গ্রুপিং ও দীর্ঘদিনের কোন্দলই এই ঘটনার সূত্র হতে পারে। তবে অনেকেই বলছেন, এটি হতে পারে বহিরাগত ষড়যন্ত্রের অংশ, যার উদ্দেশ্য দলের ভেতরে বিভাজন সৃষ্টি করা।
একজন সিনিয়র নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন,“দলকে দুর্বল করার জন্য ভেতরে-বাইরে কিছু মহল সক্রিয়। এ ঘটনার পেছনে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের গন্ধও পাওয়া যাচ্ছে।”
এ ঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি। তবে প্রশাসন জানিয়েছে, অভিযোগ পেলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ঘটনার পর থেকে এলাকায় পুলিশের নজরদারি বাড়ানো হয়েছে এবং পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে আছে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh