পার্বত্য চট্টগ্রামের দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় দরিদ্র ও অসহায় পরিবারের স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন এখন বাস্তব রূপ নিচ্ছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মানবিক উদ্যোগে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনস্থ রাঙামাটি রিজিয়নের কাপ্তাই জোন কর্তৃক ‘সম্প্রীতি ও উন্নয়ন প্রকল্প’-এর আওতায়। রোববার (৯ নভেম্বর) সকালে ৩০টি অসহায় পরিবারের মাঝে ছাগল, হাঁস-মুরগি ও খোয়ার বিতরণ করা হয়।
সকাল ১১টায় কাপ্তাই জোন সদর দপ্তরে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কাপ্তাই জোন কমান্ডার লে. কর্নেল নাজমুল কাদির শুভ, পিএসসি। তিনি নিজ হাতে উপকারভোগীদের মাঝে ছাগল, হাঁস-মুরগি ও খোয়ার তুলে দেন এবং তাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন।
সেনাবাহিনীর সূত্র জানায়, কাপ্তাই, রাইখালী টিওবি, পানছড়ি টিওবি, বাঙ্গালহালিয়া ও রাজস্থলী এলাকার ৩০টি দরিদ্র পরিবারকে (এর মধ্যে ২১টি পাহাড়ি ও ৯টি বাঙালি পরিবার) ব্ল্যাক বেঙ্গল প্রজাতির ছাগল, হাঁস-মুরগি ও খোয়ার প্রদান করা হয়েছে।
উপকারভোগীদের মধ্যে সুমি বিশ্বাস, মর্জিনা আক্তার, রেদা মং মারমা, অংথোয়াইসিং মারমা ও শানু অং মারমা আনন্দ প্রকাশ করে বলেন, “আমাদের মতো গরিব পরিবারের পাশে সেনাবাহিনী যে এভাবে দাঁড়িয়েছে, তাতে আমরা নতুন করে বাঁচার প্রেরণা পেয়েছি। এখন আমরা নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারব।”
এ সময় উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান,আদোমং মারমা, শিমুল দাশ, মংউচিং মারমা,কুলুক্যা মারমা, মহিলা মেম্বার ইসাইচিং মারমা।। জনপ্রতিনিধি, গণ্যমান্য ব্যক্তি ও সেনাবাহিনীর বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা।
বাঙ্গালহালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অদোমং মারমা বলেন, “সেনাবাহিনী শুধু পাহাড়ে শান্তি রক্ষাই নয়, মানুষকে স্বাবলম্বী করতেও নিরলসভাবে কাজ করছে। তাদের এই মানবিক উদ্যোগের জন্য আমরা কৃতজ্ঞ।”
অনুষ্ঠানে জোন কমান্ডার লে. কর্নেল নাজমুল কাদির শুভ, পিএসসি বলেন, “বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সবসময় পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষের পাশে রয়েছে। শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি পাহাড়ি ও বাঙালি জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। এই সহায়তা কার্যক্রমের মাধ্যমে প্রত্যন্ত এলাকার পরিবারগুলোকে স্বাবলম্বী করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
মানবিকতা ও সম্প্রীতির এই উদ্যোগে এলাকায় আনন্দের জোয়ার বয়ে যায়। সেনাবাহিনীর এমন কার্যক্রম পাহাড়ি-বাঙালি জনগোষ্ঠীর মধ্যে আস্থা ও ভ্রাতৃত্বের সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করছে।