জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর কক্সবাজার-২ মহেশখালী-কুতুবদিয়া সংসদীয় আসনের রাজনীতিতে তৈরি হয়েছে নতুন সমীকরণ। ৫ আগস্টের পর থেকেই ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাকর্মীরা। সে লক্ষ্য নিয়েই নির্বাচনী প্রচার কাজ শুরু করেছেন মনোনয়ন প্রত্যাশীরা।
বিএনপির দুর্গ হিসেবে পরিচিত এ আসনে সব কটি রাজনৈতিক দল সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে নির্বাচনি মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। এর মধ্যে কক্সবাজার-২ (মহেশখালী-কুতুবদিয়া) সংসদীয় আসন নিয়ে গঠিত। আগামী নির্বাচনে এ আসনে বিএনপির প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে দলটির এক সময়ের জোটসঙ্গী জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে। তবে ফ্যাসিবাদের পতনের পর এবার সুষ্ঠু ভোট হলে বিএনপি ও জামায়াতের প্রার্থীদের মধ্যেই হবে ভোটের মূল লড়াই। বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত ‘প্রেস্টিজ ইস্যুর’ এ আসনে চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত জামায়াতী ইসলামী। এছাড়াও দলীয় হাই কমান্ড থেকে শোনা যাচ্ছে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ অথবা আন্তর্জাতিক বিবেচনায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নিজেই প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা বেশি বলে গুঞ্জন উঠেছে। তবে মহেশখালী-কুতুবদিয়া রাজনৈতিক অঙ্গনে সালাহ উদ্দিন আহমদের জনপ্রিয়তাও তুঙ্গে রয়েছে। যদি শেষ মুর্হুতে এসে তারেক রহমান বা সালাহউদ্দিন আহমেদ দুই’জনের মধ্যে যে কোন একজনকে প্রার্থীতা ঘোষণা দেওয়া হলেও বিএনপি-জামায়াত প্রার্থীর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলে মনে করছেন বিএনপির তৃর্ণমুল। তবে বিএনপির গ্রুপিং নিরসন করে ধানের শীষের প্রার্থীর জন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ভোট চাইতে হবে।
৫ আগস্ট দেশ ফ্যাসিবাদমুক্ত হওয়ার পর দেশের রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যুক্ত হয়েছে। এ কারণে আগামী নির্বাচনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বী হতে যাচ্ছে এক সময়ের জোটসঙ্গী বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী। আসনটি কক্সবাজারের দুটি দ্বীপ মহেশখালী এবং কুতুবদিয়া নিয়ে গঠিত। এ আসনে এবার ভোটার ৩ লাখ ৮৭ হাজার ৮৪০ জন। আসনটি ফাঁকা রেখেছে বিএনপি। তবে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান মাঠে কাজ করতে বলেছেন জানিয়ে সাবেক সংসদ সদস্য আলমগীর মোহাম্মদ মাহফুজ উল্লাহ ফরিদ প্রচার চালাচ্ছেন। এ আসনে ১৯৮৬ সালে জাতীয় পার্টির জহিরুল ইসলাম, ১৯৮৮ সালেও জাতীয় পার্টির জহিরুল ইসলাম, ১৯৯১ সালে বাকশালের মোহাম্মদ ইসহাক বিএ, ১৯৯৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিএনপির এটিএম নুরুল বশর চৌধুরী, ১৯৯৬-এর জুনে ও ২০০১ সালে বিএনপির আলমগীর মো. মাহফুজুল্লাহ ফরিদ, ২০০৮ সালে জামায়াতের ড. এইচএম হামিদুর রহমান আযাদ, ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগের আশেক উল্লাহ রফিক সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
এ আসনে রয়েছে মাতারবাড়ির গভীর সমুদ্রবন্দর, ধলঘাটা অর্থনৈতিক অঞ্চল, কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র, এলএনজি টার্মিনাল, এসপিএম প্রকল্প, সোনাদিয়া ও কুতুবদিয়া দ্বীপের মতো প্রাকৃতিক সুন্দর দ্বীপ এবং বিশাল বঙ্গোপসাগর। এদিকে দৃষ্টি রয়েছে বিশ্বের প্রভাবশালী দেশগুলোর। মহেশখালীর উন্নয়ন দিয়ে পুরো দেশের উন্নয়ন হবে। ফলে এই আসনটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নির্বাচনী পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, এসব কারণেই বিএনপি আসনটি ফাঁকা রেখেছে। অনেক বিশ্লেষক মনে করছেন, জোটগত কারণে শরিকদের দেওয়ার জন্য ফাঁকা রেখেছে। তবে কক্সবাজার জেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক ইউসুফ বদরী বলেন, আন্তর্জাতিক গুরুত্ব বিবেচনায় এখানে স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমেদ অথবা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নিজেই প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে এই আসন থেকে বিএনপির মনোনয়ন পেতে সক্রিয় সাবেক সংসদ সদস্য আলমগীর মোহাম্মদ মাহফুজুল্লাহ ফরিদ, সাবেক সংসদ সদস্য জেলা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি এটিএম নুরুল বশর চৌধুরী, জামায়াতের প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য ড. এএইচএম হামিদুর রহমান আযাদ ছাড়াও, এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতা সুজাউদ্দিন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের অধ্যক্ষ মাওলানা জিয়াউল হক প্রচারণা চালাচ্ছেন। এছাড়াও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মহেশখালী উপজেলা বিএনপির আহবায়ক আবু বক্কর ছিদ্দিক সাবেক মন্ত্রী বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আলহাজ্ব সালাহ উদ্দিন আহমেদ মনোনয়ন পাবে বলে মাঠে গণসংযোগ করে ধানের শীষের জন্য ভোট প্রার্থনা করে যাচ্ছেন। বিএনপির দলীয় মনোনয়ন কে পাচ্ছেন কক্সবাজার -২ আসনে মনোনয়ন বোর্ড থেকে আদৌও ঘোষণা হয়নি।
জানা গেছে, বিএনপির একঝাঁক প্রার্থীর মধ্যে বেশ চাপমুক্ত অবস্থানে আছেন জামায়াতের একক প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য এএইচএম হামিদুর রহমান আযাদ। বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে সক্রিয় থাকছেন তিনি। এ ছাড়া জামায়াতের কর্মসূচিগুলোতে তাকে আগামী সংসদ নির্বাচনের প্রার্থী হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হচ্ছে ভোটারদের মাঝে। প্রচারণার মতো নির্বাচনেও বিএনপি থেকে একাধিক প্রার্থী অংশ নিলে সুবিধাজনক অবস্থানে থাকবে জামায়াতে ইসলামী।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh
