× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

আর্থিক ক্ষতির মুখে বিনিয়োগকারীরা

অরক্ষিত মৌলভীবাজার বিসিক, একাধিক শিল্প প্রতিষ্ঠানে চুরি, বিনিয়োগকারীদের কপালে চিন্তার ভাঁজ!

মো: আব্দুল কাইয়ুম,মৌলভীবাজার

১৮ নভেম্বর ২০২৫, ১৫:৪২ পিএম । আপডেটঃ ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ১৫:৪৩ পিএম

ছবি: সংবাদ সারাবেলা।

মৌলভীবাজার শহরতলীর গোমড়া এলাকায় অবস্থিত বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) এর ৯টি শিল্প কারখানায় গত দু‘সাপ্তাহে অস্বাভাবিক চুরি সংঘটিত হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ধারাবাহিক চুরির ঘটনায় অরক্ষিত হয়ে পড়েছে বিসিক এর সবকটি শিল্প কারখানা। অভ্যান্তরিণ নিরাপত্তা নিয়েও তৈরি হয়েছে সংশয় ও নানা প্রশ্ন। একের পর এক শিল্প কারখানায় চুরির ঘটনায় কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করা কারখানা মালিকদের মাঝে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট দফতরে অভিযোগ ও একাধিকবার যোগাযোগ করেও মিলছেনা প্রতিকার।

চলতি মাসের ৩ নভেম্বর থেকে ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত বিসিক শিল্পনগরীর উৎপাদনে থাকা ৩৭টি শিল্প কারখানার মধ্যে আগর-আতর কারখানা,প্লাস্টিক শিল্প,খাদ্য পণ্য, ভোজ্য তেল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সহ অন্তত ৯টি কারখানায় চুরি সংঘটিত হয়েছে। কর্তৃপক্ষের দুর্বল নিরাপত্তা ব্যবস্থার কারণে রাতের আধারে কারখানাগুলোর সীমানা প্রাচীর টপকিয়ে চুরেরা জানালার গ্রীল কেটে ভিতরে প্রবেশ করে নিয়ে যাচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রপাতি সহ দামি দামি মেশিন। এতে লাখ লাখ টাকা ক্ষতির মুখে পড়েছেন কারখানা মালিকরা।

সরেজমিন ঘুরে বিসিক শিল্পনগরীর একাধিক কারাখানা মালিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, সর্বশেষ চলতি মাসের ১৫ নভেম্বর খাদ্য  উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বাউন্টি ফুড এন্ড ভেবারেজ লিমিটেড এর কারখানায় ভোররাতে জানালার গ্রীল কেটে ভিতরে চোর প্রবেশ করে গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রপাতি সহ বেশ কিছু জিনিসপত্র নিয়ে যায়। পরদিন কারখানা কর্তৃপক্ষ খবর পেয়ে কারখানায় গিয়ে এমন চিত্র দেখতে পান। পরে ভাঙ্গা দরজা-জানালা মিস্ত্রি দিয়ে মেরামত করে কর্তৃপক্ষ।

একই কারখানায় ১৬ নভেম্বর রাতে ঘটে আবারও চুরির ঘটনা। ওই রাতে চোরেরা কারখানার প্রধান ফটকের তালাবদ্ধ গেট ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে মেরামত করা জানালা আবারও ভেঙে কারখানার ভিতর প্রবেশ করে কয়েক লাখ টাকা দামের আচার তৈরির প্যাকেজিং মেশিন নিয়ে যায়। ১৭ নভেম্বর কারখানার শ্রমিকরা কাজে এসে রাতে চুরি হওয়ার বিষয়টি বুঝতে পেরে মালিক পক্ষকে জানান। কয়েক কোটি টাকা বিনিয়োগ করে এখানে কারখানাটি গড়ে তুলেন মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির নেতা ও সিনিয়র সাংবাদিক বকসী মিছবাউর রহমান ও তাঁর ভাই বকসী আলাউর রহমান । এটি তাদের পারিবারিক প্রতিষ্ঠানও।

