মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার সোনারুপা চা বাগানের শিক্ষিকা মঞ্জু রানী পাল ও তার স্বামী রহন রুদ্র পালের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। অষ্টমী রানী পাল নামে এক তরুণী অভিযোগ করেছেন শিক্ষক দম্পতি কৌশলে তাকে প্রতারণা ও হুমকি দিয়ে অবৈধ সম্পর্কে জড়াতে বাধ্য করেন এবং পরবর্তীতে শারীরিক নির্যাতনের মাধ্যমে বাড়ি থেকে বের করে দেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, অষ্টমী রানী পাল (বয়স ১৭), পিতা ধনঞ্জয় রুদ্র পাল, মাতা মোহিনী রানী পাল, গ্রাম শিকড়ী বস্তি, ডাকঘর ছোটধামাই, উপজেলা জুড়ী, জেলা মৌলভীবাজার তিনি হোছন আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী ছিলেন। বিদ্যালয়ে যাওয়া-আসার পথে তার পরিচয় হয় বারোহাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা মঞ্জু রানী পালের সঙ্গে (বর্তমানে কর্মরত সোনারুপা চা বাগান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে)।
অভিযোগে অষ্টমী রানী পাল উল্লেখ করেন, মঞ্জু রানী পাল নিয়মিত তাকে বাড়িতে নিয়ে যেতেন এবং এক পর্যায়ে স্বামী রহন রুদ্র পালের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। পরবর্তীতে তারা বিভিন্ন প্রলোভন ও হুমকি দেখিয়ে তাকে রহন রুদ্র পালের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কে জড়াতে বাধ্য করেন।
পরিস্থিতি জানাজানি হলে গ্রামের পঞ্চায়েতের সিদ্ধান্তে গত বছর ২৬ ডিসেম্বর একটি স্ট্যাম্প লিখিত হয় এবং ধর্মীয় নিয়মে কালী মন্দিরে পুরোহিতের উপস্থিতিতে অষ্টমী রানী পাল ও রহন রুদ্র পালের বিবাহ সম্পন্ন হয়। তবে বিবাহের মাত্র দুই মাস পর থেকেই তার ওপর নির্যাতন শুরু হয়। অভিযোগে তিনি বলেন, “প্রতিদিন লাঠি দিয়ে মারধর করত, খেতে দিত না, বাড়ি থেকে চলে যেতে বলত। শেষে তারা আমাকে তাড়িয়ে দেয়।”
পরে পঞ্চায়েতের শরণাপন্ন হলে তারা আগের সিদ্ধান্ত অস্বীকার করে এবং তাকে সমাজচ্যুত করে। নিরুপায় হয়ে অষ্টমী রানী বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর অভিযোগ দাখিল করেন।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার দিলীপময় দাশ চৌধুরী বলেন, “তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে। বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে দেখছি এবং সঠিক তদন্তের মাধ্যমে ন্যায়সঙ্গত সমাধান দেওয়ার সর্বাত্মক চেষ্টা করব।” এ ঘটনায় স্থানীয় এলাকাবাসীর মধ্যেও চাঞ্চল্যকর সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তারা।