রাজধানীর কড়াইল বস্তিতে লাগা আগুন ৫ ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে এসেছে। ততক্ষণে আগুনে সর্বস্ব হারিয়েছেন বস্তির হাজারো বাসিন্দা। দিনের আলো ফুটতেই আগুনের ধ্বংসযজ্ঞ স্পষ্ট হচ্ছে। সারারাত আগুনের সঙ্গে লড়াই করে বেঁচে যাওয়া মানুষগুলো সকালে ফিরে দেখেছেন—তাদের সবকিছুই ছাই হয়ে গেছে।
মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) বিকালে আগুনের খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। খবর পেয়ে শুরুতে ফায়ার সার্ভিসের ১১টি ইউনিট এবং পরে আরো ৯টি ইউনিট এসে যোগ দেয় আগুন নেভানোর কাজে। ঘন বসতি হওয়ায় মুহূর্তেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে। ফায়ার সার্ভিসের ২০টি ইউনিটের অক্লান্ত চেষ্টায় রাত ১০টা ৩৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
প্রাথমিকভাবে আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি।
এদিকে, আগুনে ঘরপোড়া মানুষের আহাজারিতে ভারি হয়ে উঠেছে ঘটনাস্থলের পরিবেশ। আগুনের তীব্রতার কারণে নিজেদের আশ্রয়স্থলের যেতে না পেরে দূরে দাঁড়িয়ে বিলাপ করছেন নিঃস্ব বস্তিবাসী। কেউ আশ্রয় নিয়েছেন খোলা মাঠে।
কড়াইল বস্তির বাসিন্দা মো. হানিফ জানান, তিনি রাজমিস্ত্রির সহযোগী হিসেবে কাজ করেন। মাগরিবের আজানের কিছুক্ষণ আগে আাগুন লাগে। তিনি খবর পান ১০-১৫ মিনিট পর। খবর পেয়ে দ্রুতে ছুটে আসেন নিজের প্রিয় বাসস্থানের দিকে। কিন্তু ততক্ষণে তার সব পুড়ে গেছে।
তবে ভাগ্য কিছুটা ভালো যে, এসময় তার স্ত্রীও বাসায় ছিলেন না। তাই রক্ষা পেয়েছেন দগ্ধ হওয়ার ঝুঁকি থেকে।
ক্ষতিগ্রস্ত আরেক বাসিন্দা জয়নুলও রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। তিনিও আগুনের খবর শুনেই কর্মস্থল থেকে দ্রুত ছুটে আসেন। তবে ঘরের কাছে যেতে পারেননি। বাসায় তার স্ত্রী-সন্তান ছিল। প্রতিবেশীদের কাছ থেকে জানতে পেরেছেন, তারা নিরাপদে আছেন। তবে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত স্ত্রী-সন্তানের সঙ্গে দেখা হয়নি জয়নুলের।
ক্ষতিগ্রস্ত আরেক বাসিন্দা লাভলী বলেন, “আমার সব পুইড়া শেষ, কিচ্ছু নেই। সাত বছর ধরে এই বস্তিতে আছি। অনেক কষ্টে তিল তিল করে টিভি, ফ্রিজসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র কিনেছিলাম। আগুন আমার সব শেষ করে দিল”
আরেক বাসিন্দা গার্মেন্টসকর্মী নাসিমা বেগম জানান, বোনের ফোনে আগুনের খবর পান তিনি। ছুটে আসেন বস্তিতে। তিনি বলেন, “শুনেছি আমার ঘর পুড়ে গেছে, সব জিনিস শেষ হয়ে গেছে।”