× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

আলুর বাজারে ধস: কৃষক-ব্যবসায়ীদের চরম ক্ষতি

মো. সাইফুল ইসলাম, নীলফামারী

১৫ নভেম্বর ২০২৫, ১৩:০৮ পিএম

নীলফামারীতে সংরক্ষিত আলুর বাজারমূল্য ধসে পড়ায় ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষক, ব্যবসায়ী ও হিমাগার মালিকরা। উৎপাদন ও সংরক্ষণ ব্যয়ের তুলনায় বাজারদর কমে যাওয়ায় জেলার ১১টি হিমাগারে মজুত প্রায় ৯৫ হাজার মেট্রিক টন আলুর বেশিরভাগই পড়ে আছে। এর মধ্যে কৃষকদের আলুর পরিমাণ প্রায় ৩৫ হাজার মেট্রিক টন। কৃষকদের অভিযোগ, জমিতে উৎপাদন থেকে শুরু করে সংরক্ষণ পর্যন্ত প্রতি কেজি আলুর খরচ পড়েছে ২৮-২৯ টাকা। অথচ বাজারে ভালো মানের আলু বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৭-১০ টাকায়। এতে তারা মারাত্মক লোকসানে পড়েছেন।

কৃষক মোস্তফা ইসলাম বলেন, “২২ টাকা খরচ করে আলু তুলেছি, এখন ৮-১০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। লোকসানে ডুবে আছি।”

কৃষক জিয়ারুল হক আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, “এভাবে দাম কম থাকলে আগামী মৌসুমে অনেকেই আলুচাষ বন্ধ করতে বাধ্য হবেন।”

সংরক্ষণ খরচের চাপে ব্যবসায়ীরাও বিপাকে। প্রতি বস্তা (৫০ কেজি) আলু সংরক্ষণে খরচ হয়েছে ১,২০০-১,৪০০ টাকা; কিন্তু বর্তমানে বস্তাপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৪৫০-৬৫০ টাকায়। উত্তরা হিমাগারের ব্যবস্থাপক নিরদ চন্দ্র রায় জানান, “১ লাখ ১৫ হাজার বস্তার মধ্যে মাত্র ৪০ হাজার বের হয়েছে। জায়গা খালি না হওয়ায় ব্যয় বাড়ছে।”

এদিকে বাজার মন্দার মধ্যেই হিমাগারগুলোতে নতুন উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী, কিছু হিমাগার মালিক চুক্তির মেয়াদ ১৫ নভেম্বর শেষ হওয়ার আগেই কৃষকদের আলু গোপনে বিক্রি করেছেন। এতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন কৃষকেরা। বিষয়টি জানতে পেরে অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী হিমাগার মালিকদের সতর্ক করে চিঠি দিয়েছেন। চিঠিতে চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে আলু বিক্রি না করার কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গোপনে আলু বিক্রির ঘটনা তদন্ত করা হচ্ছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চাহিদার তুলনায় উৎপাদন বেশি হওয়া, নতুন আলুর আগমন, রপ্তানি কমে যাওয়া ও সবজির উৎপাদন বৃদ্ধির কারণে আলুর বাজার দ্রুত ভেঙে পড়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মনজুর রহমান বলেন, “খুব শিগগিরই নতুন আলু পাওয়া যাবে। দাম কিছুটা ভালো থাকলে কৃষকেরা লোকসান কাটিয়ে উঠতে পারবেন।”

কৃষি বিশেষজ্ঞদের মতে, চলতি মৌসুমে বড় ধরনের লোকসানের কারণে আগামী রবি মৌসুমে জেলার উল্লেখযোগ্য পরিমাণ জমিতে আলুচাষ কমে যেতে পারে। এতে উৎপাদন ব্যবস্থায় নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।


Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.