রংপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালত চত্বরে গেলেই নজর কাড়বে বিভিন্ন ধরনের যানবাহন। প্রথম দেখায় মনে হতে পারে এসব প্রদর্শনীর জন্য রাখা হয়েছে। কিন্তু নানা, মামলা সংক্রান্ত জটিলতায় আদালত চত্বরে স্তুপ হয়ে আছে মোটরসাইকেল, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস, পিকআপ ভ্যান ও ট্রাকসহ অসংখ্য অবৈধ বাহন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এসব অবৈধ যানবাহনের বেশিরভাগ মাদক বিরোধী অভিযানে জব্দ করা। এছাড়া রয়েছে নিবন্ধনহীন বৈধ কাগজপত্র ছাড়া আটক হওয়া গাড়িও। মামলা সংক্রান্ত জটিলতায় আদালত চত্বরের মতোই বেশ কিছু বাহন কয়েকটি থানাতেও পড়ে আছে। দীর্ঘদিন পড়ে থাকতে থাকতে এসব যানবাহন মরিচা পড়েছে। খোলা আকাশের নিচে পরিত্যক্ত যানবাহনের ভাগাড়ে পরিণত এসব বাহন এখন ধ্বংসের পথে।
রংপুর মেট্রোপলিটনের ছয়টি থানা ও আদালত প্রাঙ্গণ মিলে জব্দ করা এমন যানবাহনের সংখ্যা প্রায় ৬০০। এর মধ্যে কোতোয়ালি থানা, পরশুরাম থানা ও আদালত প্রাঙ্গণে বছরের পর বছর ধরে পড়ে আছে বহু যানবাহন।
জানা গেছে, মাদকসহ বিভিন্ন অপরাধে মামলার আলামত হিসেবে এসব যান জব্দ করা হয়। এছাড়া চোরাই ও কাগজপত্রবিহীন যানবাহনও রয়েছে। জব্দ হওয়ার পর এসব যানের মালিকরা আইনি জটিলতায় আর ছাড়িয়ে নিতে পারেননি।
পুলিশ বলছে, এসব মামলা নিষ্পত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে রংপুর মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার মারুফ আহমেদ বলেন, যে সম্পদগুলো রয়েছে সেগুলো যাতে নষ্ট না হয় আমরা সে ব্যাপারে কথা বলছি। আদালতের সাথে কথা বলে দ্রুত যাতে মামলা নিষ্পত্তি করে নিলামে দেয়া যায় সে ব্যাপারে কথা বলছি। আশা করছি দ্রুত আদালত এগুলো ব্যবস্থা নিবে।
তিনি আরও বলেন, থানার আশপাশে পর্যাপ্ত জায়াগার সঙ্কট রয়েছে। ঝড়-বৃষ্টিসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগে খোলা জায়গায় থাকা এসব বাহনের মালামালগুলো নষ্ট হওয়ার উপক্রম।
অন্যদিকে আইনজীবীরা বলছেন, দ্রুত মামলা নিষ্পত্তি করে এসব যানবাহন নিলামে বিক্রির উদ্যোগ নেয়া জরুরি। এতে রাষ্ট্রীয় কোষাগার কিছুটা হলেও লাভবান হবে।
রংপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালত পাবলিক প্রসিকিউটর মো. আফতাব উদ্দিন বলেন, যতক্ষণ পযর্ন্ত এই মামলাটা শেষ হবে না ততক্ষণ পযর্ন্ত এই অবস্থায় যানবাহনগুলো খোলা আকাশের নিচে এভাবে পড়ে থাকবে। যতক্ষণ পযর্ন্ত মামলা নিষ্পত্তি না হয় ততক্ষণ পযর্ন্ত নিলামে কিংবা মালিককেও ফেরত দেওয়া যাবে না। একমাত্র উপায় হলো মামলা মোকদ্দমাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তি করা। এটি যত দ্রুত করা সম্ভব হবে ততোই ভালো।