ছবি: সংগৃহীত
এসএসসির এক পরীক্ষার্থীকে (১৫) বিদ্যালয় থেকে অপহরণের পর আটকে রেখে ধর্ষণের ঘটনায় একই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ফিরোজুল ইসলাম ফিরোজকে (৪৮) যাবজ্জীবন সাজা দিয়েছেন আদালত। তার বিরুদ্ধে পৃথক দুটি ধারায় মঙ্গলবার দুপুরে রায় ঘোষণা করেন রাজশাহী দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মহিদুজ্জামান মুহিত। দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁশলী মুন্সি আবুল কালাম আজাদ রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, প্রধান শিক্ষক ফিরোজের বিরুদ্ধে ধর্ষণ প্রমান হওয়ায় আদালত যাবজ্জীবন এবং অপহরণের ঘটনায় পৃথক একটি ধারায় ১০ বছরের সশ্রম কারাদন্ড দেওয়া হয়। রায়ে নির্যাতিত শিক্ষার্থীর পরিবার আদালতের রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে।
দন্ডপ্রাপ্ত ফিরোজ নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার নাজিরপুর মরিয়ম মেমোরিয়াল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। তিনি নাজিরপুরের দৌলতপুর গ্রামের গোলাম মোস্তফার ছেলে। ফিরোজ গুরুদাসপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক সিনীয়র সহ সভাপতি ছিলেন। ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী ও মামলার নথি সূত্রে জানাগেছে, মামুদপুর গ্রামের ওই ছাত্রী নাজিরপুর মরিয়ম মেমোরিয়াল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করতেন। ২০২২ সালের ১ অক্টোর এসএসসির ব্যবহারিক পরীক্ষা দিতে এলে বিদ্যালয়ের ফটকের সামনে থেকে প্রকাশ্যে ওই ছাত্রীকে জোরপূর্বক মাইক্রোবাসে তুলে নিরুদ্দেশ হন প্রধান শিক্ষক ফিরোজ। এক পর্যায়ে রাজশাহীর একটি আবাসিক হোটেলে নিয়ে হাত-পা বেঁধে ধর্ষণ করেন। পরে প্রত্যক্ষদর্শীরা বিষয়টি ভুক্তভোগির পরিবারকে জানান। এক পর্যায়ে ওই ছাত্রীর পিতা বাদি হয়ে ফিরোজ ও তার দুই ভাইকে আসামি করে গুরুদাসপুর থানায় ধর্ষণ মামলা করেন। পরে ১১ অক্টোবর রাত সোয়া ১২টার দিকে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার তকীতলার একটি আবাসিক হোটেল থেকে অভিযুক্ত ওই প্রধান শিক্ষককে গ্রেপ্তার করে র্যাব-৫।
সরকারি কৌঁশলী মুন্সি আবুল কালাম আজাদ বলেন, মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) মামলার রায় ঘোষণার তারিখ ছিল। এর আগে ২৭ নভেম্বর ধার্য তারিখে হাজিরা দিতে গেলে আদালত ফিরোজের জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, রায় ঘোষণার সময় আসামিদের আদালতে হাজির করা হয়। পুলিশের দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদন, সাক্ষিদের স্বাক্ষ্য এবং ধর্ষণের ভিডিওতে প্রধান শিক্ষক ফিরোজের বিরুদ্ধে দুটি অপরাধ প্রমাণিত হয়। এসময় অপরাধীকে দোষী সাব্যস্ত করে ধর্ষণের ধারায় যাবজ্জীবন ও অপহরণের অপর একটি ধারায় ১০ বছরের সশ্রম কারাদন্ড দেন বিচারক। পরে ফিরোজকে কারাগারে নিয়ে যায় পুলিশ। এ সময় খালাস দেওয়া হয় অপর দুই আসামীকে। ওই ছাত্রীর পিতা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন, মামলা দায়ের করার পর থেকে তিন বছরের বিভিন্ন সময়ে আসামী ফিরোজ ও তার স্বজনেরা নানাভাবে হুমকি দিয়েছেন। টাকার লোভ দেখিয়ে আপোস মিমাংসা করতে চেয়েছেন। কিন্তু মেয়ের সম্মানের কথা চিন্তা করে তারা সব প্রতিকুলতা পেরিয়ে মামলা চালিয়ে গেছেন। আশানুরূপ রায় পাওয়ায় তারা উচ্ছ্বাসিত। তবে আসামি বিএনপি নেতা হওয়ায় এলাকায় বসবাস করার ক্ষেত্রে নিরাপত্তাহীনতা রয়েছে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh
