ধামরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক এবং বালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মজিবর রহমানকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের দেশব্যাপী নাশকতা পরিকল্পনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জুয়েল মিঞা গতকাল বুধবার দুপুরে মজিবর রহমানের গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
পুলিশ জানায়, গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে সাভারের জাহাঙ্গীরনগর ইউনিভার্সিটি কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটি এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযানে নেতৃত্ব দেন থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) জাকির আল আহসান ও এসআই ইমরান হোসাইন।
এর আগে, ধামরাই-আশুলিয়া এলাকায় ছাত্রজনতার ওপর গুলি চালিয়ে হত্যা, সহিংসতা উসকে দেওয়া এবং সাভার-আশুলিয়া অঞ্চলসহ বিভিন্ন স্থানে নাশকতার পরিকল্পনায় সরাসরি সম্পৃক্ততার তথ্য পায় পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃত মজিবর রহমান (৫০) ঢাকা জেলার ধামরাই উপজেলার বালিয়া ইউনিয়নের বাস্তা নয়াচর গ্রামের মৃত আব্দুস সামাদের ছেলে। তিনি আওয়ামী লীগ মনোনীত বালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান এবং নিষিদ্ধ ঘোষিত বৃহত্তর ঢাকা জেলা আ.লীগের সাবেক সহ-সভাপতি। বর্তমানে নিষিদ্ধ ধামরাই উপজেলা আ.লীগের যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক এবং বালিয়া ইউনিয়ন আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন। তিনি ঢাকা জেলা আ.লীগের সভাপতি ও ধামরাইয়ের সাবেক এমপি বেনজীর আহমেদের ঘনিষ্ঠ অনুসারী হিসেবেও পরিচিত।
পুলিশ জানান, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আত্মগোপনে চলে যান মজিবর। পরে সাভারের জাহাঙ্গীরনগর ইউনিভার্সিটি কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটি এলাকায় পল্লী চিকিৎসকের পরিচয়ে একটি দোকান ভাড়া নিয়ে ফার্মেসি পরিচালনা শুরু করেন তিনি। ফার্মেসির আড়ালে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে সমন্বিত নাশকতা পরিকল্পনা,মিছিল, গাড়ি পোড়ানোসহ একাধিক অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালাতেন বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন তিনি।
পুলিশ আরও জানায়, গত ৬ নভেম্বর সাভারের বলিয়াপুর এলাকায় নাশকতার ঘটনা ঘটায় আওয়ামী লীগের একদল দুর্বৃত্ত। এর পরের দিন সন্ত্রাসবিরোধী আইনে সাভার মডেল থানায় মামলা হলে তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মো. আসাদুজ্জামান ‘মজিবরের’ সংশ্লিষ্টতা নিশ্চিত হন। এরপর তাকে আটক করতে অভিযান শুরু করে পুলিশ।
সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জুয়েল মিঞা জানান, মজিবরের কাছ থেকে নাশকতা পরিকল্পনা, সংগঠনের অর্থায়ন ও সশস্ত্র সদস্য নিয়োগ সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। এসব তথ্য যাচাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। গ্রেপ্তারের পর তাকে সাত দিনের রিমান্ড আবেদনসহ আদালতে পাঠানো হয়েছে।