রঙ, ব্রাশ আর আত্মবিশ্বাস—এই তিন সঙ্গীকে পাশে নিয়েই টরন্টোতে নিজের অবস্থান তৈরি করেছেন বাংলাদেশি–কানাডিয়ান মেকআপ আর্টিস্ট ঐশী। ছোটবেলা থেকেই রঙ ও সৌন্দর্যের প্রতি ছিল তার বিশেষ টান। মুখের সামান্য রঙ পরিবর্তন, শেড বা টোনের মাধ্যমে একজন মানুষের আত্মবিশ্বাস কতটা বদলে যেতে পারে—এই উপলব্ধিই তাকে টেনেছিল মেকআপের জগতে। সেই ভালোবাসা থেকেই আজ তিনি টরন্টোর পেশাদার মেকআপ ইন্ডাস্ট্রিতে একটি সম্মানজনক অবস্থানে পৌঁছেছেন।
ঐশী শুধু মেকআপ করেন না, তিনি মানুষকে শেখান কীভাবে নিজের ভেতরের সৌন্দর্যকে বাইরে প্রকাশ করতে হয়। নিজের সাফল্যের পেছনে বাবা-মায়ের উৎসাহ ও স্বামীর অবিচল সমর্থনের কথা কৃতজ্ঞচিত্তে স্বীকার করেন তিনি। তার ভাষায়, “আমি যা ভালোবাসি, সেটাই মন দিয়ে করেছি। আর আমার স্বামী পাশে না থাকলে আমি এত দূর আসতে পারতাম না।
বহুসাংস্কৃতিক শহর টরন্টোতে কাজ করা ঐশীর জন্য প্রতিদিনই নতুন এক অভিজ্ঞতা। ভিন্ন ত্বক, সংস্কৃতি ও রুচির মানুষদের নিয়ে কাজ করতে গিয়ে তিনি প্রতিনিয়ত নিজের সৃজনশীলতাকে প্রসারিত করছেন। এখানে প্রতিটি মুখই আলাদা গল্প বলে। প্রতিটি লুক আলাদা পরিকল্পনায় তৈরি করতে হয়, জানান তিনি।
মেকআপের সব ধরণের কাজই তিনি উপভোগ করেন, তবে তার প্রিয় ক্ষেত্র ব্রাইডাল মেকআপ। ঐশীর মতে, বিয়ের দিন একজন নারীর জীবনের অন্যতম বিশেষ দিন—সেদিনের হাসি ও আবেগে যেন সৌন্দর্য ফুটে ওঠে, সেটাই তার লক্ষ্য।
পেশাদার মেকআপ আর্টিস্ট হওয়ার পাশাপাশি ঐশী একজন শিক্ষকও। তিনি অনলাইন ও সরাসরি মাস্টারক্লাসের মাধ্যমে নতুন মেকআপ আর্টিস্টদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। শুধু কৌশল নয়, আত্মবিশ্বাস ও স্বকীয়তার গুরুত্ব সম্পর্কেও শিক্ষা দেন তিনি। নিজেকে অন্যের সঙ্গে তুলনা করবেন না—আপনার স্টাইলটাই আপনার পরিচয়, বলেন ঐশী দৃঢ়ভাবে।
ভবিষ্যতে ঐশী চান মেকআপ প্রশিক্ষণকে আরও আন্তর্জাতিকভাবে সহজলভ্য করতে। পাশাপাশি, বাংলাদেশ থেকে উঠে আসা নতুন প্রতিভাদের জন্য বৈশ্বিক প্ল্যাটফর্মে সুযোগ তৈরি করাই তার বড় লক্ষ্য।
নিজের কাজ, আত্মবিশ্বাস ও নিষ্ঠার মাধ্যমে ঐশী এখন টরন্টোর মেকআপ জগতে শুধু একজন শিল্পীই নন, তিনি হয়ে উঠেছেন প্রেরণার প্রতীক—রঙের স্পর্শে আলোকিত এক বাংলাদেশি মুখ।