রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার লতিবপুর ইউনিয়ন পরিষদের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে ভয়াবহ অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। সচিবের নামে ডিও থাকলেও চাল বিতরণের দায়িত্ব পান স্থানীয় বিএনপি-জামায়াত নেতারা। এ ব্যবস্থাপনার ফাঁক গলে হতদরিদ্র মানুষের জন্য বরাদ্দকৃত থেকে ২৮ বস্তা চাল রহস্যজনকভাবে উধাও হয়ে যায়। ঘটনাটি প্রকাশ পেয়ে এলাকায় চরম ক্ষোভ ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে।
জানা যায়, ডিলার না থাকায় লতিবপুর ইউনিয়ন পরিষদের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল বিতরণের জন্য ডিও হয় ইউপি সচিব নামে। কিন্তু ১৪, ১৬ ও ১৭ নভেম্বর খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ১৫ টাকা কেজির চাল বিতরণ বিএনপি নেতা আমিনুল ইসলাম ও জামায়াত নেতা সামসুল। ২৮ বস্তা চাল পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় কার্ডধারী ও ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, নিয়মিত চাল নিতে গেলেও তারা চাল পাননি। সুযোগ বুঝে একটি অসাধু চক্র হতদরিদ্র মানুষের প্রাপ্য চধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার জোর দাবি জানান।
লতিবপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব জেসমিন আরা জুঁথী বলেন, আমরা শুধু কাগজে কলমে। চাল বিতরণের সঙ্গে যারা জড়িত তাঁরা বিএনপি-জামায়াত নেতারা। তাদের মধ্যে দুজনকে চিনি একজন বিএনপির আমিনুল ইসলাম আর জামাতের সামসুল।বিষয়টি নিয়ে ১৯ নভেম্বর বিএনপি-জামায়াত নেতা, প্রশাসক স্যারসহ আমরা সবাই বসেছিলাম। যে চাল চাইবে তাকে চাল দেওয়া হবে, আর যে চাল পাবে না, তাকে হচ্ছে টাকা পয়সা দেওয়া হবে।
জেসমিন আরও বলেন, চালটা ডিলারের মাধ্যমে বিতরণ হওয়ার কথা। কিন্তু ৫ আগস্টের পর সমস্যার কারণে আমাদের ডিলার নাই। ডিলার না থাকার কারণে যেকোনো মাধ্যমে আমরা চাল বিতরণ করছি। ডিলার না থাকায় বিএনপি জামায়াত নেতারা চাল বিতরণের দায়িত্ব নেন। এ দায় তাদের।
মিঠাপুকুর থানা শাখার কৃষকদলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক আমিনুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি সমাধান করা হয়েছে। হিসেবে গড় মিল ছিল, সংশোধন হয়েছে, সবাইকে চাল দেয়া হয়েছর। এ নিয়ে লেখালেখি না করাই ভালো।
অন্যদিকে ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর সহ-সভাপতি নেতা সামসুল হককে একাধিকবার ফোন করেও পাওয়া যায়নি।
জানতে চাইলে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা ও লতিবপুর ইউনিয়ন পরিষদের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশাসক আব্দুল হামিদ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, কাগজে-কলমে চালের ঘাটতি হলেও যারা চাল পায়নি, তাদের সবাইকে চাল বুঝিয়ে দেওয়া হবে। আমাদের কাছে যারা আসবে, তাদের সবাইকেই আমরা বলে দিচ্ছি যে, যারা যারা চাল পায়নি আপনাদেরকে আমরা চাল বুঝায় দিব। সমস্যা হচ্ছে উপকারভোগী কেউ আমাদের কাছে আসে না।
সচিবের নামে চাল বরাদ্দের ডিও থাকলেও বিএনপি-জামায়াত নেতাদের দিয়ে চাল বিতরণ করা হয়েছে কেন জানতে চাইলে প্রশাসক আব্দুল হামিদ বলেন, ডিলার নিয়োগ বন্ধ থাকায় উপজেলা কমিটি রাজনৈতিক নেতাদের সাথে বসেই এই সিদ্ধান্ত নেয়। এখানে মূলত ৫ লক্ষ টাকার একটি বিষয় জড়িত ছিল। এই সিদ্ধান্তের অধীনে রাজনৈতিক নেতারাই টাকাটা দিয়ে চালটা উত্তোলন করেন, যদিও ডিও ইউনিয়ন পরিষদের সচিব বা প্রশাসন কর্মকর্তার নামেই করা হয়। উনাদের সমন্বয় এখানে বিতরণটা হয়।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh
