লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার দত্তপাড়া ইউনিয়নে খতিয়ানভুক্ত জমি দখলকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। একাধিক ওয়ারিশ দাবি করছেন, তাদের অজ্ঞাতে জমি বিক্রি ও নামজারি করা হয়েছে। এতে এলাকাজুড়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
জমির ওয়ারিশ জয় কৃষ্ণ দে জানান, দত্তপাড়া মৌজার আরএস খতিয়ান নং ৫০০-এর অধীনে ১ একর ৯৭ শতক জমির ৬ জন মালিক ও ওয়ারিশ রয়েছেন। তাদের মধ্যে একজন রাজেন্দ্র কৃষ্ণ দে বর্তমানে নোয়াখালী জেলায় বসবাস করেন। সম্প্রতি স্থানীয় ইসমাইল হোসেন ওই খতিয়ানের ২২৬৪ দাগভুক্ত বাড়ির অংশে বালু ফেলে ভরাট শুরু করেন।
জয় কৃষ্ণ দে অভিযোগ করে বলেন, ইসমাইল হোসেন রাতের আঁধারে আমাদের বাড়ির অংশে বালু ভরাট শুরু করেন। পরে তিনি জানান রাজেন্দ্র কৃষ্ণ দে-এর কাছ থেকে ২০২১ সালের ২৪ নভেম্বর দলিল নং ৫১৪০/২০২১ এর মাধ্যমে ৯ শতক জমি ক্রয় করে নামজারি করেছেন। কিন্তু খতিয়ানের অন্য মালিকদের কেউই এ বিষয়ে জানতেন না, এমনকি কোনো নামজারি নোটিশও পাইনি।
তিনি আরও বলেন, এভাবে গোপনে দলিল ও নামজারি করে এক শ্রেণির মানুষ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের চেষ্টা চালাচ্ছে। প্রবাসে থাকায় ও বাড়িতে নারী ও বয়স্ক মালিকদের অসহায়ত্বয়ের সুযোগ নিয়ে এককভাবে লোকজন নিয়ে জোরপূর্বক বালু দিয়ে জমি ভরাট ও দখলের চেষ্টা চলছে।
অভিযুক্ত ইসমাইল হোসেন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি প্রবাসে থাকা অবস্থায় আমার স্ত্রী রাজেন্দ্র কৃষ্ণ দে-এর কাছ থেকে জমি কিনেছে। সাফ কবলা দলিল ও নামজারি করেছি। কারও সম্পত্তি দখল বা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের কোনো ইচ্ছা আমার নেই।
এদিকে খতিয়ানের পাঁচ মালিকের ওয়ারিশগণ দাবি করেন, বিক্রেতা রাজেন্দ্র প্যারালাইসিস রোগী। অসুস্থ হওয়ায় ইসমাইল হোসেনের স্ত্রী ও স্থানীয় কিছু লোক ভুল বুঝিয়ে জমিটি রাজেন্দ্র থেকে বণ্টননামা ছাড়া এককভাবে ক্রয় করেছেন। এতে করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি যেমন বিনষ্ট হবে তেমনি খতিয়ানের অপর মালিক গণ ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
দত্তপাড়া ইউনিয়ন ভূমি সহকারি কর্মকর্তা জহির উদ্দিন বলেন, বিষয়টি শুনেছি। জমি নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে বিরোধ রয়েছে। প্রয়োজনে নথিপত্র যাচাই করে প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
এ ঘটনায় এলাকার সাধারণ মানুষও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা প্রশাসনের কাছে দ্রুত তদন্ত ও আইনগত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন, যাতে কোনোভাবে এলাকায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট না হয়।