থাইল্যান্ডের ব্যাংকক হসপিটালের খ্যাতনামা চিকিৎসক ডা. শক্তি আর. পল সম্প্রতি অনির্ণীত রোগে (Undiagnosed Illnesses UDI) ভোগা রোগীদের সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ায় এক জোরালো সতর্কবার্তা দিয়েছেন। তিনি জানান, অনেক রোগী বারবার চিকিৎসা গ্রহণ করেও স্পষ্ট বা সঠিক রোগ নির্ণয় পাচ্ছেন না, ফলে দীর্ঘমেয়াদী কষ্ট, আর্থিক চাপ ও মানসিক অস্থিরতায় ভুগছেন।
সম্প্রতি প্রকাশিত এক নিবন্ধে ডা. পল ব্যাখ্যা করেছেন যে অনির্ণীত রোগের সাধারণ লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে-অজানা কারণে জ্বর, দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা, ওজন হ্রাস, বুকের চাপ, হৃদস্পন্দনের অস্বাভাবিকতা ইত্যাদি। এসব রোগীরা অকার্যকর চিকিৎসা ও ভুল নির্ণয়ের কারণে বছরের পর বছর দুর্ভোগ পোহান।
তিনি বলেন, UDI-এর মূল কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে উন্নত ডায়াগনস্টিক প্রযুক্তির সীমিত ব্যবহার, নিবেদিত চিকিৎসকের অভাব, সমন্বিত চিকিৎসা ব্যবস্থার দুর্বলতা এবং বিশেষজ্ঞদের মধ্যে সহযোগিতার ঘাটতি। এই সমস্যাগুলো কাটিয়ে উঠতে তিনি বহুবিভাগীয় হসপিটাল পরিবেশ, দ্বিতীয় মতামত (Second Opinion) গ্রহণ এবং প্রয়োজনীয় রেফারেল ব্যবস্থার উপর জোর দেন।
ডা. পল এক বিস্ময়কর ঘটনার উদাহরণ দেন-ঢাকার এক ১৬ বছর বয়সী কিশোরকে ভুলবশত রক্তের ক্যান্সার (লিউকেমিয়া) হিসেবে নির্ণয় করা হয়েছিল। পরবর্তীতে কঠোর পুনর্মূল্যায়ন এবং বিভিন্ন হসপিটালের যৌথ সহযোগিতার মাধ্যমে ডা. পল রোগটি *কালা-জ্বর* (একটি বিরল পরজীবী সংক্রমণ) হিসেবে শনাক্ত করেন এবং সফলভাবে চিকিৎসা সম্পন্ন করেন। এই উদাহরণটি দেখায় যে ধৈর্য, যথাযথ পরীক্ষা এবং চিকিৎসা সহযোগিতাই সঠিক সমাধান এনে দিতে পারে।
ব্যাংকক হসপিটাল হেডকোয়ার্টার্স-এ তার চিকিৎসা কার্যক্রমে ডা. পল এখন পর্যন্ত ২৫০টিরও বেশি UDI কেস নথিভুক্ত করেছেন এবং কিছু কেস প্রকাশও করেছেন। তার মতে, প্রায় ৯০% অনির্ণীত রোগ যথাযথ পরীক্ষা ও সমন্বিত চিকিৎসা প্রচেষ্টার মাধ্যমে নির্ণয় ও চিকিৎসা করা সম্ভব। তিনি বলেন- "আশা হারাবেন না। সঠিক চিকিৎসা পরিবেশ ও সময়মতো ফলো-আপের মাধ্যমে অনির্ণীত রোগও নির্ণয়যোগ্য এবং চিকিৎসাযোগ্য হয়ে উঠতে পারে।" অনির্ণীত রোগ (UDI) সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এবং নির্বাচিত কেস স্টাডি পড়তে, ডা. শক্তি আর. পল-এর ফেসবুক ও ইউটিউব চ্যানেল অনুসরণ করুন।