× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক সহ ১২ কর্মকর্তাকে আদালত অবমাননার শোকজ

আফতাব উদ্দিন

২০ নভেম্বর ২০২৫, ১৮:৫৯ পিএম

সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক (ডিসি) ড. মো. ইলিয়াস মিয়া, তাহিরপুরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মেহেদী হাসান মানিক, বিশ্বম্ভরপুরের ইউএনও মেরিনা দেবনাথ ও এসিল্যান্ড (ভূমি) সাহরুখ আলম শান্তনুসহ ১২ জন কর্মকর্তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হয়েছে। খনিজ বালি, পাথর চুরি ও লুট ঠেকাতে উচ্চ আদালতের আদেশ অবমাননার অভিযোগে এ নোটিশ পাঠানো হয়।

মঙ্গলবার হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি আসিফ হাসানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে শুনানি শেষে অভিযুক্তদের নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে লিখিত ব্যাখ্যা দাখিল করতে আদেশ দেওয়া হয়। বিশ্বম্ভরপুরের মিয়ারচরের বাসিন্দা খুরশেদ আললের একটি পিটিশনের প্রেক্ষিতে আদালত এ আদেশ দেন।

রিটের বাদী উচ্চ আদালতে অভিযোগ করেন, হাইকোর্টের পূর্বের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ইজারার নীতিমালার শর্তাদি ভঙ্গ করে জাদুকাটা বালি মহাল-১, ২ ও মহালবহির্র্ভূত সীমানায় জাদুকাটা নদীর পাড় কাটা, সেইভ মেশিনে খনিজ বালি-পাথর চুরি, লুটকাণ্ডে মোটা অঙ্কের ঘুস নিয়ে গোপনে সহযোগিতা করছেন সুনামগঞ্জের ডিসি, তাহিরপুর এবং বিশ্বম্ভপুরের ইউএনও, এসিল্যান্ড, এএসপি (তাহিরপুর সার্কেল), ওসি, এসিল্যান্ডসহ তাদের অধীনে দায়িত্বরতরা।

এসব লুটপাট-চুরির ঘটনা আড়াল করতে সুনামগঞ্জ জেলা, উপজেলা প্রশাসন, স্থানীয় থানা পুলিশের পক্ষ থেকে কালেভদ্রে লোকদেখানো ‘অভিযান’ পরিচালনা করা হয়। এমন নানামুখী নাটকীয়তার অভিযোগও আদালতের নজরে আনা হয়েছে।

পিটিশনে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া, পুলিশ সুপার তোফায়েল আহম্মেদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সমর কুমার পাল, রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর সোয়াদ সাত্তার চৌধুরী, ইউএনও মেহেদী হাসান মানিক, বিশ্বম্ভরপুরের ইউএনও মেরিনা দেবনাথ, সুনামগঞ্জ সদরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ছাতক চাকমা, তাহিরপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার প্রণয় রায়, তাহিরপুরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহরুক আলম শান্তুনু. বিশ্বম্ভরপুরের সহকারী কমিশনারের (ভূমি) অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা মেরিনা দেবনাথ, তাহিরপুরের ওসি দেলোয়ার হোসেন ও বিশ্বম্ভরপুরের ওসি মুখলেছুর রহমানকে বিবাদী করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে তাহিরপুরের ইউএনও মেহেদী হাসান জানান, আদালতের আদেশের কপি এখনো পাইনি। তিনি জানান, যাদুকাটা নদীর তীর কাটা, ইজারাবিহীন এলাকা থেকে বালু উত্তোলন রোধে ৩০ দিনে ৫৭টি অভিযান চালিয়েছেন টাস্কফোর্স ও ভ্রাম্যমাণ আদালত। সুনামগঞ্জের তাহিরপুর সীমান্তের বৃহৎ বালুমহাল দুটির মধ্যে যাদুকাটা-১ ও যাদুকাটা-২ এ বছর ১০৭ কোটি টাকায় ইজারা নেন শাহ্‌ রুবেল ও নাছির মিয়া নামের দুজন ইজারাদার।

গেল ৮ নভেম্বর থেকে পরবর্তী ৪ থেকে ৫ দিনে আলোচিত এই সীমান্ত নদীতে তীর কেটে বালু লুট হয় কমপক্ষে ১০০ কোটি টাকার। গেল শনিবার রাতে তাহিরপুরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. শাহরুখ আলম শান্তনু ফেসবুক স্ট্যাটাসে জানিয়েছেন, ‘যাদুকাটা নদীতে পাড় কাটা, ইজারাবিহীন এলাকা থেকে বালু উত্তোলন রোধে ২৮ দিনে ৫৩টি অভিযানে ২ লাখ টাকা জরিমানা করেছেন টাস্কফোর্স ও ভ্রাম্যমাণ আদালত।’ এ ছাড়াও এসব ঘটনায় ২৩ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে দণ্ড প্রদান ও ৮টি বাল্কহেড জব্দ করা হয়েছে।

‘জনসেবায় প্রশাসন’ শিরোনামে স্ট্যাটাসে উল্লেখ করা হয়, ‘গত ১৯ অক্টোবর থেকে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত তাহিরপুর উপজেলার যাদুকাটা নদীতে পাড় কাটা, ইজারাবিহীন এলাকায় বালু উত্তোলন ও পরিবহন এবং অবৈধ সরঞ্জাম (শিভ মেশিন, ড্রেজার ইত্যাদি) ব্যবহারসহ অন্যান্য অপতৎপরতা রোধে জেলা প্রশাসন পরিচালিত টাস্কফোর্স ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা করেন ৮ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। এ সময় ৫৩টি অভিযানে ২৩ জন আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে দণ্ড প্রদান করা হয়েছে। এছাড়াও রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা নৌকা/বাল্কহেডের সংখ্যা ৮টি। আদায়কৃত অর্থদণ্ডের পরিমাণ ২ লাখ টাকা।’

স্ট্যাটাসে কোনোপ্রকার গুজব, ভ্রান্ত ও মানহানিকর প্রচারণায় বিভ্রান্ত না হয়ে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মতৎপরতায় সমর্থন অব্যাহত রাখার জন্য তাহিরপুর উপজেলাবাসীকে অনুরোধ জানানো হয়। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেদী হাসান মানিক জানিয়েছেন, গেল দুই দিনে আরও চারটি অভিযান হয়েছে যাদুকাটায়। অর্থাৎ ৩০ দিনে ৫৭টি অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।

এদিকে, মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে খুরশেদ আলমের দায়ের করা পিটিশনে উল্লেখ করা হয়, হাইকোর্টের গত ১৯ আগস্টের আদেশের ইচ্ছাকৃত অবমাননার জন্য অবমাননাকারী বিবাদীদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করতে আবেদন দাখিল করা হয়েছে। খুরশেদ আলমের আইনজীবী উজ্জ্বল হোসেন বলেন, ‘আদালতকে তারা বলেছেন প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তায় পাড় কাটা চলছে। দায়িত্বশীলরা পাড় কাটা বন্ধ করতে পারেনি। তাতে আদালতের আদেশ প্রতিপালন হয়নি।’

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া বলেন, দায়িত্বপালনে কোনো ত্রুটি করছেন না। প্রতিদিন পালাক্রমে ওখানে তিনজন ম্যাজিস্ট্রেট ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে অবৈধ ও অন্যায় উদ্যোগ থেকে সবাইকে বিরত রাখা ও অপরাধীদের দণ্ড প্রদান করে আসছেন। পাড় কাটার চেষ্টা করলেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আদালতের কোনো নোটিশ এখনও তারা পাননি।

Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.