মাদারীপুরের কালকিনি পৌরসভা ঝাউতলা কুমারডুবি এক সময়ের চলাচলযোগ্য এই খাল আজ পরিণত হয়েছে দুর্গন্ধময় নালায়। খালের স্বাভাবিক পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বর্ষা মৌসুমে ভয়াবহ জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে, আর শুষ্ক মৌসুমে বাড়ছে পরিবেশ দূষণ।
সরেজমিনে দেখা যায়, চর-ঝাউতলা এলাকার পালপাড়া-সংলগ্ন খালে বেপরোয়াভাবে ফেলা হচ্ছে পৌরসভার গৃহস্থালি ও বাজারের বর্জ্য। পাশাপাশি প্রভাবশালী ব্যক্তি ও ব্যবসায়ী মহল খালের জায়গা ভরাট করে স্থাপনা নির্মাণ করেছেন—ফলে খালের প্রশস্ততা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এক সময় এই খালে নৌকা চললেও এখন তা আবর্জনায় ভরাট হয়ে গেছে, অথচ দখলদারদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা নেই।
দূষণের ফলে খালের পানি কালো রং ধারণ করেছে এবং বাজার-সংলগ্ন এলাকায় তীব্র দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। এ কারণে মশা-মাছির উপদ্রব বেড়ে শিশু ও বৃদ্ধদের মধ্যে চর্মরোগ, শ্বাসতন্ত্রের সমস্যা ও পেটের রোগের মতো স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে।
অন্যদিকে, খালটির অস্তিত্ব-সংকট সরাসরি কৃষি ব্যবস্থাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। চর-ঝাউতলা, উত্তর রাজদী, জোনারদ্বন্দ্বীসহ আশেপাশের এলাকায় পানি নিষ্কাশনের একমাত্র মাধ্যম ছিল এই খাল। কিন্তু খাল ভরাট হয়ে যাওয়ায় প্রতি বছর অতিরিক্ত পানি জমে বোরো, আমন ও রবি মৌসুমের বিপুল পরিমাণ ফসল নষ্ট হচ্ছে। স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, কিছু মহল খালের মুখে বাঁধ দিয়ে কৃষকদের কাছে পানি বিক্রি করছে, ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল হচ্ছে। নাগরিক সমাজের দাবি-দখল ও দূষণ রোধে প্রশাসনের কার্যক্রম অত্যন্ত ধীরগতি।
তবে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইফ-উল-আরেফীন জানিয়েছেন, খুব শিগগিরই একটি বড় প্রকল্পের আওতায় খাল খনন ও সৌন্দর্যবর্ধন কাজ শুরু হবে, যা খালের হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এখন এলাকার মানুষ অপেক্ষা করছে -কবে কার্যকরভাবে শুরু হবে ‘কুমার ডুবি’ খাল রক্ষার উদ্যোগ।