× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

পতিত জমিতে মাচা পদ্ধতিতে সবজি চাষ

ইমরান হোসেন, কিশোরগঞ্জ

০১ নভেম্বর ২০২৫, ১২:৩৯ পিএম

কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে বিভিন্ন ইউনিয়নে পতিত জমিতে  মাচা পদ্ধতিতে সবজি চাষে বদলে গেছে কৃষকের ভাগ্য। বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় কৃষকরা শাক-সবজি চাষ করে এক দিকে যেমন তাদের পুষ্টি চাহিদা পুরণ করে। অন্যদিকে উৎপাদিত সবজি বাজারজাত করে অর্থনৈতিকভাবে তারা সাবলম্বী হচ্ছে। চলতি মৌসুমে বিভিন্ন ধরণের শাক-সবজি ও বাণিজ্যিকভাবে চারা উৎপাদন করে কোটি টাকা বিক্রির আশা কৃষকদের। এদিকে ভাল ফসল উৎপাদন করতে উপজেলা কৃষকদের সার্বক্ষণিক কৃষি পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন উপজেলা কৃষি বিভাগ।

হোসেনপুর উপজেলার পৌর এলাকার কৃষক ফারজুল। ফিসারীর উপরে মাচা পদ্ধতিতে প্রায় ১৫ শতাংশ জমিতে চালকুমড়ার চাষ করেন তিনি। শুধু চাল কুমড়াই নয়। চাল কুমড়ার পাশা-পাশি টমেটোরও চাষ করছেন। এই পর্যন্ত তার খরচ হয়েছে মাত্র ১০ হাজার টাকা। তার উৎপাদিত সবজি ইতোমধ্যে বাজারে বিক্রি শুরু করেছে। শুরুতেই প্রায় তিন হাজার টাকার সবজি বিক্রি করেছেন তিনি। তার এই সবজি বাগান থেকে ৫০-৬০ হাজার টাকা বিক্রি করবেন বলে আশা তার। তার এ মাচা পদ্ধতিতে সবজি চাষ দেখে অন্যান্য কৃষকরাও এ ধরণের সবজি চাষের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

কৃষক মো. ফারজুল বলেন, ‘আমি ফিসারীর উপর প্রায় ১৫ শতক জমিতে চালকুমড়ার ও এক পাশে টমেটো চাষ করেছি। এ পর্যন্ত প্রায় ১০-১২ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। শুরুতেই আমি ২৫০০-৩০০০ টাকা বিক্রি করেছি। ফলন ভাল হয়েছে। আশা করি আমি ৫০-৬০ হাজার টাকা বিক্রি করতে পারব।’

সরেজমিনে জানা যায়, উপজেলার পুমদী ইউনিয়নে স্থানীয় কৃষকদের নিয়ে উঠান বৈঠকের মাধ্যমে উপজেলা কৃষি অফিস প্রায় দুই হেক্টর পতিত জমিতে আদা, হলুদ, টমেটো ও লাউসহ বিভিন্ন ধরণের শাকসবজি চাষের আওতায় এনেছে। এ সকল শাক-সবজি কৃষকদের নিজেদের খাবার চাহিদা পূরণ করে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছে। এছাড়াও পলিনেট হাউজ প্রদর্শনী প্রকল্পের আওয়াতায় বিভিন্ন জাতের সবজির চারা উৎপাদন করে স্থানীয় কৃষকদের মাঝে বাণিজ্যিকভাবে বিক্রি করে কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন।

এ বিষয় কৃষক এখলাস উদ্দিন বলেন, আমি কৃষি অফিস থেকে পলিনেট হাউজ প্রকল্পের আওতায় বিভিন্ন জাতের সবজির চারা উৎপাদন করে স্থানীয় কৃষকদের মাঝে অর্ডার সরবরাহ করি। মাত্র শুরুতেই ১০-১২ হাজার টাকা বিক্রি করেছি। আমি আশাকরি শীত মৌসুমে ৬-৭ লক্ষ টাকার চারা বিক্রি করতে পারব।

পতিত জমিতে আবাদকৃত কৃষক মো. ফরিদ উদ্দিন ও মো. আরিফুল ইসলাম সুমন বলেন, আমাদের এখানে অনেকেরই প্রায় সবমিলিয়ে দুই হেক্টরের মতো জমি আছে। এই জমিগুলো একসময় পতিত ছিল। কৃষি অফিসের পরামর্শে আমরা এই জমিতে আদা, হলুদ, লাউশাক, লালশাক সহ বিভিন্ন ধরণের শাক-সবজি উৎপাদন করে নিজেরাও খাই বাজারেও বিক্রি করি।

এ বিষয়ে হোসেনপুর উপজেলা কৃষি অফিসার একে.এম শাহজাহান বলেন, আমাদের এ হোসেনপুরে বিভিন্ন ধরণের ফসল ধান, গম, ফল ও শাক সবজি আবাদ হয়ে থাকে। এখানকার কৃষকরা অনেকে ফিসারীর উপরে মাচা তৈরী করে চাল কুমড়া, লাউ ও টমেটোর চাষ করে থাকে এবং যে সকল জমি পতিত ছিল সে সকল জমি আমরা উঠান বৈঠকের মাধ্যমে কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে চাষের আওতায় এনে আদা, হলুদ, লাউ, সিমসহ বিভিন্ন ধরণের সবজি চাষের আওতায় এনেছি। উপজেলার সকল কৃষকদের ফসল উৎপাদনে সরকারের প্রনোদনা সহ উপজেলা কৃষি অফিস থেকে সব ধরণের সহযোগিতা ও পরামর্শ দিয়ে আসছি।

এ ব্যাপারে কিশোরগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মো. সাদিকুর রহমান বলেন, ‘আমাদের হোসেনপুর উপজেলায় ফসল এবং সবজি আবাদের জন্য যথেষ্ঠ সুনাম রয়েছে। কৃষকরা যাতে সাচ্ছন্দে সবজি আবাদ করতে পারে সেই ক্ষেত্রে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সার্বক্ষণিক তৎপর রয়েছে। ইতোমধ্যে আমরা পলিনেট হাউজ প্রকল্পের আওতায় সবজির চারা উৎপাদন করে কৃষকদের মাঝে বিতরণ শুরু করেছি। ফসল, শাক-সবজি আবাদের ক্ষেত্রে পোকা-মাকড় রোগ বালাই থেকে কৃষকরা কিভাবে সহজেই রক্ষা পাবে সেই পরামর্শ আমরা দিয়ে থাকি এবং সার ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে কৃষকরা যাতে স্বাচ্ছন্দ্যে সুষম সার ব্যবহার করে সেই ক্ষেত্রে আমাদের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছি।


Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.