লিবিয়ায় বাংলাদেশী শ্রমিকদের অপহরণ করে নির্যাতন ও মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনায় খন্দকার রিফাত হোসেন (২৬) নামে যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশনের সদস্যরা। তাকে লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জ সিনিয়র জুড়িসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে গতকাল মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) বিকেলে সোপর্দ করা হয়। আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। এর আগে গত সোমবার (৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় তাকে ঢাকার সূত্রাপুর থানাধীন বেগমগঞ্জ লেন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
নির্যাতন ও মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনায় ২০২৪ সালের ৭ মার্চ লক্ষ্মীপুরের আদালতে একটি মামলা হয়। ওই মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। রিফাত টাঙ্গাইলের বাসাইলের খন্দকার রমজানের ছেলে।
ঘটনা সূত্রে জানা গেছে, লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামের রুহুল আমিনের ছেলে লিটন হোসেন ওরফে সুমন লিবিয়াতে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। সেখান থেকে ইতালি যাবার লক্ষ্যে সে ৭২ হাজার দিনার, যা বাংলাদেশী মুদ্রায় ১৫ লাখ টাকা জমা করে। খন্দকার রিফাত নামে আরেকজন লিবিয়া প্রবাসীর সাথে তার পরিচয় হয়। লিটনের কাছে দিনার থাকার বিষয়টি জানতে পারে রিফাত। পরে লিবিয়া ও পাকিস্তানি মাফিয়াচক্রের সহায়তায় লিটনকে ২০২৪ সালের ২৭ জানুয়ারি অপহরণ করে রিফাত। সেখানে তাকে আটকে রেখে নির্যাতন করে ৭২ হাজার দিনার নিয়ে যায়। তাকে নির্যাতনের বিভিন্ন ছবি ও ভিডিও চিত্র তার পরিবারের মোবাইলের হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়ে ৫০ লাখ টাকা দাবি করে এবং দফায় দফায় মোটা অংকের মুক্তিপণ আদায় করে।
পরে এ ঘটনা নিয়ে লক্ষ্মীপুর আদালতে মামলা করে ভিকটিম লিটনের মামা মো. আনোয়ার হোসেন। মামলায় লিবিয়ায় থাকা রিফাতের শাশুড়ী ঢাকার সুত্রাপুরের বাসিন্দা আনু আক্তার ও তাদের আত্মীয় দিদার হোসেনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ২ থেকে ৩ জনকে আসামি করা হয়।
পুলিশ হেডকোয়ার্টারের নির্দেশ মামলাটি তদন্ত করে নোয়াখালী পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশন। মামলার বিষয়টি জানতে পেরে অপহরণের ২ মাস ২০ দিন পর অপহরণকারীরা তাকে ছেড়ে দেয়।
পিবিআই এর উপপরিদর্শক (এসআই) মো. ফরিদ উদ্দিন বলেন, ঘটনার মূলহোতা খন্দকার রিফাত গত ১৩ মে বাংলাদেশে আসে পলাতক থাকে। তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে তার অবস্থান নিশ্চিত হয়ে তাকে আটক করা হয়। সে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছে। পরে তাকে অপহরণ মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।