রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলা ভূমি অফিসে সেবা প্রত্যাশীদের হয়রানি ও দুর্ভোগ কমেছে , বেড়েছে সেবার গতি ও মান। উপজেলা ভূমি অফিসে দ্রুততার সঙ্গে সেবা মেলায় খুশি সাধারণ মানুষ। শুধু তাই নয় অফিসের বাহ্যিক চাকচিক্যময় পরিবেশের সঙ্গে ভেতরেও হয়রানি মুক্ত দ্রত গতির কাজ অন্যদের কাছে এই অফিস মডেল হয়ে উঠেছে।
উপজেলা ভূমি অফিসের ভেতর-বাইরে এমন ইতিবাচক পরিবর্তন এনেছেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শামসুল ইসলাম। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০২৪ সালে ২৫ সেপ্টেম্বর শামসুল ইসলাম সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে গোদাগাড়ী উপজেলায় যোগদানের পর থেকেই ভূমি কর (রাজস্ব) আদায়ের পাশাপাশি অল্প সময়ের মধ্যে বিপুল সংখ্যক নামজারি কেস নিষ্পত্তি করে সাধারণ মানুষের কাছে থেকে ব্যাপক প্রশংসা ও ভালবাসা পেয়েছেন। অথচ একটা সময় যেখানে নিজের জমি খারিজ করতে সময় লেগে যেতো ১০ মাস থেকে এক বছর। সেই খারিজ সম্পন্ন করতে সময় লাগছে মাত্র ১৫ থেকে ২০ দিন। যেটি সরকারের বেঁধে দেওয়া সময়ের চেয়েও কম সময়ে সম্পন্ন হচ্ছে। ভূমি অফিসে আসা সেবা প্রার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আগে গোদাগাড়ী ভূমি অফিসে আসলে কে দালাল আর কে এই কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী তা বোঝা দায় ছিল। দালালদের পেছনে ঘুরে ঘুরে জমির নামজারি বা অন্যান্য কাজ করতে হতো। তাদের মনে ছিল ক্ষোভ-অসন্তোষ। তারা অভিযোগ জানানোর মত কাউকে পেতেন না। কিন্তু সেই নেতিবাচক ধারণা পাল্টে দিয়েছেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) শামসুল ইসলাম। তিনি সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত নিয়মিত অফিস করছেন। এমনকি কাজের চাপে অনেক সময় রাতেও অফিস করতে হয়। একই সঙ্গে কাঁকনহাট পৌর প্রশাসকের দায়িত্ব পালন করছেন। সদিচ্ছা থাকলেই যে দায়িত্বশীল একজন সরকারি কর্মকর্তা, এলাকার আর্থসামাজিক উন্নয়নে বড় ভুমিকা রাখতে পারেন শামসুল ইসলাম তার দৃষ্টান্ত। তিনি পৌরসভার উন্নয়নেও ব্যাপক ভুমিকা রেখে চলেছেন। একটা সময় পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিয়মিত বেতনভাতা পেতেন না। তাদের বেতনভাতা নিয়মিতকরণ, বিদ্যুতের বকেয়া বিল পরিশোধ,পৌর ভবনের আধুনিকায়ণ ও বিভিন্ন জনগুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন কাজ করা হয়েছে।
অন্যদিকে ভূমি অফিস চত্বরে বেশ ছায়াঢাকা পরিবেশ। সেই ভুমি অফিসের পরিবেশটিকে আরও মোহনীয় করা হয়েছে। করা হয়েছে ফুলের বাগান। জনগণের নানা কাজ করার জায়গা বা অপেক্ষার জন্য বসার ঘরে আরামদায়ক চেয়ার দেওয়া হয়েছে। এখানে গাছের গোড়াগুলো টাইলস দিয়ে বাঁধানো হয়েছে। ভূমি অফিসের ইন্টেরিয়র ডিজাইনের কাজটিও সম্পন্ন করা হয়েছে। এছাড়া সেবা প্রত্যাশী জনসাধারণের জন্য অফিসের ফুটপাতের অংশটুকুও আকর্ষণীয় করতে টাইলস দ্বারা বাঁধানো হয়েছে। এতে সেবা প্রত্যাশীরা একটি সুন্দর পরিবেশে অপেক্ষা করে তাদের সেবা নিয়ে ঘরে ফিরতে পারছেন। এখানে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছেন সহকারী কমিশনার। তিনি আগতদের জন্য একটি স্বাস্থসম্মত ও ঝকঝকে টয়লেট নির্মাণের ব্যবস্থা করেছেন। উপজেলার সবগুলো ইউনিয়ন ভূমি অফিসে সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে। সেখানে আগত জনগণ কেমন সেবা পাচ্ছেন তা মনিটর করা হয়। নামজারির সময় ২৮ দিনের কম সময়ে এ অফিস ১৭ থেকে ২০ দিনের মধ্যে সম্পন্ন করতে পারছে। এক্ষেত্রে জেলার মধ্যে গোদাগাড়ী উপজেলা ভূমি অফিস কম সময়ের মধ্যে নামজারীর আবেদন নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে জেলায় প্রায় শীর্ষে রয়েছে। এছাড়াও নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে।
উপজেলার মোহনপুর ইউপি এলাকার আব্দুল হক বলেন, তার একটি নামজারি নিয়ে তিনি দীর্ঘদিন যাবত ঘুরছেন,তবে এই এসিল্যান্ড যোগদানের পর মাত্র ২২ দিনে তার নামজারি কাজ সম্পন্ন হয়েছে। রিশিকুল ইউপি এলাকার কৃষক আব্দুর রহিম বলেন,তার একটি মিস কেস নিয়ে তিনি দীর্ঘদিন যাবত ঘুরছেন, শুধু দিনের পর দিন পড়ে। কিন্তু এই এসিল্যান্ড সাহেব আশার পর মাত্র অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই তার মিস কেসের শুনানি হয়েছে।
এ বিষয়ে গোদাগাড়ী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শামসুল ইসলাম জানান, তিনি সরকারি দায়িত্ব যথাযথভাবে পালনের চেষ্টা করছেন মাত্র। তিনি বলেন, আমি চাই সততার সঙ্গে কাজ করতে এবং সর্বোচ্চ সেবা দিয়ে জনগণের ভোগান্তি লাঘব করতে। আবার জমিজমা নিয়ে জালিয়াতি বা কেউ যাতে প্রতারণা করতে না পারে সেটিও প্রতিরোধের চেষ্টা করছি। এক্ষেত্রে তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফয়সাল আহম্মেদ স্যারের সার্বিক সহযোগিতা পাচ্ছেন বলে জানান।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh
