× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

মাদ্রাসায় কর্মচারি নিয়োগে ব্যাপক অনিময়

তানোর(রাজশাহী)প্রতিনিধি

১৭ নভেম্বর ২০২৫, ১৪:৪৭ পিএম

রাজশাহীর তানোরের সীমান্তবর্তী মান্দার ভাঁরশো ইউপির মজিদপুর ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসায় কর্মচারি নিয়োগে ব্যাপক অনিময় ও অর্থ-বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি বিধি উপেক্ষা করে এই মাদ্রাসার সহসভাপতি আব্দুল কাইউমের যোগসাজশে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নুরুল আলম জামায়াত-বিএনপি নেতার নাম ভাঙিয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার চেষ্টা করেছেন। তবে ঘটনা বুঝতে পেরে বাধ সেধেছেন সভাপতি। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের ঘাপলা ধরতে পেরে সাজানো নিয়োগে স্বাক্ষর করেননি তিনি। এ নিয়ে স্থানীয়ভাবে উত্তেজনা বিরাজ করছে। স্থানীয়দের চাপের মুখে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও সহসভাপতি কয়েকজনের কাছ থেকে আগাম নেওয়া টাকার কিছু ফেরৎ দিয়েছেন বলে শোনা যাচ্ছে ।

জানা গেছে, মাদ্রাসায় অফিস সহকারী-কাম কম্পিউটার, ল্যাব সহকারী ও আয়া পদে নিয়োগের জন্য বিধি অনুসরণ করেই সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন প্রকাশ করা হয়। এতে তিনটি পদে ২৫ জন আবেদন করেন। এরমধ্যে সভাপতির অসুস্থতার সুযোগ নিয়ে মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ইচ্ছেমত নিয়োগ বোর্ড গঠন করে নিয়োগ পরীক্ষার নাটক মঞ্চস্থ করে। প্রশ্ন প্রণয়ন, লিখিত পরীক্ষার খাতা মূল্যায়ন,  ভাইভা নেওয়া  থেকে শুরু করে সকল কার্যক্রম অধ্যক্ষ ও এক্সটার্নাল মিলে করে ফেলেন। এমনকি সভাপতির স্বাক্ষর ও অনুমতি ছাড়া তারা ফলাফলও ঘোষণা করেন। কৌশলে মেধাবী প্রার্থীদের বাদ দিয়ে কম নম্বর পাওয়া প্রার্থীদের নিয়োগ চুড়ান্ত করেন তারা। এর মধ্যে আয়া পদে স্থানীয় জামায়াতের মধ্যস্থতায় মোরশেদা নামের একজনকে চূড়ান্ত করা হয়। অফিস সহাকারী কাম-কম্পিউটার অপারেটর পদে মোতাহার আলী নামের একজন উত্তীর্ণ হলেও চূড়ান্ত করা হয় কম নম্বর পাওয়া সাইফুল ইসলামকে। আর ল্যাব সহকারী পদে জাহিদুল ইসলাম নামের একজন উত্তীর্ণ হলেও শিফা (সহ-সভাপতির মেয়ে) নামের একজনকে চূড়ান্ত করা হয়েছে। যদিও অনিয়মের বিষয় জানতে পেরে এ নিয়োগে সভাপতি সাক্ষর করেননি।

এদিকে স্থানীয়রা মাদ্রাসার মতো পবিত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মচারী নিয়োগে এমন অনিয়মের ঘটনায় বিক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, তারা সহসভাপতি আব্দুল কাইউম ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নুরুল আলমের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন। তারা তাদের দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদুক) হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাস্যবাদের দাবি করেছেন।

অন্যদিকে, পরীক্ষায় সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েও নিয়োগ বঞ্চিতরা অভিযোগ করেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নুরুল আলম প্রথম দুটি পদে ১৪ লাখ টাকা আগাম নিয়েও নিয়োগ দেননি। তারা বলেন, স্থানীয় বিএনপি নেতারা নাম ভাঙিয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নুরুল আলম পছন্দের প্রার্থীদের কাছ থেকে দ্বিগুন টাকা নিয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়া চুড়ান্ত করেছেন।

ভুক্তভোগী নিয়োগ প্রার্থী মোতাহার আলি বলেন, নিয়োগ না দিয়ে তাকে টাকা পাঁচ লাখ ফেরত দিয়েছেন অধ্যক্ষ। বাকী টাকা পরে দেওয়ার কথা রয়েছে। জাহিদুল ইসলাম ও ইকবাল হোসেনকেও কিছু টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে। 

এ ব্যাপারে যোগযোগ করা হলে মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নুরুল আলম  বলেন, নিয়োগের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলেও কোনো সাক্ষর না হওয়ায় তা পেন্ডিং আছে। টাকা নেওয়া ও ফেরত দেওয়ার কথা তিনি অস্বীকার করেন।

এ বিষয়ে মাদ্রাসার সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, হঠাৎ তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন। চিকিৎসকের পরামর্শে বেডরেস্টে থাকাকালীন তার অগোচরেই নিয়োগ বোর্ড সম্পন্ন করে নিয়োগ দেওয়ার সব প্রক্রিয়া সেরে ফেলেন অধ্যক্ষ। নিয়োগ পরীক্ষার দিন তিনি কাগজপত্র যাচাইকালে পুরো প্রক্রিয়ায় অনিয়ম ও অর্থবাণিজের বিষয় টের পেয়ে এ নিয়োগে সম্মতি থেকে বিরত থাকেন। 

তিনি বলেন, জামায়াত-বিএনপির স্থানীয় নেতাদের যোগসাজসে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অনিয়মের মাধ্যমে নিয়োগ প্রক্রিয়া করে ফেলেছেন। তিনি এ নিয়োগে সাক্ষর করবেন না বলে জানিয়ে বলেন, এটি স্থগিত করার জন্য তিনি সংশ্লিষ্টদের কাছে আবেদন করবেন। এখানে অনিয়মের মাধ্যমে কোনো নিয়োগ হবে না বলে জানান তিনি।


Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.