ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে আধিপত্য বিস্তার ও পূর্ব শত্রুতার জেরে আবারও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। গত শনিবার (১ নভেম্বর) রাতে উপজেলার বড়িকান্দি ইউনিয়নের গণিশাহ মাজার বাজার ও আশপাশের এলাকায় এ গুলিবর্ষণের ঘটনায় শিপন মিয়া (২৮)ও ইয়াছিন (১৮)নামে দু’জন যুবক নিহত হয়েছেন। এতে আরও অন্তত দুজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রাত আনুমানিক ৯টার দিকে গণিশাহ মাজার বাজারের একটি হোটেলে স্থানীয় মোনাফ মিয়া ওরফে মনেক মিয়ার ছেলে শিপন মিয়া আড্ডা দিচ্ছিলেন। এ সময় একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী হঠাৎ হোটেলে ঢুকে এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। এতে শিপন মিয়া ও হোটেলের কর্মচারী ইয়াছিন (১৮) ও নূর আলম (১৮) গুলিবিদ্ধ হন।
গুলির শব্দে বাজারজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। হামলাকারীরা নির্বিঘ্নে পালিয়ে যায়। গুরুতর আহতদের প্রথমে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে ঢাকায় স্থানান্তর করা হলে শিপন মিয়া চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান এবং হোটেল কর্মচারী ইয়াছিন সোমবার (৩ নভেম্বর) ভোরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
এ ঘটনার পর শিপনের অনুসারীরা ক্ষুব্ধ হয়ে প্রতিপক্ষের এলাকায় পাল্টা হামলা চালায়। তারা গণিশাহ মাজার সংলগ্ন তালতলায় স্থানীয় শিক্ষক এমরান হোসেন মাস্টারের অফিসে গুলি চালায়। এতে এমরান হোসেন (৩৮) গুলিবিদ্ধ হন। তিনি ঢাকায় কর্মরত উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) বিল্লাল হোসেনের ছোট ভাই ও শ্যামগ্রাম মোহিনী কিশোর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক। পরবর্তীতে বিক্ষুব্ধরা প্রতিপক্ষের থোল্লাকান্দি গ্রামের বেশ কিছু বাড়িঘরে ভাঙচুর চালায়, এতে পুরো এলাকায় চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
খবর পেয়ে নবীনগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পিয়াস বসাক ও নবীনগর থানার ওসি শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে বিপুল পুলিশ মোতায়েন করা হয়। রাতেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ।
নবীনগর থানার ওসি মো. শাহিনুর ইসলাম বলেন, “গুলিবর্ষণের খবর পেয়ে দ্রুত পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এটি আধিপত্য বিস্তার ও পূর্ব বিরোধের জের।”
এদিকে, পুরো এলাকায় এখনো টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে, যাতে পুনরায় সংঘর্ষ না ঘটে।