ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে মেঘনা নদীর ভাঙনে দিশেহারা কয়েকশত পরিবার। উপজেলার পানিশ্বর ইউনিয়নের প্রায় ৩ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে মেঘনা নদীর ভাঙ্গনের কবলে রয়েছে। মেঘনা নদীর তীরে বিশাল এই ভাঙনে জনমনে আতঙ্ক বিরাজ করছে। নদী ভাঙনরোধে স্থায়ী বেড়িবাঁধের দাবি করে আসছে এলাকাবাসী।
সরেজমিনে দেখা গেছে, মেঘনা নদীর পূর্ব পাড়ে পানিশ্বর ইউনিয়নের পালপাড়া, সাখাইতি ও লায়ার হাটি গ্রামের ঘরবাড়ি, মসজিদ ও চাতালকল সহ বিভিন্ন স্থাপনা ধসে পড়ে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। নদী ভাঙনের কবলে থাকা কয়েকশত পরিবার আতঙ্কে দিনযাপন করছেন। শাখাইতি গ্রামের ওসমান গণি ও পালপাড়ার বাসিন্দা সুধীর পাল, উষা রানী পাল, গীতা রানী পাল ও পুষ্প রানী পাল জানান, আমরা ছোটবেলা থেকে দেখে আসছি প্রতিবছর মেঘনা নদীর পানির ঢেউয়ে ভেঙ্গে যাওয়া ৪টি গ্রামের অধিকাংশ ঘরবাড়ি ও ফসলী জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এখন আমরা সব সময় আতঙ্কে থাকি। মেঘনার বামতীরে প্রতিরক্ষা বেড়িবাঁধ না হলে যেকোনো সময় আমাদের গ্রামের বাড়ি-ঘর সহ বাকি অংশটুকু নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে।
এ ব্যপারে পানিশ্বর ইউপিচেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান মিস্টার বলেন, সরাইল উপজেলার পানিশ্বর ইউনিয়নের পালপাড়া, শাখাইতি, শোলাবাড়ি, দেওবাড়িয়া গ্রামের হাজারো পরিবার নদী ভাঙনের কবলে। ৪টি গ্রাম হুমকির মুখে। এই এলাকায় অর্ধশত চাতালমিল রয়েছে। বিগত দিনে প্রায় ২০টি চাতালকল ও শতাধিক ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য কর্তৃপক্ষের নিকট দাবী করছি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের সরাইল শাখার উপ-সহকারি প্রকৌশলী মহসিন কবির শিহাব বলেন, মেঘনা নদী ভাঙন রোধে সরাইল পানিশ্বর এলাকায় স্থায়ী ভাবে মেঘনার বামতীরে প্রতিরক্ষা বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ে একটি প্রকল্পের আবেদন করা হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে মেঘনার ভাঙন প্রতিরোধ করার জন্য কিছু জিও ব্যাগ দেওয়া হয়েছিল।
সরাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মোশারফ হোসাইন বলেন, পানিশ্বর এলাকার নদী ভাঙন সরেজমিনে দেখে আসছি। অস্থায়ীভাবে মেঘনার ভাঙন প্রতিরোধ করার জন্য জিও ব্যাগের পাশাপাশি সরাইল উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে নগদ টাকা অনুদান দেয়া হয়েছে এবং পানিশ্বর এলাকায় নদী ভাঙন প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করা হয়েছে।