বাউন্টি ফুড এন্ড ভেবারেজ লিমিটেড এর স্বত্তাধিকারী বকসী আলাউর রহমান জানান, গত বছরের জুলাই আন্দোলন চলাকালেও কারখানায় চুরি সংঘটিত হয়। ওই সময় কারখানার প্রায় আড়াই লাখ টাকার দামি মেশিনারী সহ গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রপাতি নিয়ে যায়। একবছরের মাথায় এবারও দুইদিনে আরও কয়েকলাখ টাকার যন্ত্রপাতি সহ প্যাকেজিং মেশিন চুরি হয়। তিনি বলেন এসব ঘটনার প্রতিকার না পেলে বার বার চুরির ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটতে থাকবে। আমাদের কারখানা পুরোটাই নিরাপত্তাহীন, শ্রমিকরাও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।

একই প্লটে বিডি কোং নামে ভোজ্য তেল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেন মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির নেতা ও সিনিয়র সাংবাদিক বকশী মিছবাহ উর রহমান। ওই কারখানায়ও ১৫ নভেম্বর রাতে লোহার দরজার ভেঙে ঘাণি ভাঙার মেশিনের যন্ত্রপাতি সহ বেশ কিছু যন্ত্রপাতি নিয়ে যায়। চুরির ওই ঘটনায় প্রায় লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন বকশী মিছবাহ উর রহমান। 

সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, অভ্যান্তরিণ নিরাপত্তা সংকট, স্থানীয় চোর চক্রের উপদ্রব সহ নানা সমস্যায় ঝর্ঝরিত শিল্পনগরীর কারখানা মালিকদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে। এছাড়াও  এই শিল্পনগরীতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার অভাবে বিভিন্ন রাস্তার পাশ জুড়ে ময়লা-আবর্জনার স্তূপ। রাস্তা ও ড্রেনগুলো সংস্কারের কারণে ভিতরর সবকটি সড়ক ধুলাবালি আর খানাখন্দেভরা।  বিসিক শিল্পনগরীর একাধিক শিল্পপ্রতিষ্ঠানের উদ্যোক্তা শামিম আক্তার মিন্টু বলেন, আমার কারখানা সহ অন্তত ৯ টি কারখানায় চোর প্রবেশ করে নিয়ে গেছে প্রয়োজন যন্ত্রপাতি সহ মালামাল। থানায় অভিযোগ দিয়েছি। এখনো কোন প্রতিকার পাইনি।  বিসিক শিল্পনগরী কর্মকর্তা মাসুদ হোসেন বলেন, আমরা পরিদর্শন করে জানতে পেরেছি ৩ টি কারখানায় চুরি হয়েছে। তিনি বলেন, নিজস্ব নিরাপত্তা প্রহরী না থাকা ও সিসি ক্যামেরা না থাকার কারণেই ঘটছে এসব চুরির ঘটনা। তবে নিরাপত্তার বিষয়ে এখানে পুলিশি টহল বাড়ানোর জন্য প্রশাসনের সাথে আমরা আলাপ-আলোচনা করছি। 

মৌলভীবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গাজী মাহবুবুর রহমান বলেন,  বিষয়টি নিয়ে পুলিশ কাজ করছে। কীভাবে চুরির ঘটনা ঘটলো তা তদন্ত হচ্ছে। তিনি বলেন, এলাকাটি সংরক্ষিত হওয়ায় ওখানো পুলিশ সবসময় যেতে পারেনা। তবুও পুলিশি টহল বাড়ানোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।  ১৯৯৮ সালে শহরতলির গোমড়া এলাকায় পনেরো একর জমির ওপর নির্মিত হয় বিসিক শিল্পনগরী। যেখানে রয়েছে মোট ১০১ টি পল্ট। যার মধ্যে ৯৯টি বরাদ্দযোগ্য কারখানার মধ্যে বর্তমানে ৩৭ টি শিল্পকারখানা চালু রয়েছে । 

Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.