× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

চকরিয়ায় শ্রমিকদের সঙ্গে যৌথবাহিনীর সংঘর্ষ, আহত ২০

ডেস্ক রিপোর্ট।

২০ নভেম্বর ২০২৫, ১৬:৫৪ পিএম

ছবি: সংগৃহীত।

লামার ইটভাটায় অভিযানে যাওয়ার পথে চকরিয়ায় শ্রমিকদের সঙ্গে যৌথবাহিনীর ব্যাপক সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। সংঘর্ষের সময় একাধিক গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। সড়কের দুই কিলোমিটারজুড়ে গাড়িসহ বিভিন্ন বস্তু ফেলে ব্যারিকেড সৃষ্টি করা হয়।

অভিযান পরিচালনা করে ছাত্রদল নেতাসহ পাঁচজন আটক করেছে যৌথবাহিনী।

আজ বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) সকাল ১০টার দিকে ঢাকা থেকে আসা পরিবেশ অধিদপ্তরের বিশেষ টিম যৌথবাহিনীর সদস্যদের (সেনাবাহিনী, পুলিশ র্যাব, বিজিবি) সমন্বিত সহায়তায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে এই উচ্ছেদ অভিযান চালাতে যায় পরিবেশ অধিদপ্তরসহ বান্দরবান জেলা প্রশাসন। 

শ্রমিকরা জানান, বিকল্প কর্মসংস্থান সৃষ্টি না করে ইটভাটা উচ্ছেদের বিরুদ্ধে তারা এই অবস্থান নিয়েছেন।

জানা গেছে, কক্সবাজারের চকরিয়া ও বান্দরবানের লামার সীমান্তবর্তী ফাইতং ইউনিয়নে ইটভাটা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করতে গিয়ে চকরিয়ায় প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়ে পরিবেশ অধিদপ্তর এবং যৌথবাহিনীর আভিযানিক দল।

এ সময় ইটভাটা শ্রমিকদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। ঘণ্টাব্যাপী ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলাকালে উভয়পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। শ্রমিকরা ইট-পাটকেল ছুড়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর কয়েকটি যানবাহনও ভাঙচুর করেন। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে আটক করা হয় ছাত্রদল নেতাসহ ইটভাটা শ্রমিকসহ পাঁচজনকে।

অপরদিকে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর ছোড়া টিয়ারশেল ও রাবার বুলেটের আঘাতে ইটভাটার বেশ কয়েকজন শ্রমিক আহত হয়েছেন বলে তাদের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। তবে উভয়পক্ষের আহতদের নাম-ঠিকানা এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত পুলিশ সরবরাহ করতে পারেননি। এই পরিস্থিতিতে বেলা একটার দিকে এই আভিযানিক দল ব্যর্থ হয়ে ফিরে যেতে বাধ্য হন।

প্রত্যক্ষদর্শী এবং সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, বান্দরবানের লামার ফাইতং ইউনিয়নে অন্তত ২০টি ইটভাটায় অভিযান চালানোর জন্য বুলডোজার, এক্সেভেটর নিয়ে রওনা দেন পরিবেশ অধিদপ্তরসহ প্রশাসনের লোকজন। এ সময় তারা ফাইতং ইউনিয়নে যাওয়ার জন্য প্রবেশস্থল চকরিয়া-মানিকপুর সড়কের কাকারার বাদশার টেক নামক স্থানে পৌঁছলে আগে থেকে ওই এলাকায় শত শত ইটভাটার শ্রমিক সড়কে শুয়ে পড়েন।

এমনকি বাদশার টেক থেকে মানিকপুর পর্যন্ত অন্তত দুই কিলোমিটার সড়কের ইট ফেলে এবং অর্ধ শতাধিক ট্রাক, ডাম্পারসহ বিভিন্ন বস্তু ফেলে অবরোধ সৃষ্টি করে। এই পরিস্থিতিতে পরিবেশ অধিদপ্তরের ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে যাওয়া ভ্রাম্যমাণ আদালতের আভিযানিক দল ব্যাপক প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়ে। এ সময় থেমে থেমে ইটভাটার ক্ষুদ্ধ শ্রমিকদের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়াসহ ব্যাপক সংঘর্ষ চলে ঘণ্টাব্যাপী। এতে উভয়পক্ষে অন্তত ২০ জন আহত হন।

