কক্সবাজারের চকরিয়ায় সুপারি চুরির অপবাদে ওমর ফারুক বাবু (১৭) নামে এক কিশোর আত্মহত্যা করেছে। গ্রাম্য বিচারের নামে মারধরের পর অপমান সইতে না পেরে ওমর ফারুক আত্মহত্যা করেন। মৃত বাবু বমু বিলছড়ি ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড মাইট্টাটিলা পাড়ার বশির আহমদ ও আয়েশা বেগমের ছেলে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, গতকাল শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) দুপুর ৩টার দিকে নিজ বাড়ির দোকানের পেছনের বারান্দায় গলায় ফাঁস দেয় বাবু। প্রথমে তার বড় ভাইয়ের স্ত্রী শারমিন আক্তার ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে চিৎকার দেন। পরে স্বজনরা দ্রুত উদ্ধার করে লামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
বর্তমানে নিহতের লাশ লামা থানা পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। দাফনের অনুমতির জন্য স্বজনরা চকরিয়া থানায় অবস্থান করছেন। স্থানীয়রা জানান, গত বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) রাত ৭টার দিকে মাইট্টাটিলা পাড়ার এরশাদ মিস্ত্রির দোকানে সুপারি চুরির অভিযোগে একটি তথাকথিত সালিশ বৈঠক বসে। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় ইউপি সদস্য শফি, সাবেক মেম্বার মোহাম্মদ হোসেন, বাবুর পিতা বশির আহমদসহ কয়েকজন। অভিযোগ ওঠে, ওই বৈঠকে বাবুকে জনসম্মুখে মারধর করা হয়। সালিশে সর্দার হিসেবে এরশাদ মিস্ত্রি ও মানিক মিয়াও ছিলেন। নিহতের মা আয়েশা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “আমার ছেলেকে গ্রামের লোকজন সবাই মিলে সবার সামনে মারধর করেছে, অপমান করেছে। এই লজ্জা সে সহ্য করতে পারেনি, তাই নিজের জীবন শেষ করে ফেলেছে।” এ ঘটনায় এলাকায় গভীর শোক ও ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। স্থানীয়রা গ্রাম্য বিচারকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদ আনোয়ার বলেন,“এ ঘটনাটি আমরা জেনেছি। নিহতের পিতাসহ ওই এলাকার কয়েকজন থানায় এসেছেন। প্রাথমিকভাবে তাদের বরাতে জানা গেছে, ছেলেটি এলাকায় কিছু খারাপ ছেলেদের সঙ্গে মেলামেশা করত- এ কারণে মা-বাবা বকা দেন। পরে অভিমান করে আত্মহত্যা করেছে বলে তারা জানিয়েছে। যেহেতু লাশটি লামা থানা পুলিশ উদ্ধার করেছে, তারা তদন্তপূর্বক পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নিবেন।