দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির ভূগর্ভ থেকে কয়লা উত্তোলনের ফলে খনি এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামবাসীদের ৪ দফা দাবিতে বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সকাল ১১টায় সংবাদ সম্মেলন করেছেন ক্ষতিগ্রস্তরা।
চারদফা দাবির মধ্যে রয়েছে, ক্ষতিপূরণ প্রদানসহ ফাটল ধরা ঘরবাড়ী ও দেবে যাওয়া জায়গা জমি সু-ব্যবস্থা করা, গ্রামে পাকা রাস্তা নির্মাণ করা, বিশুদ্ধ পানীয় জলের ব্যবস্থা করা এবং ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার বেকার ছেলেমেয়েদেরকে কয়লাখনিতে চাকরির ব্যবস্থা করা।
ক্ষতিগ্রস্তদের সংগঠন বসত বাড়ী রক্ষা কমিটির ব্যানারে খনি সংলগ্ন পাতরাপাড়া গ্রামে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সভাপতি নূর মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন ও বড়পুকুরিয়া স্কুল এন্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হেলেনা খানম।
তারা বলেন, বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি পাথরাপাড়া গ্রামের অনধিগ্রহণকৃত জায়গা থেকে কয়লা উত্তোলনের ফলে এলাকার ঘরবাড়ী ফাঁটল ধরাসহ হেলে দুলে পড়ছে। আবাদি জমি, রাস্তাঘাট দেবে যাচ্ছে। ভূগর্ভে কয়লা উত্তোলনের পূর্বে ডিনা মাইট বিষ্ফোরণের শব্দে ঘরবাড়ীতে কম্পন হওয়ায় ঘরবাড়ী ভেঙ্গে পড়তে পারে এমন আশঙ্কায় এলাকাবাসী পরিবার পরিজন নিয়ে ঘরের বাইরে অবস্থান করতে বাধ্য হচ্ছে। । যেকোন মুহূর্তে ঘরবাড়ী ভেঙ্গে পড়াসহ বিভিন্ন স্থাপনা দেবে তলিয়ে যেতে পারে। বিষয়গুলো খনি কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হলে, তারা এলাকায় নামমাত্র কিছু এলাকায় জরিপ চালিয়ে কিছু ফাটল ধরা ঘরবাড়ীর ক্ষতিপূরণ দিয়েছেন।
তারা আরও বলেন, ইতোমধ্যে কয়লাখনির পূর্বাংশে পাথরাপাড়া গ্রামের বিভিন্ন এলাকার এক থেকে দেড় ফুট দেবে গেছে। তবে গ্রামের পশ্চিমাংসে জায়গাটি ৩০ থেকে ৩৫ ফুট তলিয়ে গেছে। এসব দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে এলাকাবাসীর। কখন কোন দুর্ঘটনা ঘটে যায় তা কেউ বলতে পারবে না। এসব বিষয় নিয়ে খনি কর্তৃপক্ষসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে লিখিতভাবে জানানোর পরও কেউ এ বিষয়ে কর্ণপাত করছেন না।
তারা বলেন, তাদের চার দফা দাবি দ্রুত সময়ের মধ্যে পূরণ করা না হলে আগামীতে কঠোর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে। এতে কয়লাখনির উৎপাদন ও উন্নয়ন কাজ বাধাগ্রস্ত হলে এর দায়দায়িত্ব খনি কর্তৃপক্ষকে নিতে হবে। এ সময় কয়লাখনি সংলগ্ন ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত নারী ও পুরুষরা উপস্থিত ছিলেন।
এ ব্যাপারে বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানী লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু তালেব ফরাজীকে মুঠোফোনে বলেন, গ্রামবাসীর দাবিগুলো নিয়ে কমিটি কাজ করছে। কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া পাতরাপাড়া গ্রামের রাস্তা নির্মাণের জন্য এলজিইডিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। দ্রুত রাস্তার কাজ শুরু করবে এলজিইডি।