বান্দরবানের রুমা উপজেলায় জেলা পরিষদের অর্থায়নে অর্থবছর ২০১৮-২০১৯ইং-এ সংস্কারকাজ করা একমাত্র লেক ভিউ রিসোর্টটি বর্তমানে অযত্নে-অবহেলায় পড়ে রয়েছে। রুমা বাজার থেকে মাত্র এক কিলোমিটার দূরে থানাপাড়া লেকের মনোরম পরিবেশে অবস্থিত রেস্ট হাউসটি এখন বসবাস বা রাত্রিযাপনের অনুপযোগী হয়ে পড়ে আছে বহু বছর ধরে ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, একসময় রুমায় আগত সরকারি কর্মকর্তা, গণ্যমান্য ব্যক্তি ও দেশি-বিদেশি পর্যটকরা এখানেই অবস্থান করতেন। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বর্তমানে রেস্ট হাউসটির চিত্র করুণ। ভবনের ভেতরে বিদ্যুতের সংযোগ নেই, অধিকাংশ কক্ষে খাট নেই, পানি সরবরাহ বন্ধ। বিছানাপত্র সব পোকামাকড় ও ইঁদুরে নষ্ট হয়ে গেছে।
রেস্ট হাউসের চারপাশে শেওলা জমে ঘন জঙ্গল হয়ে উঠেছে। চারদিকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে বোতল, প্লাস্টিক ও নানান ময়লা-আবর্জনা এবং রুমগুলোতে ডুকায় যায় না, পশু পাখির মলমূত্রের দুর্গন্ধ । এর পাশের ঝুলন্ত ব্রিজটির একটিও তক্তা এখন অক্ষত নেই, ফলে সেটি সম্পূর্ণ অচল হয়ে পড়েছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ-এ যেন বান্দরবান জেলা পরিষদের অর্থের অপচয় ছাড়া আর কিছু নয়।
রুমা সদরের ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা চিংসাথোয়াই মারমা বলেন,এই রেস্ট হাউসটা একসময় আমাদের এলাকার গর্ব ছিল। এখন দেখলে মনে হয় পরিত্যক্ত কোনো ভগ্নদশা ভবন। রাতে এখানে যেতে ভয় পায় সবাই।
থানাপাড়া এলাকার বাসিন্দা মংশৈসিং মারমা জানান, পর্যটকরা এখন এখানে আসে না। যারা আসে, তারা রুমা বাজারে হোটেল না পেলে বাধ্য হয়ে বান্দরবান জেলা সদরে চলে যায়।
রুমা সদর ইউনিয়নের ১ নাম্বার ওয়ার্ডের মেম্বার আবু বক্কর জানান রেস্ট হাউসটি নিয়ে সংস্কারের জন্য জেলা পরিষদের বরাবরের আবেদন করা হয়েছে এবং জেলা পরিষদ সদস্যকে এই রেস্ট হাউসটি বাস্তব চিত্রটি দেখিয়েছি। রুমা রেস্ট হাউসটি এইভাবে অকেজো করে থাকলে দেশের পর্যটক খাতের অর্থনীতির দিকে বড় একটি অংশ ক্ষতি বলে মনে করছি।
এ বিষয়ে বান্দরবান জেলা পরিষদের সদস্য জারলম বম বলেন, ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের বাজেট করা হয়েছে। রেস্ট হাউসটির অবস্থা সত্যিই নাজুক। আমরা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছি। শীগ্রই সংস্কার ও পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেওয়া হবে যাতে পর্যটক ও কর্মকর্তারা আবার এটি ব্যবহার করতে পারেন।
স্থানীয়দের মতে, রুমার মতো সম্ভাবনাময় পর্যটন এলাকায় স্মৃতিবিজড়িত এই রেস্ট হাউসটি সংস্কার করা হলে একদিকে সরকারি সম্পদ রক্ষা পাবে, অন্যদিকে পর্যটকরা আবারও এখানে অবস্থান করার সুযোগ পাবেন - যা রুমার পর্যটন উন্নয়নে নতুন মাত্রা যোগ করবে।