ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের নিরাপত্তার জন্য স্থাপিত বিশেষ সিসি ক্যামেরা পরিচালনার ব্যাটারি ও ইউপিএস চুরির ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় পুলিশের অভিযানে ৫ জন চোরচক্রের সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ সময় উদ্ধার করা হয়েছে ১১টি ব্যাটারি ও ১টি ইউপিএস, যার আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা।
শ্রীনগর থানার আওতাধীন কেওয়াটখালী, শোলঘর ও বেজগাঁও এলাকায় এই চুরির ঘটনাটি ঘটে। অজ্ঞাত চোরেরা পদ্মা সেতু সংলগ্ন আইটিএস-২১ থেকে আইটিএস-২৫ পর্যন্ত ছয়টি পয়েন্টে স্থাপিত লোহার খাঁচা ভেঙে মোট ১৮টি ব্যাটারি ও ইউপিএস চুরি করে নিয়ে যায়। এসব ব্যাটারির আনুমানিক মূল্য ৯ লাখ টাকা।
এ ঘটনায় শ্রীনগর থানায় মামলা নং ১৫, তারিখ ০৮/১০/২০২৫; ধারা ৩৭৯ পেনাল কোডে মামলা দায়ের হয়। মামলার তদন্তে পুলিশ সুপার মো. শামসুল আলম সরকার-এর দিকনির্দেশনায় জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) একটি বিশেষ টিম প্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যের সহায়তায় অভিযান পরিচালনা করে।
ডিবির আভিযানিক টিম গত ১৮ অক্টোবর বিকেল ৩টার দিকে সিরাজদিখান থানার চালতিপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রথমে চোরচক্রের সদস্য মো. ইব্রাহীম ওরফে কুট্টি ওরফে রাজা (৩০)-কে গ্রেপ্তার করে। তার কাছ থেকে চুরির সময় পরিহিত পোশাকসহ কিছু আলামত উদ্ধার করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায়, চুরি করা ব্যাটারি ও ইউপিএস সে বিক্রি করেছে স্থানীয় ভাঙারি দোকানদার মো. জনি শেখ (২৯)-এর কাছে। পরে জনি শেখের দোকানে অভিযান চালিয়ে ১টি ইউপিএস উদ্ধার করা হয়। তার স্বীকারোক্তিতে জানা যায়, বাকি ব্যাটারিগুলো বিক্রি করা হয়েছে মো. শহিদ (৫০) ও মো. আব্দুস সালাম (৩৫)-এর কাছে।
তাদের দেওয়া তথ্যে ডিবি পুলিশ দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ ও কদমতলীতে অভিযান চালিয়ে “মিলন এন্টারপ্রাইজ” নামের ভাঙারি দোকানের মালিক মো. মিলন শেখকে (৪০) গ্রেপ্তার করে। তার গোডাউন থেকে ১১টি ঊঅএখঊ ব্র্যান্ডের ইউপিএস ব্যাটারি উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা হলেন: ১️ মো. ইব্রাহীম ওরফে কুট্টি ওরফে রাজা (৩০) সিরাজদি খান, মুন্সীগঞ্জ ২️ মো. জনি শেখ (২৯) বরই হাজী, সিরাজদিখান, মুন্সীগঞ্জ ৩️ মো. শহিদ (৫০) - দোহার, ঢাকা / বর্তমানে দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ ৪️ মো. আব্দুস সালাম (৩৫) পিরোজপুর / বর্তমানে কদমতলী, ঢাকা ৫️ মো. মিলন শেখ (৪০) সিরাজদিখান / বর্তমানে রসূলবাগ, কদমতলী, ঢাকা উদ্ধারকৃত আলামত হিসেবে পুলিশ পেয়েছে - ১টি কালো রঙের ঊঅএখঊ ইউপিএস (মূল্য আনুমানিক ৫০,০০০ টাকা) ১১টি কালো রঙের ঊঅএখঊ ব্র্যান্ড ব্যাটারি (মূল্য আনুমানিক ৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা)
গোয়েন্দা সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, চোরচক্রের মূল উদ্দেশ্য ছিল এক্সপ্রেসওয়ের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে স্থাপিত সিসি ক্যামেরা অচল করে দেওয়া, যাতে অপরাধীরা নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারে।
জেলা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, চুরির ঘটনায় জড়িত অন্যান্য সহযোগীদেরও শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।