অভিযানে বাধা প্রদানকারী ইটভাটার ক্ষুদ্ধ শ্রমিকরা জানান, ফাইতংয়ে অন্তত ২০টি ইটভাটায় হাজারো শ্রমিক কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। বর্তমানে এসব ইটভাটা চালুও করা হয়েছে এবং তারা কাজ করছেন। কিন্তু বিকল্প কর্মসংস্থান সৃষ্টি না করে উল্টো অভিযানের নামে ইটভাটা গুঁড়িয়ে দিলে পরিবারের সন্তান-সন্ততি নিয়ে পথে বসতে হবে। শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে না পারলে চুরি-ডাকাতিসহ অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি পেয়ে এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হবে। তাই জান থাকতে তারা এই অভিযান চালাতে দেবেন না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ইটভাটার মালিক বলেন, ‘বর্তমানে প্রতিটি ইটভাটায় কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করে ফেলেছেন। একেকটি ভাটায় কম করে হলেও পাঁচ শতাধিক শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। এই অবস্থায় যদি অভিযান চালিয়ে ইটভাটাগুলোর কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয় তাহলে শত কোটি টাকার সম্পদের তো ক্ষতি হবেই, হাজারো শ্রমিক কর্ম হারিয়ে পথে বসবে। তাই মানবিক দিক বিবেচনা করে চলতি মৌসুমে যাতে এসব ইটভাটা গুঁড়িয়ে দেওয়া না হয় সেজন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি।’

লামা থানার ওসি তোফাজ্জল হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘অবৈধ ইটভাটায় অভিযানে যাওয়ায় সময় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকারী টিমের ওপর দুর্বৃত্তরা হামলা করেছে। হামলার ঘটনায় জড়িত পাঁচজনকে আটক করে চকরিয়া থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এই ঘটনায় পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে চকরিয়া থানায় মামলা রুজু করা হবে।’

আটক পাঁচজনকে সোপর্দ করার বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে চকরিয়া থানার ওসি মো. তৌহিদুল আনোয়ার বলেন, ‘বান্দরবানের লামার ফাইতংয়ে ইটভাটা উচ্ছেদ অভিযানে যাওয়ার সময় চকরিয়ার কাকারা বাদশার টেক এলাকায় সংঘটিত ঘটনায় জড়িত ছাত্রদল নেতাসহ পাঁচজনকে আটকের পর থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। এই ঘটনায় লিখিত এজাহার প্রাপ্তিসাপেক্ষে আটকদের বিরুদ্ধে পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

অভিযানের প্রথমদিন গত রবিবার বাঁধাপ্রাপ্ত হওয়ার ঘটনায় বান্দরবানের লামা থানায় ১১ জনের নাম উল্লেখ এবং আরও অজ্ঞাত ৪০০ জনের নামে মামলা রুজু করেন পরিবেশ অধিদপ্তরের বান্দরবান জেলা কার্যালয়ের পরিদর্শক মোহাম্মদ নুর উদ্দিন। মামলায় এজাহার নামীয় আসামি করা হয়- এবি পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা এবি ওয়াহিদ, এনসিপি’র চট্টগ্রাম মহানগরের যুগ্ম সমন্বয়কারী এরফানুল হককে। এ ছাড়াও ইটভাটা মালিক মিজবাহ উদ্দিন মিন্টু, মো. মহিউদ্দিন, শওকত ওসমান, মুজিবুল হক চৌধুরী, খাইয়ের উদ্দিন মাস্টার, মিজান, জলিল, আলম মেম্বার ও জহির।

Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.