চকরিয়ার মানিকপুর ও লামার ফাইতং এলাকায় সরকারি জমি ও পরিবেশ রক্ষার স্বার্থে পরিবেশ অধিদপ্তরের ভ্রাম্যমাণ অভিযানে তিনটি অবৈধ ইটভাটার চুল্লি ভেঙে গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। গতকাল রোববার (১৬ নভেম্বর) সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত এই অভিযান পরিচালনা করেন চট্টগ্রাম পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক মো. জমির উদ্দিন এবং ঢাকা পরিবেশ অধিদপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রেজাউল করিম।
অভিযানে লামা উপজেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী, র্যাব, ফাইতং ফাঁড়ি পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস এবং বনবিভাগের কর্মকর্তারা অংশ নেন। অভিযানকালে মো. গিয়াস উদ্দিনের মালিকানাধীন এ.এম.বি-১, এ.এম.বি-২ ও এ.এম.বি-৩ নামের তিনটি ইটভাটার চুল্লি ভেঙে ফেলা হয় এবং অবৈধ কাঠামো ধ্বংস করা হয়।
স্থানীয়রা অভিযানের আগে ভাটা বন্ধ না করার দাবিতে মানববন্ধন ও পথসভা করেন। তারা জানান, ইটভাটাগুলো থেকে তাদের জীবিকা নির্বাহ হতো। তবে পরিবেশ অধিদপ্তর জানায়, সরকারি জমি ও জনস্বার্থ রক্ষার জন্য এ ধরনের অভিযান নিয়মিত চালানো হবে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক মো. জমির উদ্দিন বলেন, অনুমোদনবিহীন ইটভাটা পরিচালনা পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। ধোঁয়া ও ধুলার কারণে আশপাশের এলাকার ফসল, ফলের বাগান এবং বসতঘরও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাই অবৈধ কার্যক্রম প্রতিহত করতে অভিযান অব্যাহত থাকবে।
স্থানীয় বনবিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, এসব ইটভাটার কারণে বনভূমি অবৈধভাবে দখল ও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর যৌথভাবে পাহাড়ি বন ও সরকারি জমি রক্ষা করতে নিয়মিত অভিযান চালাবে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের সূত্র জানায়, লামা-চকরিয়ার বিভিন্ন এলাকায় অনুমোদনবিহীন ইটভাটার বিরুদ্ধে আরও বড় ধরনের অভিযান পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এই অভিযানগুলো জনস্বার্থ ও পরিবেশ রক্ষার পাশাপাশি স্থানীয়দের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
স্থানীয় সমাজকর্মী ও পরিবেশবিদরা বলেন,পরিবেশ অধিদপ্তরের এই অভিযান গুরুত্বপূর্ণ, কারণ অবৈধ ইটভাটা চালু থাকলে পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ে। তবে স্থানীয়দের জীবিকার কথাও উপেক্ষা করা যাবে না। সরকারের উচিত বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা, যাতে কেউ অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হন।