সিরাজগঞ্জের চলনবিলে এবার বিভিন্ন প্রজাতির মাছের সংকট দেখা দিয়েছে। এতে শুঁটকি শিল্প পল্লীতে শুটকি মাছ উৎপাদনে হুমকির মুখে পড়েছে। শুঁটকি চাতালের অনেক শ্রমিকের বেকার হওয়ার আশংকা রয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, এ অঞ্চলের প্রায় ২৩টি জলাশয় ও ১৬টি নদীর সমন্বয়ে দেশের বৃহত্তম এ চলনবিলের অবস্থান। এ চলনবিল ঘিরে সিরাজগঞ্জ, নাটোর, পাবনা ও বগুড়া জেলার ১২টি উপজেলার বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠা শুটকি শিল্প পল্লীতে বিপুল সংখ্যক নারী-পুরুষের কর্মসংস্থান হয়ে থাকে। এসব শুটকি চাতালে ভোর থেকেই শত শত নারী-পুরুষ মাছে লবণ মাখানো, উল্টে-পাল্টে দেওয়া, শুকানো, বাছাইসহ নানা কাজে ব্যস্ত থাকেন।
চাতালগুলোতে দেশী প্রজাতির রুই, কাতলা, পাবদা, পুঁটি, চিতল, মাগুর, শিং, কৈ, বাঘাইড়, বোয়াল, গজার ও টেংরা মাছ শুটকি করা হয়। এ বছর এসব মাছের সংকট দেখা দেওয়ায় নানা রকমের শুটকি উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। স্থানীয়রা বলছেন, এ চলনবিল অঞ্চলের উৎপাদিত শুঁটকি খেতে খুবই সুস্বাদু। স্থানীয় চাহিদা মেটানোর পর শুটকি পল্লী থেকে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শুটকি সরবরাহ করা হয়। তবে এ বছর সরবরাহ অনেকটাই হ্রাস পেয়েছে। গত বছর চলনবিলে প্রায় ৮’শ টন শুঁটকি উৎপাদন করা হয়েছিল; এ বছর লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ হাজার টন।শুঁটকির ব্যবসায়ীরা বলছেন, প্রতিদিন একটি শুঁটকির চাতালে ৩’শ মণ মাছের চাহিদা রয়েছে। কিন্তু স্থানীয় বাজার ও মৎস্য আড়ত ঘুরে ৪০-৫০ মণের বেশি মাছ পাওয়া যাচ্ছে না। এ কারণে শুঁটকি উৎপাদন চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। ইতিমধ্যেই অনেক চাতাল বন্ধ হয়ে গেছে এবং মাছের অভাবে ব্যবসা গুটিয়ে অনেকে চলে গেছেন। এতে শুটকি কাজে জড়িত অনেক শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছেন।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন চলনবিলে শুঁটকির কদর দেশ-বিদেশেও রয়েছে। তবে মা মাছ নিধন, কীটনাশক ব্যবহার ও প্রজনন ক্ষেত্র ধ্বংস হওয়ায় এ বিলে মাছের উৎপাদন প্রতি বছর কমে যাচ্ছে। এ বিলে এবার আরো সংকট বেড়েছে। মাছ সংকটের কারণে উৎপাদনও কম হচ্ছে। উপজেলা প্রশাসনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী এলাকাবাসীর।