লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার ৯নং ভোলাকোট ইউনিয়নের সাহারপাড়া এলাকায় চাঁদার দুই লাখ টাকা না দেওয়ায় মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) সকাল ৭টার দিকে ইউসুফ হোসেন (৩৮) নামে স্থানীয় যুবদল কর্মী আনোয়ার হোসেন (৪৫) নামে এক বিএনপি কর্মীকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করেছে। হত্যাকাণ্ডের পর সাহারপাড়া এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। স্থানীয়দের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
নিহত আনোয়ার ভোলাকোট ইউনিয়নের সাহারপাড়া গ্রামের আলী রেজা বেপারী বাড়ির বাসিন্দা ও স্থানীয় নাগমুদ বাজারের কনফেকশনারী ব্যবসায়ী ছিলেন। তার স্ত্রী, ৩ মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। অভিযুক্ত ইউছুফ সাহারপাড়া গ্রামের মাইজের বাড়ির বাসিন্দা। তিনি প্রবাসী ছিলেন। প্রায় দেড় বছর আগে বিদেশ থেকে বাড়িতে এসে তিনি আর বিদেশ যায়নি।
স্থানীয়রা জানিয়েছে, প্রতিদিনের মতো সকালে আনোয়ার দোকানে খুলে বসে ছিল। এরপরেই ইউছুফ এসে আনোয়ারের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে দোকানের ভেতরের দিকে ইউছুফ তাকে ডেকে নিয়ে যায়। সেখানেই ধারাল অস্ত্র দিয়ে বুকে ও পেটে আঘাত করে। পরে ইউছুফ ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।
আনোয়ারের স্ত্রী ফারজানা আক্তার সাথী ও নিকটাত্মীয়রা জানান,আমার স্বামী তার শ্যালককে বিদেশে পাঠানোর জন্য একটি সংস্থা থেকে দুই লাখ টাকা নিয়েছিলেন। বিষয়টি জানার পর ইউসুফসহ তিনজন সেই টাকা চাঁদা হিসেবে দাবি করে। কয়েক দিন ধরে তারা বারবার দোকানে এসে হুমকি দিচ্ছিলো। তিনি আরও বলেন, মঙ্গলবার সকালে মোটরসাইকেলে এসে তিনজন দোকানে ঢুকে ক্ষিপ্ত হয়ে আনোয়ারের বুকে ও পিঠে ইউসুফ উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গে আনোয়ারকে রামগঞ্জ সরকারি হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ভোলাকোট ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আবদুর রহিম মজুমদার বলেন, হত্যাকারী ইউসুফ যুবদলের কর্মী এবং নিহত আনোয়ার বিএনপির কর্মী। দুজনই দলের সাথে যুক্ত থাকলেও বড় কোনো পদে নেই।
এ ব্যাপারে রামগঞ্জ উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক কবির হোসেন কানন জানান, ইউসুফ যুবদলের একজন কর্মী। উপজেলার বিভিন্ন প্রোগ্রামে তাকে অংশগ্রহণ করতে দেখেছি।
রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. ফয়সাল বলেন, আনোয়ার হোসেনের বুক ও পেটে একাধিক ছুরিকাঘাতের চিহ্ন ছিলো। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণেই তার মৃত্যু হয়েছে। রামগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ আবদুল বারী জানান, তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আনোয়ারের মৃত্যু হয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত কারণ বিস্তারিত যাচাই করা হচ্ছে।