× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

জীববৈচিত্র্য ধ্বংস করে ঝাউগাছ কেটে কটেজ

এ.এম হোবাইব সজীব, কক্সবাজার

১৭ নভেম্বর ২০২৫, ১৩:০০ পিএম

প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও জীববৈচিত্র্যের লীলাভূমিতে পরিণত হওয়া কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার উপদ্বীপ সোনাদিয়া।  যেটা কিনা বর্তমানে ভয়াবহ পরিবেশগত হুমকির মুখে পড়েছে।  দ্বীপটিতে হাজার হাজার ঝাউগাছ কেটে পর্যটকদের জন্য  সম্পুর্ন অবৈধভাবে আবারও নতুন করে কটেজ নির্মাণ করা হচ্ছে।  এতে দ্বীপের জীববৈচিত্র্য, প্যারাবন, ঝাউবনসহ পরিবেশ ঝুঁকির মুখে পড়লেও  স্থানীয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে কোনো দৃশ্যমান ব্যবস্থা নিতে না পারায় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ - একটি সংগঠিত চক্র দীর্ঘদিন ধরে সরকারি জমি দখল করে কটেজ, বাঁশ-কাঠের স্থাপনা ও বিভিন্ন পর্যটন সুবিধা নির্মাণ করছে। এসব স্থাপনা নির্মাণে নেই পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র, নেই বন বিভাগের অনুমোদন, এমনকি উপজেলা প্রশাসনের কোনো অনুমতিও।

পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সোনাদিয়া দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পরিবেশগত সংরক্ষণ এলাকা। এখানে অনুমোদনহীন কটেজ ব্যবসা সামুদ্রিক কাছিম, পরিযায়ী পাখি, বালিয়াড়ি ও উপকূলীয় ইকোসিস্টেমের জন্য বড় হুমকি।

স্থানীয়দের প্রশ্ন - অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ প্রকাশ্যে চললেও উপজেলা প্রশাসন কেন তা বন্ধে কার্যকর অভিযান পরিচালনা করছে না। একই সঙ্গে দ্বীপের অভ্যন্তরে গড়ে উঠছে বেশ কয়েকটি  মহিষের খামার। যার প্রভাব পড়ছে দ্বীপের মাটি, জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশের উপর।

জানা যায়, ঝাউগাছ নিধন করে গড়ে উঠা ওইসব অবৈধ কটেজে সারাবছর পর্যটকদের আগমন চোখে পরার মতো। তারা এসে সোনাদিয়াতে রাত্রী যাপন করেন। এমন অবস্থায় আগত সকল পর্যটকদের জন্য নেই কোন নূন্যতম নিরাপত্তা ব্যাবস্থা ও চিকিৎসা সেবা।

অপরদিকে আগত সকল পর্যটকদের ভিড়ে ঘুরতে আসার নামে অনেকেই আসেন মাদক কারবারীদের সাথে দেখা সাক্ষাত ও মাদক আদান প্রদান করতে- এমনটাই জানা যায় স্থানীয়দের বরাত দিয়ে।

স্থানীয় পরিবেশবাদী সংগঠনের নেতা আবু বক্কর ছিদ্দিক বলেন- সোনাদিয়া ঝাউবনের গভীরে একাধিক কটেজ নির্মাণ করা হচ্ছে বিগত কয়েক বছর ধরে যা কোনো পূর্বানুমতি ছাড়াই গড়ে তোলা হয়েছে। দ্বীপের পশ্চিম ও দক্ষিণ অংশে কটেজ তৈরির জন্য বেপরোয়া ঝাউগাছ কাটা হচ্ছে, যার ফলে প্রাকৃতিক ঝুঁকি বেড়েই যাচ্ছে। ঝাউগাছ মূলত ভূমিক্ষয় রোধ ও ঘূর্ণিঝড় থেকে দ্বীপ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাছাড়া তিনি আরও বলেন, এসব কটেজ প্রকল্প দ্বীপের প্রতিবেশ ব্যবস্থাকে হুমকির মুখে ফেলছে। ইতোমধ্যে বহু পাখি ও বন্যপ্রাণী তাদের আবাসস্থল হারাচ্ছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়,  দ্বীপের পূর্বাঞ্চলে দেখা গেছে মহিষ চারণের প্রবণতা। এদের জন্য পরিষ্কার করা হচ্ছে বন ও ঘাসের জমি। এই ‘মহিষের খামার’ ধীরে ধীরে দ্বীপের ভেতরের মাটি ক্ষয় করছে এবং লবণাক্ততা বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা কৃষিকাজ ও উদ্ভিদজগতের জন্য মারাত্মক হুমকি বলে মনে করছেন পরিবেশ সচেতন ব্যক্তিরা।

সোনাদিয়া বাসিন্দাদের একাংশ বলছেন- জীবিকার জন্য পর্যটন ও পশুপালন প্রয়োজন, তবে এটি হতে হবে পরিকল্পিতভাবে। তারা এ নিয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন যাতে অপ্রয়োজনীয় গাছ নিধন ও ভূমি ধ্বংস বন্ধ হয়।

মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হেদায়েত উল্ল্যাহ্ বলেন, বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে, তদন্তের মাধ্যমে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.