মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার পানিশাইল গ্রামের তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা বিকাশ চন্দ্র সরকার এখন স্থানীয়দের কাছে অনুপ্রেরণার এক উজ্জ্বল নাম। বাবার সঙ্গে প্রচলিত পদ্ধতিতে কৃষিকাজ করতে গিয়ে লোকসানের মুখোমুখি হলেও তিনি হাল ছাড়েননি। করোনাকালে ইউটিউব দেখে পলিশেড হাউসে প্লাস্টিক ট্রেতে চারা উৎপাদনের কৌশল শিখে শুরু করেন নতুন পথচলা।
প্রথমে ছোট শেডে মাত্র ১০ হাজার সবজির চারা উৎপাদন করেই সাফল্য পান তিনি। বর্তমানে এক বিঘা জমিতে নির্মিত তিনটি আধুনিক পলিশেড হাউসে নিয়মিত উৎপাদন হচ্ছে ব্রকলি, ফুলকপি, টমেটো, মরিচসহ নানা ফসলের চারা। তার খামারে নিয়মিত কাজ করছেন ৮–১০ জন স্থানীয় নারী–পুরুষ।
বিকাশ জানান, এক মৌসুমেই সব খরচ বাদে অন্তত ছয় লাখ টাকা লাভ হয়। শুধু আয় নয়, স্থানীয়দের কর্মসংস্থানও বাড়ছে। ভবিষ্যতে আরও শেড নির্মাণ এবং একটি কৃষি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ার পরিকল্পনাও রয়েছে তার।
পিতা রঞ্জিত চন্দ্র সরকার বলেন, শুরুতে সন্দেহ থাকলেও এখন ছেলের সাফল্যে তিনিও কাজে যুক্ত হয়েছেন। কৃষি অফিস থেকেও তারা নিয়মিত সহায়তা পাচ্ছেন।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, আগে দূর এলাকা থেকে আনতে হওয়া চারা অনেক সময় নষ্ট হয়ে যেত। বিকাশের উৎপাদিত চারার মান ভালো, শক্ত এবং ফলনও বেশি হয়। সিংগাইর ছাড়াও সাভার, দোহার, কেরানীগঞ্জ ও নবাবগঞ্জের কৃষকরাও তার চারার ওপর নির্ভরশীল। বিকাশের এই ‘চারা বিপ্লব’ শুধু তার পরিবারের নয়—পুরো এলাকার অর্থনীতিতেও ইতিবাচক পরিবর্তন আনছে।
সিংগাইর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হাবিবুল বাশার চৌধুরী বলেন, পলিশেড হাউসে উৎপাদিত চারা রোগবালাইমুক্ত ও মানসম্মত হয়। বিকাশের উদ্যোগ সিংগাইরে চারা উৎপাদনে নতুন দিগন্ত খুলেছে।