মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার দক্ষিণভাগ গ্রামে শ্বশুড়বাড়ির পাশে গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় কয়ছর আহমদ (৩৫) নামে এক যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ।
পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে গতকাল মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) দুপুরে ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে প্রেরণ করে। নিহত কয়ছর আহমদ সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার হাতলিঘাট গ্রামের মৃত মখলিছুর রহমানের ছেলে এবং পেশায় কাঠমিস্ত্রি।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, প্রায় দুই মাস ধরে কয়ছর আহমদ স্ত্রী মরিয়ম বেগম হেপি ও দুই সন্তান নিয়ে কুলাউড়ায় ভাড়া বাসায় বসবাস করছিলেন। পাঁচ দিন আগে দাম্পত্য কলহের জেরে তার স্ত্রী বাবার বাড়ি দক্ষিণভাগ গ্রামে চলে আসেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে মরিয়মের চাচি ইয়ারুন নেছা পুকুরে হাঁস ছেড়ে দিতে গিয়ে দেখেন, পুকুরপাড়ের একটি গাছে (প্রায় ২০ ফুট উঁচুতে) এক যুবকের ঝুলন্ত লাশ। পরে স্থানীয়রা এসে প্যান্ট ও শার্ট দেখে লাশটি কয়ছর আহমদের বলে শনাক্ত করেন। এ ঘটনায় এলাকায় নানা গুঞ্জন চলছে-এটি আত্মহত্যা নাকি পরিকল্পিত হত্যা।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কুলাউড়া সার্কেল) মো. আজমল হোসেন, বড়লেখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহবুবুর রহমান মোল্লা এবং ওসি (তদন্ত) মো. হাবিবুর রহমান।
নিহতের স্ত্রী পক্ষের লোকজন দাবি করেছেন, কয়ছর আহমদ আত্মহত্যা করেননি; তাকে হত্যা করে গাছে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। নিহতের বড় বোন ফাতেমা বেগম এনিও একই দাবি করে বলেন, “শ্বশুড়বাড়ির লোকজন পরিকল্পিতভাবে আমার ভাইকে হত্যা করেছে।”
অন্যদিকে, মরিয়ম বেগমের চাচি লাইলি বেগম বলেন, “জামাতা কয়ছর দুই সন্তানকে রেখে স্ত্রীকে মারধর করে কুলাউড়ার বাসা থেকে বের করে দেয়। এরপর থেকেই বিষয়টি নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে আলোচনা চলছিল।”
বড়লেখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহবুবুর রহমান মোল্লা জানান, “খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। এব্যাপারে থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, দাম্পত্য কলহের জেরে সে আত্মহত্যা করেছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।”