× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

সন্ধ্যা নামলেই শুরু হয় বনদস্যুদের দৌরাত্ম্য

এ.এম হোবাইব সজীব, কক্সবাজারের

২৮ অক্টোবর ২০২৫, ১৪:০৭ পিএম

দেশের এক মাত্র পাহাড়িদ্বীপ কক্সবাজারের মহেশখালীতে রাত হলেই শুরু হয় বনদস্যুদের দৌরাত্ম্য। নির্বিচারে গাছ কেটে লুটের মহোৎসবের কারণে চট্টগ্রাম উপকূলীয় বন বিভাগের আওতাধীন কক্সবাজারের  মহেশখালী রেঞ্জের সংরক্ষিত ও সামাজিক বনাঞ্চল এখন বিরান ভূমিতে পরিণত হতে চলেছে। সাম্প্রতিক সময়ে কতিপয় চোরাকারবারি চক্রের সদস্যরা স্থানীয় প্রভাবশালী মহলের যোগসাজশে বনাঞ্চলের বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে হাজার রকমের গাছ কেটে অবাধে নিয়ে যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে গাছশূন্য হয়ে পড়েছে সামাজিক বনায়নের বাগানগুলো। মহেশখালী রেঞ্জের শাপলাপুর বিটের সংরক্ষিত বনের সামাজিক বনায়ন থেকে গাছ কেটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় চরম উদ্বেগ ও আতঙ্কে ভুগছেন সামাজিক বনায়নের অংশীদার উপকারভোগী লোকজন। এছাড়াও পাহাড়ের পাদদেশে অর্থের বিনিয়োগে ঘর তৈরির অনুমতি দিচ্ছেন স্বপন নামে এ স্টাফ।

জানা গেছে, এক বছর আগেও যেখানে বন বিভাগের গাছ তেমন কেউ কাটত না। সেখানে এখন বছর না ঘুরতেই বদলে গেছে দৃশ্য। সন্ধ্যার পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত গাছ কাটার দৃশ্য ও গাছ পরিবহন এখন নিত্য দিনের চিত্র। এমন পরিস্থিতিতেও নিশ্চুপ বন বিভাগ। ফলে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে বনদস্যুরা। অভিযোগ উঠেছে চট্টগ্রাম উপকূলীয় বন বিভাগের মহেশখালী রেঞ্জের আওতাধীন শাপলাপুর বিটের জামিরছড়ি- দিনেজপুর পাহাড়ি এলাকায় সামাজিক বনায়নের গাছ লুট করা হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এতে সরকার যেমন রাজস্ব হারাচ্ছে, তেমনি উপকারভোগীরা তাদের ন্যায্য হিস্যা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। জানা গেছে, সামাজিক বনায়নের অধীনে রোপণ করা গাছগুলো এই উপকারভোগীদের জমিতেই কয়েক যুগ ধরে বেড়ে উঠেছে।

শাপলাপুর ইউনিয়নের জামিরছড়ি এলাকায় গিয়ে গাছ কাটার সত্যতা মিলেছে। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কিছু দূর পরপরই একাধিক কাটা গাছের গোড়া বয়ে বেড়াচ্ছে বনদস্যুদের দস্যুতার চিহ্ন।

উপকারভোগীরা বলেন, ‘আমার জমির সার, পানি শোষণ করে বেড়ে ওঠা গাছ রাতের বেলায় কেটে ফেলা হচ্ছে। গত কয়েক সপ্তাহে মোট ৩০টার মত গাছ কেটে নেওয়া হলো। যার বাজারমূল্য প্রায় কয়েক লাখ টাকা।’ আবার অনেক জমির মালিক জানেই না কে বা কারা তাদের জমির গাছ কেটে নিচ্ছে। শতকের পর শতক জমির প্রায় শতাধিক গাছ কেটে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

এর ফলে সাম্প্রতিক ঘটনায় বন বিভাগের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। শাপলাপুর বন বিভাগের স্টাফ স্বপনের যোগসাজশে এসব গাছ কর্তন হতে পারে বলে সন্দেহের তীর জন্ম নিচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে। বন বিভাগ এই সব গাছ রক্ষা করতে না পারায় উপজেলায় বন বিভাগ থাকার যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। 

জমির মালিক বলেন, ‘বন বিভাগ ব্যক্তিমালিকানা জমিতে উপকারভোগীদের নিয়ে যে গাছ লাগিয়েছিল তার মেয়াদ ১২ বছর। অথচ তারা গাছগুলো কাটতেছে না। অন্যদিকে, উপকারভোগী হোক কিংবা বন বিভাগের কর্মকর্তাদের ইন্ধনে রাতের আঁধারে গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে। 

আইনে বলা আছে, জমির মালিক গাছের অর্ধেক লভ্যাংশ পাবেন, অথচ রাতে গাছ কেটে নেওয়ার ফলে জমির মালিক গাছগুলো পেল না আবার সরকারও পেল না।’

শাপলাপুর বিট কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলাম বলেন, গাছ চুরির ঠেকাতে আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। তবে চুরের সাথে বনকর্মীরা কেউ জড়িত নাই।

সহকারী বন সংরক্ষণ সাজমিনুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করছি। সাম্প্রতিক সময়ে আদালতে বেশ কিছু মামলাও করা হয়েছে। শাপলাপুর বিটে অনেকটা নিয়ন্ত্রণ করা গেলেও তবে গাছ চুরি কমানো যাচ্ছে না।’ 

চট্টগ্রাম উপকূলীয় বিভাগীয় বন কর্মকর্তা বেলায়েত হোসাইন বলেন, ‘গাছ চুরি অব্যাহত থাকলে এর দায় বিট কার্যালয় এড়াতে পারে না। বনে অপরাধ সংঘটিত হলে সেটার কারণ খুঁজে বের করা বিট কর্মকর্তার দায়িত্ব।’


Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.