ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ার ভালুকজান পেট্রোল পাম্পের সামনে আলম এশিয়া নামক একটি গাড়িতে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এ সময় গাড়িতে ঘুমিয়ে থাকা চালক জুলহাস (২৬) দগ্ধ অবস্থায় মারা গেছেন। দগ্ধ মা ও ছেলে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) ভোররাত ৩.০০ টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ঢাকা মেট্রো-ব ১৪-৯৪১৮ গাড়িটি রাত ২.২৫মিনিটের দিকে ঐ পেট্রোল পাম্পের সামনে পার্কিং করে চালক জুলহাস গাড়িতেই ঘুমিয়ে যায়। হঠাৎ স্থানীয়রা দেখতে পান গাড়িতে আগুন। ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়রা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনলে গাড়ির ভেতরে একজনের মৃত দেহ দেখতে পায়। খবর পেয়ে পুলিশ দগ্ধ মৃতদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। জুলহাস পৌর এলাকার ৬নং ওয়ার্ডের ভালুকজান মহল্লার আ: বারেকের পুত্র।
পুলিশ জানিয়েছে, রাত আনুমানিক ০৩.১৪ ঘটিকার সময় ঢাকা হতে আগত আলম এশিয়া পরিবহনটি ফুলবাড়িয়া থানাধীন ভালুকজান পেট্রোল পাম্পের বিপরীত পাশে মূল সড়কে তেল নেওয়ার উদ্দেশ্যে পার্কিং করে রাখা হয়। এ সময় অজ্ঞাতনামা দুষ্কৃতিকারীরা হঠাৎ বাসে আগুন ধরিয়ে দিয়ে দ্রুত স্থান ত্যাগ করে।
বাসে অবস্থানরত যাত্রী শাহিদ ইসলাম বাদশা (২০), পিতা- বাবুল হোসেন এবং তার মা শারমিন সুলতানা রুমকি, উভয়েই চকরাধাকানাই, থানা- ফুলবাড়িয়া, জেলা- ময়মনসিংহের বাসিন্দা, ঢাকা থেকে আগত ছিলেন এবং ভোর হওয়ার জন্য বাসে অবস্থান করছিলেন। আগুনে তাঁরা দগ্ধ হন এবং তাঁদেরকে গুরুতর আহত অবস্থায় চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিস ও ফুলবাড়িয়া থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনাস্থল হতে এক অজ্ঞাতনামা পুরুষের পুড়ে যাওয়া মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে, যাহাকে প্রাথমিকভাবে বাসের চালক জুলহাস বলে ধারণা করা হচ্ছে।
নিহতের বাড়িতে গিয়ে শোকের মাতম। মা ও স্ত্রীর আহাজারিতে ভারি হয়ে উঠেছে সেখানকার আকাশ বাতাস। পারিবারিকভাবে জুলহাসের রয়েছে একমাত্র ছোট বোন রয়েছে। জুলহাস কিছুদিন পূর্বে বিয়ে করেছেন। জুলহাস গাড়ির রোজগার দিয়ে মা, বোন ও স্ত্রীর ভরন পোষণ করেন।
থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ রোকনুজ্জামান বলেন, এ ঘটনায় একজন মারা গেছে। দগ্ধ মা ও ছেলে ঢাকায় চিকিৎসাধীন রয়েছে। তবে কী কারণে ঘটনা সেটি আমরা অধিকতর গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছি। ঘটনার সাথে জড়িত দুষ্কৃতিকারীদের শনাক্ত ও গ্রেফতারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এ দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার (এসপি), ফুলবাড়ীয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. আরিফুল ইসলাম, জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর অধ্যক্ষ মু. কামরুল হাসান মিলন। তারা দ্রুততম সময়ে হত্যাকারীদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি নিশ্চিতের আশ্বাস দেন।