× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

সোহাগীর চিকিৎসায় দরকার ৪ লাখ টাকা

সাইফুর রহমান শামীম, কুড়িগ্রাম

২৮ অক্টোবর ২০২৫, ১২:২২ পিএম

‘‘ক্যান্সার শোনার পর আমার খুব ভয় লাগছিল, আমি বোধহয় আর বাঁচতে পারবো না। আমি মরে যাবো হয়তো। আমার হয়তো হায়াৎ শেষ হয়ে গেছে। আমার হয়তো আর বেঁচে থাকা হবে না। কিন্তু তারপরও আল্লাহ তালার কৃপায়, আমার বাবা-মায়ের দোয়া, গ্রামবাসীর দোয়া, আল্লাহতারার চাওয়ায় আমি বেঁচে আছি। আমি আরও বেঁচে থাকতে চাই। আপনারা দোয়া করবেন আমি যেন বেঁচে থাকতে পারি।’’ এ কথাগুলো কুড়িগ্রামের সদর উপজেলার ঘোগাদহ ইউনিয়নের ভেলারভিটা গ্রামের ১৫ বছর বয়সি কিশোরী সোহাগীর। মরণব্যাধী ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার পর নির্বাক হয়ে গেছে মেয়েটি। অথচ এই বয়সে তার ছুটোছুটি করার কথা, হৈ-চৈ করে সহপাঠীদের সাথে গালগল্পে মেতে সময় কাটানোর কথা; সেই বয়সে বিষন্ন চোখেমুখে শূন্য দৃষ্টিতে ঘরে বসে আছে সোহাগী। মরণব্যাধী ক্যান্সার তার বেঁচে থাকার সকল স্বপ্নকে আজ প্রশ্নবিদ্ধ করে রেখেছে। 

কিশোরী সোহাগী আরও জানায়, ‘‘পড়ালেখা চলাকালীন আমার অসুখটা ধরা পরে। আমি আর পাঁচটা মেয়ের মতোন বাঁচতে চাই। পড়ালেখা করতে চাই। আপনারা সাহায্য করলে আমি পড়ালেখাটা করতে পারবো। আমার চিকিৎসাটা যেন হয়। আমি যেন বেঁচে থাকতে পারি। আর পাঁচটা মেয়ের মতো আমি যেন পৃথিবীর আলো দেখতে পারি।’’

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ঘোগাদহ ইউনিয়নের ভেলারভিটা গ্রামের গার্মেন্টস কর্মী হাজের আলী ও সজিনা বেগমের দুই ছেলেমেয়ের মধ্যে ছোট মেয়ে হালিমা আক্তার সোহাগী। গত ৫মাস পূর্বে তার শরীরে ক্যান্সার আক্রান্তের বিষয়টি ধরা পরে। হতদরিদ্র হাজের আলী পার্শ্ববর্তী যাত্রাপুর ইউনিয়নের জালিরচরে বসবাস করতেন। ১৭ বছর পূর্বে বসতভিটা নদী ভাঙনে বিলীন হওয়ায় ঘোগাদহে চলে আসেন। এখানে এক আত্মীয়ের জমিতে আশ্রয় নিয়েছেন। কিন্তু এখানে কাজের সুযোগ কম থাকায় ছেলেমেয়েকে নিয়ে ৭ বছর পূর্বে ঢাকার আশুলিয়া জামগড়া এলাকায় চলে যান। সেখানে বাসা ভাড়া নিয়ে গার্মেন্টসে চাকুরী নেন এই দম্পতি। সেখানে হাজী লিয়াকত মীর একাডেমিতে ভর্তি করা হয় সোহাগীকে। ৪র্থ শ্রেণিতে ফাইনাল পরীক্ষার পর ৩ থেকে ৪ মাসের মধ্যে ডান গলায় ও থুতুনীর নীচে প্রচন্ড চুলকানী ও ব্যাথা পাওয়ায় চিকিৎসকের স্মরণাপন্ন হন। সেখানে ক্যান্সারের আলামত পাওয়ায় হতাশ হয়ে পরেন এই দম্পতি। চিকিৎসা ব্যয় বেশী হওয়ায় হাজের আলী ৩মাস পূর্বে গার্মেন্টেস’র চাকুরী ছেড়ে দিয়ে মেয়েসহ কুড়িগ্রামে ফেরত আসেন। তিনি বর্তমানে দিনমজুরের কাজ করছেন এবং স্ত্রী সজিনা বেগম আশুলিয়ায় গার্মেন্টস’র চাকুরিটা চালিয়ে যান। কুড়িগ্রামে এসে মেয়েকে পুনরায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ক্যান্সারের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়। এরপর চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী মেয়েকে কেমোথেরাপি দেওয়া হয়। এখন পর্যন্ত ৪টি কেমো দেওয়া হয়েছে। আরও ২টি কেমোথেরাপিসহ রেডিওথেরাপি দিতে হবে। এছাড়াও রয়েছে ঔষধপত্রের খরচ। ইতিমধ্যে নিজেদের জমানো ও বিভিন্নজনের কাছে সহযোগিতা এবং ধারদেনা করে দেড় লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এখনো আরও ৪ লাখের উপরে খরচ লাগতে পারে কিন্তু দরিদ্র এই পরিবারের পক্ষে সেই অর্থ সংগ্রহ করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে সকলের কাছে আর্থিক সহযোগিতা চেয়েছেন এই পরিবারটিসহ এলাকার লোকজন।

সোহাগীর মা সজিনা বেগম জানান, ‘‘মেয়ের চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন জায়গায় গিয়েছি। যা টাকা ছিল সব শেষ। এখন আরও ৩ লাখ টাকার মত লাগছে। আমার আর স্বামীর পক্ষে মেয়ের চিকিৎসা চালিয়ে নিয়ে যাওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা অসহায় হয়ে গেছি।’’

সোহাগীল বাবা হাজের আলী জানান, ‘‘যাত্রাপুরে নদী ভাঙনের পর আমি ঘোগাদহে এক আত্মীয়ের বাড়ীতে একটু জায়গা নিয়ে আশ্রয় নিয়েছি। আমার মেয়ের ক্যান্সার ধরা পরেছে। মেয়েকে বাঁচাতে অনেক অর্থের প্রয়োজন আমি আপনাদের কাছে সহযোগিতা চাই।’’

বিষয়টি নিয়ে ঘোগাদহ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক সরকার জানান, ‘‘অল্প বয়সে মেয়েটি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছে। পরিবারের পক্ষে চিকিৎসা ব্যয় মেটানো সম্ভব নয়। ইতিমধ্যে বিভিন্ন দানশীল ব্যাক্তির মাধ্যমে এ পর্যন্ত চিকিৎসা চলছে। বাংলাদেশের যে সমস্ত ব্যক্তিরা বিদেশে আছে, দেশসহ সকল বিদেশী দানশীল ব্যক্তিকে সহযোগিতা করার জন্য অনুরোধ করছি।’’


Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.